নির্বাচন সামনে রেখে দ্রব্যমূল্য সহনীয় করতে চায় সরকার
জানা যায়, দেশে নির্বাচনী সময়ের প্রাক্কালে অভ্যন্তরীণ বাজারে নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে অর্থমন্ত্রীকে মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি নিজ বাসভবনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো: রহমাতুল মুনিম ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সাথে বৈঠক করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
সূত্র জানায়, সভায় দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা নিয়ে আলোচনা হয়। এ বিষয়ে এনবিআর-এর সম্ভাব্য করণীয় বিষয়ে দিক-নির্দেশনা দেন অর্থমন্ত্রী। এর পাশাপাশি ডালের ওপর থেকেও শুল্ক কমানো যায় কি না তা নিয়ে আলোচনা করা হয়। জানা যায়, সভায় চিনি ও সয়াবিন তেলের ওপর আরোপিত শুল্ক কমানোর মাধ্যমে এই দুই পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রস্তাব করা হলে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, নানা কারণে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয় না। এরপর যদি চিনি ও সয়াবিন তেলের উপর থেকে শুল্ক কমানো হয় তাহলে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বাধাগ্রস্ত হবে। তবে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হবে শুল্কের হার সহনীয় পর্যায়ে রাখার।
সূত্র জানায়, সভায় আলোচনা শেষে চিনি ও সয়াবিন তেলের শুল্কহার পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। রোববারের মধ্যে এ বিষয়ে এনবিআর-এর সিদ্ধান্ত জানানোর কথা ছিল। কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। উল্লেখ্য, কিছ ুদিন আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৫ টাকা কমিয়ে ১৬৯ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। ভোজ্যতেল বেশির ভাগ সময় নির্ধারিত দরে বিক্রি হলেও চিনিতে দর মানা হয় না। এখন প্রতি কেজি খোলা চিনির নির্ধারিত দর ১৩০ টাকা। বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা কোন জায়গায় ১৫০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে।
গত মাসে সরকার প্রথমবার ডিম-আলু-পেঁয়াজসহ ৬টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিলেও, শেষ পর্যন্ত দাম নিয়ন্ত্রণে থাকেনি। ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য দু’দফায় ১১ কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত একটি ডিমও দেশে আসেনি। সম্প্রতি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শি এক অনুষ্ঠানে চলতি সপ্তাহেই আমদানিকৃত ডিম দেশে আসবে বলে জানান। এদিকে ডিমের দাম বাড়ছেই। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী প্রতি পিস ডিমের দাম কোনোভাবেই ১২ টাকার বেশি হবে না। অথচ ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাদের এখন ডিম কিনতেই খরচ পড়ছে ১২ টাকার উপর। বর্তমানে বাজারে প্রতি ডজন ডিম কিনতে হচ্ছে ১৬০ টাকার মতো।
আলুর বাজারেও একই অবস্থা। সরকারের ৩৫ টাকা কেজি মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া আলুর সর্বনিম্ন মূল্য এখন ৫০ টাকা। অন্যদিকে পিঁয়াজের দামও ১০০ টাকা ছুঁই ছুঁই করছে। সরকারের ঠিক করে দেয়া দেশী পেঁয়াজের বিক্রয়মূল্য হবে ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা, কিন্তু এখন তা ৯০ টাকা ছাড়িয়েছে।