রবিবার, ০৪ মে ২০২৫, ০৬:১৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
দেশের মানুষ এখনো আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করছে: সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করে কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে : নাহিদ ইসলাম চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটে রফতানি কার্যক্রমে যুগান্তকারি পদক্ষেপ লন্ডন থেকে সিলেট হয়ে ঢাকায় ফিরবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া যারা বিএনপিকে মাইনাস করতে যাবে তারা রাজনীতি থেকেই হারিয়ে যাবে: হাবিব সাড়ে ৪ মাস পর চিলমারী-রৌমারী রুটে ফেরি চলাচল শুরু ঢাকায় তিন দিনব্যাপী মোটর শো শুরু অনুমতি ছাড়া হজ পালন না করার অনুরোধ ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পাবনা শহরে ইছামতী নদীর খনন শুরু বার্সার বিপক্ষে ফিরতি লেগে মার্টিনেজের খেলা নিয়ে সংশয়

চাটমোহের মুক্তিযোদ্ধার বাড়ির জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব; পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

আশরাফুল ইসলাম চাটমোহর পাবনা প্রতিনিধি:
প্রকাশিত হয়েছে : সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫
চাটমোহের মুক্তিযোদ্ধার বাড়ির জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব; পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
চাটমোহের মুক্তিযোদ্ধার বাড়ির জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব; পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

পাবনার চাটমোহর পৌর সদরের বালুচর মহল্লায় প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা রমজান আলীর বাড়ির জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। বাড়ির জমি দখল নিয়ে উঠেছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। সম্প্রতি বাড়ির জমি দখল নিয়ে হামলা ভাঙচুরের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।

বাড়ির জমি কিনেছেন দাবি করে বড় জামাই কামরুজ্জামান জমি দখল করতে যান। আর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী জাহানারা পারভীনের অভিযোগ, তার জামাই প্রতারণা করে ছোট মেয়ের জমি লিখে নিয়েছে। এ ঘটনায় আদালতে মামলা চলছে। জোরপূর্বক তো দখল করা যায় না। এ নিয়ে কিছুদিন আগে চাটমোহর থানায় উভয়পক্ষ লিখিত অভিযোগ দিলেও এখনও কোনো সমাধানের উদ্যোগ নেয়নি পুলিশ।

অভিযোগে জানা গেছে, প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা রমজান আলী জীবিত থাকতে তার বসতভিটা ও পুকুর মিলিয়ে সাড়ে ৪০ শতক জমি তার তিন মেয়ে রুকসানা পারভীন রত্না, জাকিয়া স্বর্ণা ও মনিরা মুক্তার নামে রেজিস্ট্রি করে দেন ৩০/০৫/২০১৬ তারিখে। এর মধ্যে বসতভিটা জমি হলো সাড়ে ৫ শতক। এদিকে তার কোনো ছেলে সন্তান না থাকায় বড় মেয়ের জামাই উথুলী গ্রামে আফজাল হোসেনের ছেলে কামরুজ্জামানকে নিজের ছেলের মতো দেখতেন। তিনিই ছিলেন পরিবারটির অভিভাবক। মুক্তিযোদ্ধা রমজান আলী তখন শারীরিকভাবে অসুস্থ্য ছিলেন। তার পরিবারের সকল কাজ ও দায়িত্ব পালন করতেন বড় জামাই কামরুজ্জামান।

জমির কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী ০৮/০৮/২০১৬ তারিখে নিজের স্ত্রী রুকসানা পারভীন রত্না ও ছোট শ্যালিকা মনিরা মুক্তার নামের অংশ মিলিয়ে ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ জমি কিনে নেন কামরুজ্জামান। এত বছর ধরে বসতবাড়ির জমিতে বসবাস করছেন প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা রমজান আলীর স্ত্রী জাহানারা পারভীন, তার ছোট মেয়ে মনিরা মুক্তা। আর মেঝো মেয়ে বিবাহিত, ভাঙ্গুড়া কৃষি অফিসের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা। তিনিও একই জমিতে তার প্রাপ্য অংশে বাড়ি করছেন। এমন পরিস্থিতিতে গত ২৫ এপ্রিল শুক্রবার সকালে বালুচর মহল্লার বসতবাড়িতে লোকজন নিয়ে নিজের কেনা অংশের জমি বুঝে নিতে যান কামরুজ্জামান।

