বরিশালে আ.লীগের বিরোধ বাড়ছেই
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ততই প্রকাশ্যে আসছে। শুরুতে ফেসবুক লাইভে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী চাচা আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাতের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারের ঘোষণা দেন বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। তবে এ ঘোষণা ফেসবুকেই শেষ। এখন পর্যন্ত চাচার পক্ষে মাঠে দেখা যায়নি ভাতিজাকে। চাচা-ভাতিজার দ্বন্দ্ব প্রথম প্রকাশ্যে আসে ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে। দুই পক্ষে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেওয়া হয়। সেখান থেকেই শুরু নতুন মেরূকরণ। চাচা-ভাতিজাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগে বিভক্তি, ক্ষোভ ও দ্বন্দ্ব বেড়েই চলেছে প্রতিনিয়ত।
নৌকা সমর্থকদের দাবি, সিটি নির্বাচনে আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাত মনোনয়ন পাওয়ার আগ থেকেই ঢাকায় অবস্থান করছেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি ও তার ছেলে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। সেসঙ্গে দলীয় কর্মীরাও ভোটের মাঠ থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেন।
এদিকে গত সোমবার নৌকা প্রতীকের কর্মীকে পিস্তল ঠেকিয়ে মারধর ও হত্যার হুমকির মামলায় কারাগারে গেছেন বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ও তার ১২ অনুসারী। ওইদিন বিকেলে বরিশালের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আল ফয়সালের কাছে আসামিদের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করে আগামী রোববার শুনানির দিন ধার্য করে
আসামিদের জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। একই দিন রাতে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এতে দলের অন্তর্কলহ ক্রমেই চাঙ্গা হচ্ছে।
কয়েকটি বিচ্ছিন্ন সহিংসতার ঘটনাও ঘটেছে এরই মধ্যে। বাড়ছে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা।
মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারীরা জানান, তাদের নেতারা একটি যৌথসভা করবেন। সভা থেকে দিকনির্দেশনা পেলেই তারা সবাই মিলে সেই অনুযায়ী কাজ করবেন।
মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহিন সিকদার বলেন, যৌথসভার কথা বলে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে। আমরা এজন্য নিজেরাই নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করে কার্যক্রম শুরু করেছি।
নৌকার প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে বরিশালের উন্নয়নের জন্য পাঠিয়েছেন। আমাকে মেয়র নির্বাচিত করা হলে, নগর ভবন হবে নগরবাসীর জন্য উন্মুক্ত। নগরবাসীর কাঁধে যে অতিরিক্ত করের বোঝা চাঁপানো হয়েছে, তা কমিয়ে আনা হবে। পাশাপাশি নগরবাসীর মতামতের ভিত্তিতে সুপরিকল্পিতভাবে নগরায়ণ করা হবে।
এর আগে গত সোমবার রাতে নগরীর বগুড়া রোডে ক্রাউন কনভেনশন হলে জাতীয় ফেডারেশন ও ট্রেড ইউনিয়নের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সভায় খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, আমাকে মেয়র নির্বাচিত করা হলে বরিশালের মানুষ আর লাঞ্ছিত ও বঞ্চিত হবে না।
