শাহজাদপুরের বড়াল নদীতে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা

আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহি ধারণ করে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বড়াল নদীতে ড. মজহারুল ইসলাম স্মৃতি নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। শুক্রবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে শাহজাদপুরের বাঘাবাড়ী ব্রীজের নিচে উত্তরবঙ্গ ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের আয়োজনে এ নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চয়ন ইসলাম।
ঐতিহ্যবাহি এই নৌকা বাইচের সময় বাইচালরা ঢাক, ঢোল ও করতালের বাজনা আর জারি-সারি গানের তালে তালে বৈঠা চালিয়ে বিলের চলে চলে নৌকা। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে লাল নিশান তুলে নিয়ে যে নৌকা আগে নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে তাকেই বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিভিন্ন ধাপ পেড়িয়ে সবাইকে হারিয়ে যে নৌকা শেষ পর্যন্ত টিকে থাকবে সেটাকেই চূড়ান্ত ভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা।
উদ্বোধনী এ নৌকা বাইচ দেখতে বিলের আশ-পাশে শত শত ছোট বড় নৌকায় পাবনা ও সিরাজগঞ্জের হাজার হাজার নারী পুরুষের সমাগম ঘটে। তারা উপভোগ করে এ আনন্দঘন নৌকা বাইচ। এত মানুষের সমাগমকে কেন্দ্র করে এসময় নৌকার উপরে সৌখিন ব্যাবসায়ীরা কোমল পানীয়সহ বিভিন্ন মুখরোচক খাবারের দোকান বসিয়ে নেন। ভাসমান এ মেলা যেন বিরাট উৎসবে রূপ নেয়।
এদিকে, নৌকা বাইচ দেখতে যাওয়া একজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তি ইমরান মুরাদ জানান, আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রাম বাংলার অনেক ঐতিহ্যই হারিয়ে যেতে বসেছে। শাহজাদপুরে এই ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে নৌকা বাইচের আয়োজন করেছে তা সত্যি অতুলনীয়। সব শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ নিয়ে এটিকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছেন।
উত্তরবঙ্গ ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শাহজাহান সিরাজের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, শাহজাদপুর পৌর মেয়র মনির আক্তার খান তরু লোদী, পোতাজিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর জাহান বাচ্চু, রূপবাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ মোল্লা ও বাঘাবাড়ী নৌবন্দরের লেবার হ্যান্ডেলিং ঠিকাদার আব্দুস সালাম ব্যাপারী প্রমুখ।
শাহজাহান সিরাজ বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর পর বাঘাবাড়ী বড়াল নদীতে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। বাইচের প্রথম দিনে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নৌকা বাইচ উপভোগ করেন। সিরাজগঞ্জ ও পাবনা জেলার প্রায় ২৪টি নৌকা এ বাইচে অংশগ্রহণ করেছেন। লীগ ভিত্তিক এ প্রতিযোগিতার ফাইনালে মোটরসাইকেল, টেলিভিশন ও ফ্রীজ পুরস্কার দেওয়া হবে।