ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সোচ্চার এলাকাবাসী

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাহিদ সুলতানার (তৃপ্তি) বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২৯ অক্টোবর) বেলা ১১টায় আদমদীঘি উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের প্রায় শতাধিক সামনে নারী পুরুষ এই মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। এর আগে সকালে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসার টুকুটুক তালুকদারের কাছে মৌখিক অভিযোগ জানান ইউপি সদস্যসহ এলাকাবাসী।
অভিযোগে জানা যায়, সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাহিদ সুলতানা তৃপ্তি এলাকার দরিদ্র মানুষের কাছে থেকে ১০ টাকা মূল্যের চালের কার্ড করে দেওয়ার জন্য জন প্রতি ১০০ থেকে ৭০০ টাকা, বয়স্ক ভাতা সহ অন্যান্য ভাতার কার্ড ও কর্মসূচির শ্রমিক নিয়োগের দেওয়ার কথা বলে জন প্রতি পাঁচ হাজার থেকে সাত হাজার টাকা করে গ্রহণ করেছেন।
সান্তাহার ইউনিয়নের কাশিমিলা গ্রামের বাসিন্দা খোতেজা বেগম বলেন, তিন নম্বর ইউপি সদস্য শামিম হোসেন চেয়ারম্যানকে দেয়ার কথা বলে কথা বলে আমাকে ১০ টাকা মূল্যের চালের কার্ড করে দিতে চেয়ে ২০০ টাকা নিয়েছে কিন্তু আমাকে এখন পর্যন্ত কার্ড করে দেয়নি।
ছাতনী গ্রামের বাসিন্দা হাসিনা বেগম বলেন, চেয়ারম্যানের লোক গোলাম মোস্তফা আমাকে ও আমার জামাইকে ৪০ দিনের কর্মসূচির শ্রমিক নিয়োগ করে দেয়ার কথা বলে দুই হাজার টাকা নিয়েছে। সে আমাদের বলেছে এ সব টাকা চেয়ারম্যানকে দিতে হয়েছে।
ইউনিয়নের প্রসাদখালী গ্রামের মসজিদের মোয়াজ্জিন আব্দুল মান্নান বলেন, আমাদের গ্রামের একটি মসজিদের পুকুর ইজারার জন্য চেয়ারম্যানকে দেয়ার কথা বলে ইউপি সদস্য শামিম হোসেন আমাদের কাছে থেকে ৮০ হাজার টাকা দাবী করে। বিষয়টি আমরা চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি বলেন, আমার সদস্য যে যেটা করবে বা বলবে সেটাই করবেন।
যদিও ইউপি সদস্য শামিম হোসেন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিষয়টি চেয়ারম্যান বলতে পারবেন।
সান্তাহার ইউপির সংরক্ষিত (৪, ৫, ৬) মহিলা আসনের সদস্য মোমিনা খাতুন স্বপ্না অভিযোগ করে বলেন, আমাদের ইউপির চেয়ারম্যান ভিজিএফ চালের কার্ড দেয়ার কথা বলে জন প্রতি দুই হাজার টাকা করে নিচ্ছেন এবং বিভিন্ন কর্মসূচির শ্রমিক নিয়োগের জন্য পাঁচ হাজার টাকা করে গ্রহণ করেছেন, কিন্তু তাদের কাউকে কার্ড ও কাজ দেননি।
মানববন্ধন আরও বক্তব্য রাখেন- সান্তাহার ইউনিয়নের পাঁচ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম, চার নং ওয়ার্ডের লুৎফর রহমান, দুই নং ওয়ার্ডের নাজিম উদ্দীন।
এ বিষয়ে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসার টুকটুক তালুকদার মুঠোফোনে বলেন, আমি মৌখিকভাবে অভিযোগ পেয়েছি। তাদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সান্তাহার ইউপি চেয়ারম্যান নাহিদ সুলতানা তৃপ্তি মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধনের কথা শুনেছি। তবে আমার বিরুদ্ধে পুকুর ইজারার নামে টাকা, চালের কার্ড করে দেওয়ার জন্য টাকা ও কর্মসূচির শ্রমিক নিয়োগের টাকা নেওয়ার বিষয়টি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।