শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:১৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
অপেক্ষা বাড়ল বাংলাদেশের; বিশ্বকাপ নিশ্চিত পাকিস্তানের মাগুরা মেডিকেল কলেজ বন্ধের গুজব উড়িয়ে দিলেন শফিকুল আলম শাহজাদপুরে সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে তিন ব্যবসায়ীকে হত্যার চেষ্টা ও জমি দখলের পায়তারা। নোয়াখালীতে থানা থেকে লুট হওয়া গ্যাস গান উদ্ধার যৌথ বাহিনীর অভিযানে সারাদেশে ৩৯০ জন আটক  বিডিআর হত্যাকাণ্ডবিষয়ক তথ্য চেয়ে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের গণবিজ্ঞপ্তি পার্বত্য উপদেষ্টার সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতসহ চার বিদেশি প্রতিনিধির সাক্ষাৎ  প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে কাতারে যাচ্ছেন চার নারী ক্রীড়াবিদ ব্যারিস্টার কায়সার কামালের উদ্যোগে অটো ও ইজিবাইক চলাচলে টোল ফ্রি সুবিধা জুলাই-মার্চ মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১০.৮৪ শতাংশ

অর্থদণ্ড-শাস্তির বিধান রেখে হচ্ছে জুয়া প্রতিরোধ আইন

শাহ আলী জয়
প্রকাশিত হয়েছে : মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৩

সরকারের অনুমোদন ছাড়া সব ধরনের বাজি থেকে শুরু করে অর্থের বিনিময়ে হাউজি, লটারি, ম্যাচ ফিক্সিং করা, অনলাইনে জুয়া, পুরস্কার প্রতিযোগিতায় অংশ নিলে অর্থদণ্ড আর শাস্তির বিধান রেখে জুয়া প্রতিরোধ আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। তবে বিষয়ভিত্তিক এসব শাস্তি দেওয়ার বিধান রাখা হচ্ছে। ৯ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় আইনটি চূড়ান্ত করার সম্ভাবনা রয়েছে।
আইনের খসড়ায় জুয়ার কয়েকটি ধরন চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- সব ধরনের বাজি বা পণ করা, অর্থের বিনিময়ে সব ধরনের হাউজি, লটারি, বিভিন্ন ধরনের আর্থিক ঝুঁকিপূর্ণ খেলা, পুরস্কার প্রতিযোগিতা, অনলাইনে জুয়ায় অংশগ্রহণ। প্রস্তাবিত আইনে জুয়ার সামগ্রী অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে- বাজি ধরার জন্য ব্যবহার করা যেকোনো যন্ত্রপাতি। হতে পারে টেবিল গেম, নন- ক্যাসিনো গেমস, কার্ড গেম, ভিডিও গেম, হাউজি ইত্যাদি।
আর্থিক ঝুঁকিপূর্ণ খেলার প্রকৃতি হিসেবে প্রস্তাবিত আইনে উল্লেখ করা হয়েছে, ফুটবল, ক্রিকেট, কাবাডি, ভলিবল, নৌকাবাইচ, তাস খেলা, ইনডোর গেমস। তবে সরকারের অনুমোদন ছাড়া হলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। যেখানে জয়-পরাজয়ের সুযোগ নিয়ে কোনো খেলা প্রতিযোগিতার ফলাফলে অবৈধ আর্থিক লাভের সুযোগ রাখা হয়, সেটাও এ আইনের আওতায় আসবে। প্রস্তাবিত আইনে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে- ম্যাচ ফিক্সিং বা স্পট ফিক্সিং, যেখানে কোনো ম্যাচের চূড়ান্ত ফলাফলের আগেই স্থির করা হয় জয়-পরাজয় এবং অবৈধ অর্থ উপার্জনের সুযোগ থাকে। কিংবা কোনো ম্যাচের পূর্ব পরিকল্পনা সাজিয়ে রাখা হয়। আর স্পট ফিক্সিংয়ের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে কোনো খেলা বা খেলার অংশ বিশেষের ফলাফল নির্ধারণ অন্তর্ভুক্ত করা।
লটারি কীভাবে জুয়ার অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে তা প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি আগাম সেট করা পুরস্কারের আশায় অংশগ্রহণ করলে, বিজয়ীকে এলোমেলোভাবে র্নিবাচিত করা হলে এবং অনুমোদন ছাড়া লটারির টিকেট বিক্রি করা হলে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
হাউজি কখন জুয়ার অপরাধ হিসেবে বিবেচনায় আসবে, তা প্রস্তাবিত আইনে উল্লেখ করা হয়েছে। অনুমোদন ছাড়া হাউজির প্রস্তাব করা হলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ ছাড়াও অনুমোদন নেওয়ার পরও যদি শর্ত ভঙ্গ করা হয় তা-ও জুয়ার প্রতারণা হিসেবে শামিল হবে।
 বিভিন্ন অপরাধের জন্য বিভিন্ন ধরনের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত আইনে। আর্থিক ঝুঁকিপূর্ণ খেলার দণ্ড রাখা হচ্ছে সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড ও ২ লাখ টাকা জরিমানা। আর প্রাণী লড়াইয়ের ক্ষেত্রে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা জরিমানা।
দূরবর্তী জুয়ার জন্য অথবা অনলাইনে জুয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা। বাজি বা পণ ধরার জন্য সর্বোচ্চ ৩ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা। ম্যাচ ফিক্সিং বা স্পট ফিক্সিংয়ের জন্য সর্বোচ্চ ৩ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা। জুয়ার অপরাধ হিসেবে গণ্য হাউজির দণ্ড সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড। ও সবোচ্চ ২ লাখ টাকা জরিমানা। আর জুয়ার আয়োজনের জন্য শাস্তি হবে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা।
বাজিকরের জন্য শাস্তি হতে পারে সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড ও ২ লাখ টাকা জরিমানা। জুয়ার স্থান থেকে কেউ যদি গ্রেফতার হন আর তিনি যদি তার ঠিকানা জানাতে অস্বীকার করেন তা হলে তার জন্য ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হচ্ছে। এই ধরনের অপরাধের জন্য যদি কেউ প্ররোচনা দেয় তবে তার জন্যও শাস্তির বিধান রাখা হচ্ছে। এসব অপরাধের শাস্তি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচার হবে। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতেও বিচার হতে পারে। প্রস্তাবিত আইনে মোবাইল কোর্টের এখতিয়ার রাখা হচ্ছে। প্রস্তাবিত আইনে অপরাধ করলে তা জামিনযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে না।
প্রস্তাবিত আইনে জুয়া প্রতিরোধের জন্য কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা থাকবে। আর সেই ক্ষমতা হচ্ছে দেশের অভ্যন্তরে বা বাইরের কোনো ওয়েবসাইটে প্রচার বন্ধ বা নিষেধ করার ক্ষমতা রাখবে। এমনকি জুয়া খেলা বা লটারি বা হাউজি স্থানের জন্য স্থান ঘোষণার ক্ষমতা থাকবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ধরনের আরও খবর দেখুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর