রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণের নতুন দিন আনার প্রতিশ্রুতি মায়ার

বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি পদে প্রার্থী হিসেবে জ্যেষ্ঠ প্রভাষক আফরিনা মায়ার নাম উঠে এসেছে আলোচনার শীর্ষে। আগামী ১০ অক্টোবর এই সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে।
রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণের লড়াইকে বেগবান করতে স্বচ্ছ ইমেজ ও ক্যারিসম্যাটিক নেতৃত্ব গুণে এগিয়ে আছেন আফরিনা মায়। তৃণমূল রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণের নতুন দিন আনার প্রতিশ্রুতি নিয়ে তিনি সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি একটি বার্তাই দিচ্ছেন, দায়িত্ব পেলে জেলা যুব মহিলা লীগকে সুসংগঠিত করে শেখ হাসিনার উন্নত বিশ্বে পদার্পণের ভিশনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করবেন তিনি।
সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও নারী অধিকারের লড়াই থেকে রাজনীতিতে উঠে আসার এ লড়াই ইতোমধ্যে আফরিনা মায়াকে একজন সংগ্রামী নারী হিসেবে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে।
আফরিনা মায়া ১৯৭৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। সিরাজগঞ্জ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে দর্শন বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। পড়া শেষ করেই ২০০৪ সালে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন বেলকুচি মডেল ডিগ্রি কলেজে। বর্তমানে দর্শন বিভাগে জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ, সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সদস্য হিসেবে কাজ করছেন। আওয়ামী পেশাজীবী সংগঠন ‘স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ’-এর সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার কোষাধ্যক্ষ তিনি।
আফরিনা মায়া সিরাজগঞ্জ সদরের দত্তবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। তার শ্বশুর মরহুম আব্দুল হালিম ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক। আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হালিম স্বাধীনতার পর রাণীগ্রাম ইউনিয়ন কমিটির প্রথম চেয়ারম্যান হন। এরপর রিলিফ কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তৎকালীন বৃহত্তর ৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দুই মেয়াদে কমিশনার নির্বাচিত হন এবং এক মেয়াদে সিরাজগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ৭৫ পরবর্তী ক্রান্তিকাল থেকে দীর্ঘদিন বৃহত্তর ৩ নম্বর ওয়ার্ড (রাণীগ্রাম, গয়লা, ঘুড়কা, একডালা, কোবদাসপাড়া, দত্তবাড়ি, জানপুর, বাহিরগোলা) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ঐতিহ্যবাহী ‘অগ্রদূত সংসদ’-এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
আফরিনা মায়ার শ্বাশুড়ি তসলিমা বেগম দীর্ঘ ১৬ বছর বৃহত্তর ৩ নম্বর ওয়ার্ড শাখা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
আফরিনা মায়া পারিবারিকভাবে রাজনৈতিক পরিবেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বেড়ে উঠেছেন। তার চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান সিরাজগঞ্জ জেলা জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)। আব্দুর রহমান সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ ও জেলা যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি। ছোট চাচা এস এম আজম ঢাকা উত্তরের বনানী থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
আফরিনা মায়ার স্বামী আলমগীর নিষাদ ঢাকায় সাংবাদিকতা করেন। তিনি কবি, লেখক ও সাহিত্য সম্পাদক। ভারতের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে অনার্স (বিএ) ও মাস্টার্স (এমএ) সম্পন্ন করে ঢাকায় এসে সাংবাদিকতা শুরু করেন। বর্তমানে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনে বার্তা বিভাগে কর্মরত। এর আগে কাজ করেছেন নাগরিক টেলিভিশন, ডিবিসি নিউজ, যমুনা টেলিভিশন ও দৈনিক আমাদের সময়ে।
আফরিনা মায়া স্কুল ও কলেজ জীবন থেকে বিভিন্ন সামাজিক, সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত রয়েছেন। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়ায়ে কাজ করছেন দীর্ঘদিন। তিনি জাতীয় কন্যা শিশু আডভোকেসি ফোরাম, সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি ‘প্রগতিশীল লেখক কেন্দ্র, ‘বাঙগাল’-এর নেতৃত্ব দেন। পাশাপাশি ‘উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী’র কর্মী হিসেবে অভিনয় করেছেন অনেক মঞ্চনাটকে। বর্তমানে তিনি শিল্প-সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বিষ্যুদবারের আড্ডা’র আহ্বায়ক। তিনি ‘সিরাজগঞ্জ এসএসসি ৯৪ ব্যাচ’-এর আহ্বায়কের দায়িত্বও পালন করছেন। এছাড়া ঢাকা থেকে প্রকাশিত মাসিক ‘পূর্বাপর’ পত্রিকার সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি আফরিনা মায়া।