নানা আয়োজনে ময়মনসিংহে পহেলা বৈশাখ উদযাপন- হয় বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা

বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন গুলোর ছিল দিনব্যাপী নানা আয়োজন।
সোমবার (১লা বৈশাখ) সকাল ৮ টায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে নগরীর ময়মনসিংহ মহাবিদ্যালয়ের সামনে বের হয় বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা। প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগ ছাড়াও আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশ নেয় বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ।শান্তির প্রতীক হিসেবে পায়রা প্রদর্শন ছিল র্যালিতে। ছিল বাংলার লোকজ কৃষ্টির নানান উপাদান। নগরীর নতুন বাজার মোড় হয়ে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন উদ্যানের বৈশাখী মঞ্চ-২ গিয়ে শোভাযাত্রাটি শেষ হয়। ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার মোখতার আহমেদ ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে তিনদিন ব্যাপী মেলা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত রেঞ্জ ডিআইজি আবু বকর সিদ্দিক, জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম, পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম, সিভিল সার্জন ডা. সাইফুল ইসলাম, জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর মু.কামরুল হাসান মিলন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দ, মাহবুবুর রহমানসহ রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এরপর অতিথিরা জুলাই- বিপ্লব কর্ণার পরিদর্শন করেন। শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। জাতীয় সংগীত ও ‘এসো হে বৈশাখ’ গান পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয়েছে অনুষ্ঠান। বিকেলে সার্কিট হাউজ মাঠে বাংলার ঐতিহ্য ঘুড়ি উড়ানো, লাঠি খেলা, রশি টানাটানি ও হা-ডু-ডু প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজের সুশীল প্রতিনিধিগণ মনে করেন,
নতুন বছরের উৎসবের সঙ্গে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কৃষ্টি ও সংস্কৃতির নিবিড় যোগাযোগ। গ্রামে মানুষ ভোরে ঘুম থেকে ওঠে, নতুন জামাকাপড় পরে এবং আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের বাড়িতে বেড়াতে যায়। বাড়িঘর পরিষ্কার করা হয় এবং মোটামুটি সুন্দর করে সাজানো হয়। বিশেষ খাবারের ব্যবস্থাও থাকে। কয়েকটি গ্রামের মিলিত এলাকায়, কোন খোলা মাঠে আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলার। মেলাতে থাকে নানা রকম কুটির শিল্পজাত সামগ্রীর বিপণন,থাকে নানা রকম পিঠা পুলির আয়োজন। অনেক স্থানে ইলিশ মাছ দিয়ে পান্তা ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা থাকে। এই দিনের একটি পুরনো সংস্কৃতি হলো গ্রামীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন। এর মধ্যে নৌকাবাইচ, লাঠি খেলা কিংবা কুস্তি একসময় প্রচলিত ছিল। তবে কালের বিবর্তন ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারাতে বসেছে এসব লোকজ কৃষ্টি ও সংস্কৃতি।