বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুর খননের উদ্যোগ

বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে পিরোজপুরের ঐতিহ্যবাহী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা পুকুরটি সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। এ উদ্যোগের মাধ্যমে একসময়ের জীবন্ত এই জলাধারকে আবারো প্রাণবন্ত ও পরিবেশবান্ধব স্থানে রূপান্তর করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সচেতন নাগরিক সমাজসহ জেলার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসমূহ এবং নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে অংশ নেন। পিরোজপুর জেলা জজের বাসার সামনের এই পুকুরটি দীর্ঘদিন ধরে অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার কারণে কচুরিপানায় ভরে গিয়ে পরিবেশ দূষণ ও মশার বংশবিস্তার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। তবে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে আজ পুকুরটি পুরোপুরি পরিষ্কার করে নতুন করে ব্যবহারের উপযোগী করে গড়ে তোলা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত পুকুর সংস্কারে এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে কাজের অংশ নেন পিরোজপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, “পরিবেশ রক্ষায় রাজনৈতিক পরিচয় মুখ্য নয়, মানুষের জন্য কাজ করাটাই গুরুত্বপূর্ণ। আজ আমি একজন নাগরিক হিসেবে এখানে অংশ নিচ্ছি। আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।”
প্রবাসী জেলা শহরের স্থানীয় বাসিন্দা, পিরোজপুরের প্রিয়মুখ তারিক রানা চৌধুরীও এ কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। তিনি বলেন, “পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পর এখন এই পুকুরটি ব্যবহারের উপযোগী হয়ে উঠেছে। এতে স্থানীয়রা যেমন উপকৃত হবেন, তেমনি শহরের মশাবাহিত রোগের ঝুঁকি ও পরিবেশ দূষণও হ্রাস পাবে।”
স্থানীয়রা জানায়, পিরোজপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় জেলার অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের অবহেলার কারণে পুকুরটি বছরের পর বছর কচুরিপানায় ঢেকে গিয়েছিল। ফলে একসময়ের এই প্রাণের জলাধারটি নোংরা ডোবায় রূপান্তরিত হয়ে পড়ে।
একাধিক অভিভাবক জানান, “পুকুরের ঘাট একসময় ছিল দৃষ্টিনন্দন। তখন পানি স্বচ্ছ ও ব্যবহারযোগ্য ছিল। আমরা এখানে গোসল করতাম, সন্তানদের সাতার শেখাতাম। অথচ আজ সেটি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।”
জেলার ব্যবসায়ীদের অনেকে জানান, আগে সাপ্লাইয়ের পানি না থাকায় বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতারা এখানেই অজু করতেন। এখন পুকুরের পানি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তারা বলেন, “বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার জন্যই এই অবস্থা হয়েছে।”
অভিভাবকদের প্রত্যাশা, এই উদ্যোগের মাধ্যমে পুকুরের হারানো সৌন্দর্য ও পরিবেশবান্ধব ব্যবহারের সুযোগ ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নেও কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।