তাড়াশে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদককে বহিস্কারে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া

ফেইসবুকে হাটের ইজারাদার কর্তৃক পেরিফেরির বাহিরে খাজনার নামে চাঁদাবাজীর ভিডিও ভাইরালের মাধ্যমে অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ হুমায়ন কবির মানিককে স্থীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, গত বুধবার (২৪ জানুয়ারী) সকালে উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের কুসুম্বী গ্রামের কৃষক মোঃ রফিকুল ইসলাম তার বাড়ির ১৪০মন ধান পার্শ্ববর্তী পলাশী গ্রামের ধান ব্যবসায়ী মোঃ শাহিনুর ইসলাম লাবুর কাছে বিক্রি করেন। ধান ব্যবসায়ী ১৪০ মন ধান অটোভ্যানে করে বস্তুল বাজারে তাঁর নিজ আঁড়তে নিয়ে আসার সময় পলাশী-কুসুম্বী আঞ্চলিক সড়কের মাঝামাঝিতে পৌছালে বারুহাস ইউনিয়নের বিনোদপুর হাটের ইজারাদার ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল কাদের দুলাল রাস্তায় অবরোধ করেন। এ সময় তাঁরা ওই ধান ব্যবসায়ী মোঃ শাহিনুর ইসলাম লাবুর নিকট মন প্রতি ২০ টাকা হারে খাজনা আদায়ের দাবী করেন।
উক্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ধান ব্যবসায়ী মোঃ শাহিনুর ইসলাম লাবু জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন করলে তাড়াশ থানা পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. রনজু ও এ এস আই ওমর ফারুক ঘটনাস্থলে হাজির হন। পরে থানা পুলিশ আটককৃত ধান বোঝাই অটোভ্যান ছেড়ে দেন। পুলিশের উপস্থিতিতে ওই সময় ঘটনার ভিডিও ধারন করেন, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন কবির মানিক, এবং তাৎক্ষনিক ভিডিও টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে জঘন্যতম কাজকে তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাইয়া পোষ্ট করার ফলশ্রুতি বহিস্কারাদেশ।
বহিস্কৃত সাধারন সম্পাদক হুমায়ন কবির মানিক জানান, আমি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারন ও লান করে বারুহাস ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদকে নির্বাচিত হয়ে অদ্যবধি সাংগঠনিক সকল কার্যক্রম পরিচালনা করছি। আমি সর্বপুরি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি। আর তারই ধারাবাহিকতায় এ
ঘটনায় প্রতিবাদ করেছিলাম। পেরিফেরির বাহিরে গ্রামের সাধারন কৃষক ধান বিক্রি করেছে, সেখানে খাজনা আদায় করার নামে চাঁদা আদায়ের বিরুদ্ধে আমার ধারনকৃত ভিডিও, বক্তব্য ফেইসবুকে দিয়েছিলাম। ঘটনার দু দিন পরে আমাকে বহিস্কার করা হয়েছে। আমার উপর অবিচার করা হয়েছে।
এব্যাপারে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল কাদের দুলাল খাজনার নামে চাঁদাবাজীর বিয়য়ে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে বলেন, ওই দিনের ঘটনা মোবাইলে ভিডিও করে ফেইসবুকে পোষ্ট করে আমার ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক সুনাম ক্ষুন্ন করা হয়েছে। তাই উপজেলা ছাত্রলীগের কাছে সাধারন সম্পাদক হুমায়ন কবির মানিককে স্বপদ থেকে বহিস্কারের মৌখিক আবেদন করেছিলাম।
নাম প্রকাশে একাধিক ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরদাবী, উপজেলা ছাত্রলীগ কোন প্রকার আলোচনা না করেই হুমায়ন কবির মানিককে বহিস্কার করেছে। ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতির মৌখিক কথা শুনে, এবং অপরাধের বিচার না করেই মানিককে বহিস্কার করা ছাত্রলীগের গঠনতন্ত বর্হিঃভুত কাজ। আমরা হীন কাজের তীব্র নিন্দাজ্ঞাপন করছি। সেইসাথে হুমায়ন কবির মানিককে স্ব-পদে রাখার আহবান জানাচ্ছি।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইকবাল হোসেন রুবেল জানান, হুমায়ন কবির মানিকের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ আছে। বর্তমানে বারুহাস ইউনিয়নের ৯নং ওর্য়াড আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. আব্দুল কাদের দুলালের বিরুদ্ধে ফেইসবুকে ভিডিও প্রচার করা বন্ধ করা এবং মামলার সাক্ষী হতে বিরত থাকার নির্দেশ করেছিলাম। কিন্তু সে আমাদের কথা অমান্য করেছে। তাই তাকে স্বীয় পদ থেকে বহিস্কার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আহসান হাবিব খোকা বলেন, রাজশাহীতে দলীয় কর্মসুচি শেষে এ বিষয়ে তদন্ত করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।