মুক্তিযোদ্ধা রমজান আলীর স্ত্রী জাহানারা পারভীনের অভিযোগ, তার বড় জামাই ১০-১৫ জন সন্ত্রাসী লোক নিয়ে এসে জমি জবর দখল করার চেষ্টা করে। বাড়ির টিনের গেট ভেঙে ভেতরে ঢোকে। তার লোকজন দিয়ে বাড়ির মধ্যে ইট গেঁথে দখলের চেষ্টা করে। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে তাদের সরিয়ে দেয়।

জাহানারা পারভীন বলেন, আমাদের কোনো ছেলে সন্তান নেই। বড় জামাইকে ছেলের মতো ভালবাসতাম। সেই ছিল আমাদের পরিবারের সবকিছু দেখভালের দায়িত্বে। আমার স্বামীর পেনশনের টাকা, ভাতার টাকাও তাকে দিয়ে তোলানো হতো। বাড়ির জমি কিন মেয়েকে লিখে দেয়ার কাজও কামরুজ্জামানকে দিয়ে করানো হয়েছে। অথচ সেই সরলতা আর ভালবাসার সুযোগ নিয়ে সে আমাদের সাথে এত বড় বেঈমানী করবে বুঝতে পারিনি। কবে ছোট মেয়ের জমি কিনলো আমরা কেউ জানলাম না। সে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে জমি লিখে নিয়েছে, আমরা বুঝতে পারিনি। আমরা এটার ন্যায্য বিচার চাই।

ভুক্তভোগী ছোট মেয়ে মনিরা মুক্তা বলেন, দুলাভাই যে সময়ে আমার অংশে জমি কিনে নেওয়ার কথা বলছেন সে সময় আমি নাবালক। কবে কিনলেন, কিভাবে কিনলেন, বুঝলাম না কিছু। তিনি প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে আমার অংশের জমি লিখে নিয়েছেন, বুঝতে পারিনি, আমাদের কখনও বলেননি। হঠাৎ করে কিছুদিন আগে আমরা বিষয়টি জানতে পারি। জানার পরই আদালতে প্রতারণার মামলা করেছি। সেই মামলা চলমান। বাড়ির গেটে মামলার বিষয়টি উল্লেখ করে সাইনবোর্ডও ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারপরও আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় দুলাভাই লোকজন নিয়ে এসে গেট ভেঙে বাড়ির জমি দখলের চেষ্টা করেছে।

অভিযুক্ত বড় জামাই কামরুজ্জামান বলেন, আমি কোনো প্রতারণার আশ্রয় নেইনি। আমি আমার স্ত্রী ও তার ছোট বোনের অংশ কিনে নিয়েছি। যা আমার নামে খাজনা খারিজের সব প্রমাণ ও কাগজপত্র আছে। তারা সব জানেও। এতদিন মানবিকতার খাতিরে কিছু বলিনি, তারাই সেখানে বসবাস করুক। কিন্তু তার সুযোগে যে আমাকে এভাবে লাঞ্ছিত করবে ভাবিনি। এখন তো আমার জমি বের করে নিতে হবে, আমি বাড়ি করবো। কিন্তু তারাতো আমার কেনা অংশের জমি ছেড়ে দিচ্ছে না। আবার আদালতে কবে মামলা করেছে তারা সেটাও জানি না। সেদিন বাড়িতে যাবার পর সাইনবোর্ড দেখার পর জানলাম। আদালতের কোনো নোটিশও এখন পর্যন্ত পাইনি। আমি সেদিন আমার জমিটা তাদের কাছে বলে বুঝে নিতে গেছিলাম ওই এলাকার কয়েকজন লোক নিয়ে। কিন্তু অভিযোগ তোলা হলো হামলা ভাঙচুরের। যা মিথ্যা। আমরা কোনো ভাঙচুর করিনি।

তিনি আরো বলেন, মেঝো মেয়ে যে বাড়ি করছেন সেখানে সে জমি পায় ১ দশমিক ৮৩ শতক। কিন্তু পাশের আরেকটি দাগের জমি যেটা তিন বোনের অংশ আছে সেটা পেচিয়ে বাড়ি করছেন। এটা তো ঠিক নয়।

এ বিষয়ে চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আলম বলেন, অভিযোগটি সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ খবর নিয়ে আইনগত কি কি প্রক্রিয়া আছে সেগুলো খতিয়ে দেখা হবে। সেইসাথে উভয়পক্ষকে নিয়ে বসে আলোচনার মাধ্যমে


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ধরনের আরও খবর দেখুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর