মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ০৭:৩৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম
আত্রাইয়ে হিসাবরক্ষণ অফিসে বিশেষ সেবা কার্যক্রম চলছে গাইবান্ধায় চরাঞ্চলে ভূমিদস্যুদের শাস্তির দাবীতে ভূমিহীনদের মানববন্ধন এনবিআর ও আইআরডি ভেঙ্গে দুটি বিভাগ, অধ্যাদেশ জারি বড় সাফল্য পেতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় দৃষ্টি লিটনের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হচ্ছে ট্রাম্প পরিবারের বিটকয়েন প্রকল্প চিকিৎসা সেবার পরিবেশকে নিরাপদ রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সরকার প্রধান হিসেবে এ প্রথম চট্টগ্রাম যাচ্ছেন ড. ইউনূস রৌমারীতে বালির বদলে মাটি দিয়ে ব্রিজের ঢালাই, এলাকাবাসীর ক্ষোভ মমতাজের ৭ দিনের রিমান্ড চাইবে পুলিশ, শুনানি বিকেলে বিএডিসির চুক্তিবদ্ধ বীজ আলু চাষীদের দাম কম দেয়ার প্রতিবাদে পঞ্চগড়ে মানববন্ধন 

স্বাস্থ্যসেবায় সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

শাহ আলী জয়
প্রকাশিত হয়েছে : বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা অর্জনের চাবিকাঠি হলো কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা। সবার কাছে কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে তিনি উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানান। মঙ্গলবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ইউএনজিএ’র ৭৮তম অধিবেশনের সাইডলাইনে বিশেষ অধিবেশনে তিনি এ আহ্বান জানান।

‘শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ অব কমিউনিটি ক্লিনিক : ইনোভেটিভ এপ্রোচ এচিভিং ইউনিভার্সেল হেলথ কভারেজ ইনক্লুসিভ অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড ডিজঅ্যাবিলিটি’ শীর্ষক উচ্চস্তরের সাইড-ইভেন্টের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, উন্নয়নশীল বিশ্বে কমিউনিটি-ক্লিনিক স্বাস্থ্যসেবায় আমরা বহুপাক্ষিক অর্থায়ন সংস্থাগুলোসহ আমাদের উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতি তাদের সহায়তার হাত প্রসারিত করার আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়ন ও সর্বজনীন স্বাস্থ্যের বিষয়ে আমাদের সম্মিলিত কাজকে ত্বরান্বিত করতে আপনাদের উপস্থিতি আমরা উৎসাহিতবোধ করছি। তিনি আরও বলেন, গ্লোবাল সাউথের উদীয়মান কণ্ঠস্বর হিসাবে বাংলাদেশ অর্থপূর্ণ আন্তর্জাতিক অংশীদারত্বের সম্ভাব্য ইস্যুটিতে চ্যাম্পিয়ন হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, সব সুখের মূলে রয়েছে স্বাস্থ্য। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে চারদিকে আনন্দ ছড়িয়ে দিতে চাই। আগ্রহীদের সঙ্গে উপলব্ধি ও দক্ষতা বিনিময় করতে বাংলাদেশ প্রস্তুত আছে। যারা অনুভূতি প্রকাশ করেছেন এবং সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তাদের প্রতি আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি-এ সাইড ইভেন্ট স্বাস্থ্য এবং আমাদের জনগণ ও কমিউনিটির কল্যাণে আমাদের অভিন্ন অঙ্গীকারের আরেকটি নিদর্শন হয়ে থাকবে। স্বাস্থ্যসেবা তৃণমূলে পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য প্রধানমন্ত্রী পাঁচটি অগ্রাধিকারের কথা ভাবেন।

তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য পরিষেবায় বিপুল পরিমাণ অর্থ অপচয় রোধ করতে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে রক্ষাকবচ হিসাবে কাজ করার জন্য পাঁচটি অগ্রাধিকার অন্তর্ভুক্ত করা, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে বিশেষত এনসিডিগুলোর জন্য উন্নত ডিজিটাল স্বাস্থ্য ও ডায়াগনস্টিক পরিষেবা প্রদান করতে সক্ষম করে তোলা এবং ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের মতো ক্রমবর্ধমান জলবায়ুজনিত স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলায় কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর সক্ষমতা আরও উন্নত করা। অবশিষ্ট দুটি হলো মানসিক স্বাস্থ্য এবং স্নায়বিক ব্যাধির জন্য স্ক্রিনিং ও চিকিৎসাসেবা উন্নত করা-যাতে আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারকে সেবা প্রদান করা এবং একটি শক্তিশালী ডেটাচালিত স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কার্যক্রমের জন্য প্রাথমিক বিল্ডিং ব্লক হিসাবে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো ব্যবহার করা যায়।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক একটি ধারণা যা বাংলাদেশে সময়ের পরীক্ষায় দাঁড়িয়ে গেছে। এটি এখন আমাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ মডেলটিকে বাকি উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য একটি সর্বোত্তম অনুশীলন হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তিনি বলেন, জাতিসংঘ এটিকে ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ’ হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ায় তিনি বিনম্র চিত্তে কৃতজ্ঞতাবোধ করছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো তার স্বপ্ন এবং প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন। দেশে এখন প্রায় ১৪ হাজার ৫০০টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। যা স্বাস্থ্য, পরিবার-পরিকল্পনা এবং পুষ্টি সম্পর্কিত পরিষেবাগুলোর জন্য ওয়ান স্টপ সেন্টার হিসাবে কাজ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। এগুলো এখন সারা দেশে কাজ করছে। তিনি বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো নবজাতক, শিশু এবং মাতৃমৃত্যুর হার কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রায় ৩ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক জন্মদানের জন্য দক্ষতাপূর্ণ সেবার সুবিধা প্রদান করছে। গড়ে প্রতিমাসে ৯ দশমিক ৫ থেকে ১০ মিলিয়ন লোক ক্লিনিকে সেবা নেয় এবং সেবাপ্রার্থীদের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ নারী ও শিশু।

কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সর্বজনীন টিকাদানের স্থানীয় কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে এবং এগুলো কোভিড-১৯ টিকার কাভারেজ সুরক্ষিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি বলেন, তার সরকার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে ২৭টি প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং তিনটি পরিবার-পরিকল্পনা সামগ্রী বিনামূল্যে প্রদান করছে। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো জরুরি ও জটিল ক্ষেত্রে উচ্চতর চিকিৎসা সুবিধার জন্য রেফারেল পয়েন্ট হিসাবে কাজ করে। সেবা প্রদানকারীরা স্বাস্থ্য ডেটা রেকর্ড করার জন্য ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল ডিভাইস দিয়ে সজ্জিত।

জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া এবং সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা কাভারেজ অর্জনকারী বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলের ভূয়সী প্রশংসা করেন সিন্ট মার্টেনের প্রধানমন্ত্রী সিলভেরিয়া এলফ্রিডা জ্যাকবস। সবার কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার উপায়গুলো সহজ করায় মালদ্বীপের স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী সাফিয়া মোহাম্মদ সাঈদ কমিউনিটি ক্লিনিকের উদ্যোগেরও প্রশংসা করেন। শক্তিশালী নারী নেতৃত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে ভাষণ দিতে পেরে তিনি অভিভূত।

অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) বিষয়ভিত্তিক রাষ্ট্রদূত সায়মা ওয়াজেদ। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. এ কে আবদুল মোমেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সিনিয়র পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ধরনের আরও খবর দেখুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর