শেখ হাসিনা গতকাল বুধবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের আলোচনাসভায় এসব কথা বলেন। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভাটির আয়োজন করা হয়।
বঙ্গোপসাগর ব্যবহার করে অন্যদের আক্রমণই উদ্দেশ্য
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কয়েকজন খুনির আমেরিকা, কানাডায় পলাতক থাকার প্রসঙ্গ তুলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখনো কয়েকটা খুনি বিভিন্ন দেশে আছে। আমরা আনার চেষ্টা করছি। সব চাইতে অবাক লাগে যেসব দেশে খুনিদের আশ্রয় দিয়ে রাখা হয়েছে তারা যখন মানবাধিকারের কথা বলে, নির্বাচনের কথা বলে, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে তারা যেন উতলা হয়ে পড়েছে। তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, ২০০১ সালে যখন এ দেশের মানুষকে, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্বিচারে অত্যাচার করল, অসংখ্য মানুষকে হাত কেটে মেরেছে, অত্যাচার করেছে, ঘরবাড়ি জ্বালিয়েছে তখন নির্বাচন নিয়ে কথা হয়নি কেন? সে নির্বাচনে তো আমাদের হারার কথা নয়। সে নির্বাচনে আমাদের জোর করে হারানো হয়েছে। যখন খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছে তখন তাদের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা কোথায় ছিল? জিয়াউর রহমানের নির্বাচনের বিরুদ্ধে তো কোনো কথা বলেনি। এরশাদ ৪৮ ঘণ্টা ভোটের রেজাল্ট বন্ধ রেখে যখন ফল ঘোষণা দিয়েছে তখন তো সে নির্বাচন নিয়ে এদের কোনো উদ্বেগ দেখিনি। হঠাৎ এবারের নির্বাচনের সময়ে তারা যেন খুব উতলা হয়ে পড়ল। নির্বাচনের দাঁড়ি, কমা, সেমিকোলন কোথায় কি কিভাবে হবে, সেটা নিয়ে সবথেকে বেশি…একের পর এক তাদের লোক আসা শুরু করল। কারণটা কী?’
পশ্চিমা দেশগুলোর ভূমিকার সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি এখন তাদের চোখের মণি। যে বিএনপি এত সন্ত্রাস করেছে, জাতির পিতাকে হত্যার সঙ্গে জড়িত, যে বিএনপি কয়েক দিন আগেই তো আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করল। কয়েক দিন আগেও তো পুলিশের গাড়িতে আক্রমণ করল। পুলিশ কি বসে বসে মার খাবে? জাতীয় সম্পদ নষ্ট করল। আজ তাদের নিয়ে মাতামাতি, তাদের সঙ্গে বসতে হবে, তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। অনেক কথা বলেছি।’
শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘গণতন্ত্র কী? আমি একবার আমেরিকায় বলেছিলাম, আপনাদের এখানে একটা মনুমেন্টে লেখা দেখলাম, গভর্নমেন্ট অব দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল, ফর দ্য পিপল। আর আমি এমন একটা দেশ থেকে এসেছি যেখানে গভর্নমেন্ট অব দি আর্মি, ফর দি আর্মি, বাই দি আর্মি জেনারেল। এমন একটা দেশের সরকারকে আপনারা কিভাবে সমর্থন করেন। আপনাদের গণতন্ত্রের সংজ্ঞা কি আটলান্টিকের পারে গিয়ে বদলে যায়?’
আলোচনাসভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কামরুল ইসলাম প্রমুখ। আলোচনাসভাটি সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ।