রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:১৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
শিবগঞ্জে মিনি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধের পর বিমানের কার্গো সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে বাংলাদেশ চুনারুঘাট উপজেলায় দিনেদুপুরে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা কোটি টাকার ইয়াবা লুট করেছে কক্সবাজারে,নৈপথ্যে ছদ্মবেশী রবিউল! আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের বিরুদ্ধে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা পেলে কঠোর ব্যবস্থা : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা শহীদ মুজাহিদের মা-বাবা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের ইতিহাসে ‘সেরা নির্বাচন’ আয়োজন করবে : প্রধান উপদেষ্টা বাজার পরিষ্কার পরিছন্নতা ও ড্রেনের কাজ চলমান মাদারীপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল থেকে চুরি হয়ে গেছে ৬ মাসের শিশু বাচ্চা স্ত্রীকে হত্যা করে থানায় হাজির স্বামী: পুটি মাছ কাটা নিয়ে দ্বন্দ্বে প্রাণ গেল মৌসুমীর

কারাগারেই ভাগ্য বদলের স্বপ্ন বুনছেন তাঁরা

শাহ আলী জয়
প্রকাশিত হয়েছে : শনিবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৩

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্তত ১২০ জন বন্দী পোশাক তৈরির প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। ছবি: সংগৃহীত আব্দুল আলিম (ছদ্মনাম)। ডেমরা থানার একটি মাদক মামলায় চার বছর আগে কারাগারে যান। জামিনে ছিলেন বছর দেড়। দুই বছর বিচারিক কার্যক্রম শেষে তাঁর সাত বছরের সাজা হয়েছে। এরপর ঠাঁই হয়েছে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে।

এখন তাঁর বয়স ২৮ বছর। আরও পাঁচ বছর সাজা ভোগ করতে হবে। তখন তাঁর বয়স হবে ৩৩। সাজাভোগের পর বের হয়ে সুন্দর ও সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হলে দরকার কর্মদক্ষতা। সে জন্য কারাগারেই তিনি শিখছেন পোশাক তৈরির কাজ। আলিম পোশাকের কাটিং শিখছেন। এভাবে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ১২০ জন বন্দীকে তৈরি পোশাকের বিভিন্ন স্তরের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া তৈরি পোশাকসহ কৃষিকাজ, জামদানি, তাঁত, মৃৎশিল্প, পাটজাত পণ্য তৈরি, বেকারি, হস্তশিল্প, ফার্নিচার, মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার মেরামতের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বন্দীদের।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কর্মকর্তারা বলছেন, বন্দীদের কর্মমুখী প্রশিক্ষণের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। কারাগার সংশোধনাগারে রূপান্তর করতে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বন্দীদের কাজের পরিধি বাড়ানো হচ্ছে। প্রতিনিয়তই নিত্যনতুন প্রশিক্ষণ যুক্ত করা হচ্ছে। যাতে তাঁরা মুক্ত জীবনে ফিরে আর অন্ধকারে পা না বাড়ান। পাশাপাশি বহু বিবাহ ও বাল্যবিবাহ বিরোধী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় কারাগারে। কারাগার সূত্র জানায়, বন্দীদের মধ্যে প্রতি ব্যাচে ১২০ জন পোশাক তৈরির, ৩৫ জন জামদানি, ১০ জন বেনারসি শাড়ি, ৭০ জন সূচিকর্ম, ৩০ জন তাঁতশিল্প, ২০ জন ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস যন্ত্র, ১৫ জন পাদুকা শিল্প, ১৭ জন কাঠের আসবাবপত্র, মৃৎশিল্প, কুটির ও হস্তশিল্প এবং ২০০ জনের হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল পালনের পদ্ধতি ও সবজি চাষের প্রশিক্ষণ চলছে।

কারাবন্দীদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বন্দীদের তৈরি পোশাক, জামদানি, পাট দিয়ে তৈরি পণ্য, বেকারি, খাদ্যদ্রব্য, মৃৎশিল্পের বিভিন্ন সময় প্রদর্শনী করে থাকি। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন খ্যাতনামা চেইনশপ ও সুপার শপে সরবরাহ করি। এগুলো বিক্রির লভ্যাংশের অর্ধেক টাকা বন্দীদের দেওয়া হয়। তাঁরা ইচ্ছে করলে সেই টাকা পরিবারের কাছেও পাঠাতে পারেন।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের মূল উদ্দেশ্য বন্দীদের কর্মদক্ষ করে তোলা, যাতে তাঁরা মুক্ত হয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন। নিজের জীবন পরিচালনা করতে পারেন। কারও কাছে বোঝা না হন। মানুষ কারাগারে বা মুক্ত যেখানেই থাকুক, তার কর্ম করেই খেতে হবে। সেই উদ্যোগটা বন্দীদের জন্য আমরা নিয়েছি। বন্দীরা সেটাকে গ্রহণ করেছেন। তাঁদের নৈতিক শিক্ষাও দেওয়া হচ্ছে।’

এদিকে গণশিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ৩০০ বন্দীকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্যন্ত পড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া কারাগারটির শেখ রাসেল কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ৫০ জনকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তিন মাসের কোর্স সম্পন্ন শেষে তাঁদের বিশেষ সনদও দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ইংরেজি ভাষা দক্ষতা বৃদ্ধিতে ৩০ জনকে ভাষা শেখানো হচ্ছে। পাশাপাশি নৈতিক, ধর্মীয় ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ৩৮০ জনকে বিশেষ কাউন্সেলিং ও শিক্ষা দেওয়া হয়। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বর্তমান বন্দী সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৯ হাজার। তাঁদের মধ্যে হাজতির সংখ্যাই এক-তৃতীয়াংশ। সাজাপ্রাপ্ত বন্দীদের মধ্যে বিকেলে ফুটবল, ক্রিকেটসহ দলগত আউটডোর ও ইনডোরে দাবা, লুডু, ক্যারামসহ বিভিন্ন খেলাধুলার ব্যবস্থা রয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ধরনের আরও খবর দেখুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর