জামায়াত নিয়ে খালেদ মহিউদ্দিন এর লিখা

ইনভেস্টমেন্ট সামিটে জামায়াত নিজেদের রাজনৈতিক কমিটমেন্ট সম্বলিত একটা পাবলিকেশন বিলি করেছে — সেটা নিয়ে এখুনি কথা বলার ইচ্ছা আমার নাই। আমি কথা বলতে চাই, জুলাই শহীদদের নিয়ে জামায়াতের দশ খন্ডের বইটার ব্যাপারে।
আমি আল্লাহর কাছে দুআ করি— এই কাজের পুরস্কার যেন আল্লাহ জামাতকে দান করেন। প্রায় ছয় শত শহীদের জীবনী, তাদের পরিচয়, আকাঙ্ক্ষা, পরিবার, শাহাদতের বিবরণ, তাদের উপর চালানো নির্মমতা— এসব কিছু রঙ্গিন পাতায় এতো উত্তমভাবে আনা হয়েছে, বলার মত নয়।
এমন একটা প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করতে জামাতের যাতায়াত, লেখক খরচ, ইন্টারভিউ খরচ, এডিট এবং অন্যান্য খরচ কত হতে পারে, সেটা আমার আমি ভালোই অনুমান করতে পারি কারণ — আমি পাবলিকেশন সেক্টরে অনুবাদক হিসেবে আমি কাজ করছি।
সবচেয়ে বড় কথা হল— এই বইয়ের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, জুলাই শহীদদের আকাঙ্ক্ষার প্রতি জামাতের কমিটমেন্ট আছে এবং এইটা তারা রক্ষা করতে চায়।
আমরা অনেকেই সমালোচনা করেছিলাম— জামাত কেন তাদের দলের শহীদদের নাম প্রকাশ করেনা? আমীরে জামায়াত আমির ড. শফিকুর রহমান বলেছিলেন— জুলাইয়ের সকল শহীদই আমাদের শহীদ। আমরা দলীয় ক্রেডিট নেবার মধ্য দিয়ে বিভাজন করব না। সকল শহীদ পরিবারের পাশে থাকার চেষ্টা করব।
আমীরে জামাত তাঁর কথা রেখেছেন কিনা, আপনারা খোঁজ নিয়েছেন? আমি নিয়েছি। জানতে পেরেছি, তারা শহীদ পরিবারের খোজ নিয়েছেন এবং পরিবারের অবস্থা ভেদে গড়ে পড়তায় দুই লক্ষ টাকা পর্যন্ত অনুদান দিয়েছেন। প্রায় ৬০০ পরিবারকে তারা এই অনুদান দিয়েছেন।
এসব গোপনও রেখেছে জামাত। কারণ, জামাতের অনুদান পেয়েছে, এটা জানলে অনেকে শহীদ পরিবারকে ‘জামাতি’ বলে ট্যাগ দিবে। রাষ্ট্রীয় অনুদান কিংবা অন্য কোনো সংগঠন থেকে অনুদান প্রাপ্তির পথ তখন রুদ্ধ হতো।
সেদিন এক ভিডিওতে দেখলাম, জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের এক অনুষ্ঠানে এক শহীদমাতা কেঁদে কেঁদে বলছেন— জামাত থেকে কয়েক লাখ টাকা পেয়েছেন, আর কেউ তাদের খোজ নেয়নি।
জামাত এইসব অনুদান দল দেখে দেয় নাই, কোনো বিভেদ করে নাই।
আজকে দেখলাম— অনেকেই একটা পোস্ট শেয়ার দিচ্ছে যে, জামাত নাকি সবাইকে ধারণ করতে পারবেনা ক্যাডারভিত্তিক হবার কারণে।
কথাটা ভুল, একইসাথে অন্যায়। দলীয় প্রতিষ্ঠানে তারা নিজেদের লোকদের জব দেবে কারণ, কেবল জামাত করার অপরাধে তাদেরকে সরকার বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান জব দেয়না। এই মজলুমদের দায়িত্ব তো জামাতকেই নিতে হবে।