পিরোজপুরে সংগ্রামী সেই মুনিরা পাচ্ছে নৌকা ও পড়ালেখার খরচ

পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার হাফসা আকতার মুনিরা শিশু বয়সেই জীবিকার তাগিদে খেয়া পারাপারে জন্য কাঠের বৈঠা তুলে নয় হাতে। প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে চলে তার জীবন। বাবা মনির হোসেন প্রতিবন্ধী হওয়ায় অল্প বয়েসেই মুনিরাকে সংসারের হাল ধরতে হয়।
মুনিরার জীবন সংগ্রাম নিয়ে গণমাধ্যমে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে মুনিরার কঠিন জীবনের গল্প উঠে আসায় তার পাশে দাঁড়িয়েছে দেশের একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান। দেওয়া হচ্ছে জীবন সংগ্রামের সঙ্গী নতুন নৌকা। কঠিন সংগ্রামের মধ্যেও মুনিরা লেখাপড়া ছাড়েনি। এজন্য প্রতিষ্ঠানটি তার শিক্ষাজীবন চালিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় অর্থও দেবে।
পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার চরবাসরী গ্রামের বাসিন্দা মনির হোসেন বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী। তার একমাত্র মেয়ে মুনিরা। তাদের বাড়ির পাশেই চিড়াপাড়া খালের খেয়াঘাট। বাবা প্রতিবন্ধী হওয়ায় সে সংসার চালেতে সেখানেই খেয়া পারাপার করে। মুনিরার দেড় বছর বয়সে তার মা সংসার ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। সে বাবা মনির হোসেন এবং ফুফু রোজিনা বেগমের আদর-স্নেহে বড় হয়ে ওঠে।
তবে এত কঠিন সময়ের মধ্যেও পড়ালেখা চালিয়ে গেছে সে। মুনিরা এখন কাউখালী আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে।
সকালে খেয়া পারাপার শেষে স্কুলে যায় মুনিরা। দুপুরে বাসায় ফিরে সংসারের কাজ করে। এরপর আবার বিকেলে নৌকায় যাত্রী পারাপার করে। চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
মুনিরা জানায়, খেয়া পারাপার মেয়েদের কাজ না হলেও করতে হয়। প্রতিবন্ধকতা থাকায় বাবাকে কেউ কাজে নেয় না। অন্য কাজ না জানায় বাবার ভাঙাচোরা নৌকা দিয়ে খেয়া পারাপার করে সংসার চলে। লেখাপড়া শেষ করে চাকরি করার স্বপ্নের কথাও জানায় সে।
কাউখালী আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাইনুল ইসলাম জানান, হফসা আকতার মুনিরা সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। তার ভালোই মেধা আছে। সে খেয়া পারাপার করে সংসার চালায়। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে সহযোগিতা করে আসছে