জামিনে মুক্ত সম্রাট-আদালতপাড়ায় সমর্থকের ভিড়

অবৈধ সম্পদের মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট মুক্তি পেয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) হৃদরোগ বিভাগে চিকিৎসাধীন সম্রাটের পাহারায় থাকা কারারক্ষীদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তবে কারামুক্ত হলেও সোমবার রাতে তিনি হাসপাতালেই ছিলেন। হাসপাতাল ছাড়ার বিষয়ে আজ সিদ্ধান্ত দিবেন তার চিকিৎসকরা।
এর আগে গতকাল ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান শুনানি শেষে সম্রাটকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন। সংশ্লিষ্ট আইনজীবী জানান, সম্রাটের বিরুদ্ধে করা চার মামলায় এর আগে তিনটিতে জামিন পেয়েছেন। এ মামলায় জামিন পাওয়ায় তার মুক্তিতে কোনো বাধা ছিল না। গতকাল সম্রাটের জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে আদালতপাড়ায় জড়ো হন তার হাজারো সমর্থক। সম্রাটের মুক্তির দাবিতে আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত সমর্থকরা নানা ধরনের স্লোগানও দিয়েছেন।
গতকাল রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (কেরানীগঞ্জ) সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, বিএসএমএমইউতে হৃদরোগ বিভাগের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকা সম্রাটের কাছ থেকে রাত ৯টার সময় জামিনের কাগজে সই নেওয়া হয়েছে। এরপর তার পাহারায় থাকা কারারক্ষীদের উঠিয়ে নেওয়া হয়। তবে তিনি এখন হাসপাতাল ছাড়ছেন কি না, এটা তার চিকিৎসকের ওপর নির্ভর করবে।
বিএসএসএমইউ পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নজরুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে বলেন, যুবলীগের সাবেক নেতা সম্রাটের হাসপাতাল ছাড়ার ব্যাপারে আজ (সোমবার) রাতে কোনো সিদ্ধান্ত হচ্ছে না। তার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে এখনো চিকিৎসকরা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। তিনি যে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তারা মঙ্গলবার সকালে তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অসুস্থ সম্রাটকে অ্যাম্বুলেন্সে করে আদালতে হাজির করেন কারা কর্তৃপক্ষ। এদিন দুপুরে সম্রাটের পক্ষে আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী জামিন আবেদনের শুনানি করেন। দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জামিনের বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে বিচারক জামিনের বিষয়ে পরে আদেশের জন্য রাখেন। বিকালে বিচারক পরবর্তী ধার্য তারিখ পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন। একই দিনে সম্রাটের আইনজীবী চার্জ শুনানির জন্য সময় চান। সময় আবেদন মঞ্জুর করে আদালত আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর শুনানির দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১১ মে সম্রাটের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন একই আদালত। ওইদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর ১৮ মে সম্রাটের জামিন বাতিল করে আদেশ দেন হাই কোর্ট। উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী সম্রাট ২৪ মে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেন এবং জামিন চান। আদালত জামিন শুনানি না করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম এদিন ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের নামে মামলা করেন।