রোনালদোর হাত ধরে বদলে যেতে পারে ব্রাজিল ফুটবল, কোচ হতে পারেন যিনি

পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয় ব্রাজিল নিজেদের ইতিহাসের অন্যতম বাজে সময় পার করছে। গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে নিয়মিত ছন্দে নেই দেশটির ফুটবলাররা। সবশেষ কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নেয় সেলেসাওরা। ব্যর্থতার দায়ে কোচের পদ ছাড়েন তিতে। এরপর নতুন কোচের জন্য লম্বা সময় অপেক্ষায় থাকতে হয় ব্রাজিলকে।
তিতের বিদায়ের পর অন্তবর্তীকালীন কোচ হিসেবে কিছু দিন দায়িত্ব পালন করেন ফার্নান্দো দিনিজ। তখনই গুঞ্জন রটে, সেলেসাওদের দায়িত্ব নিচ্ছেন রিয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলত্তি। ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (সিবিএফ) সঙ্গে আলোচনাও নাকি চূড়ান্ত হয়ে যায়। তবে শেষ পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ সংকটের জেরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন আনচেলত্তি এবং রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গেই চুক্তি নবায়ন করেন
শেষ পর্যন্ত স্বদেশি কোচ দরিভাল জুনিয়রের উপর পাকাপাকিভাবে দায়িত্ব দেয় সিবিএফ। ব্রাজিল দলে দরিভালের শুরুটা দারুণ হলেও সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ধারাবাহিকতা হারায় তার দল।
চলমান দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বেশ ধুঁকতে দেখা যাচ্ছে ব্রাজিলকে। একপর্যায়ে পয়েন্ট তালিকার ছয় নম্বরেও নেমে যায় তারা। এখন পর্যন্ত ১১ ম্যাচ খেলে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে বর্তমানে টেবিলের চতুর্থ স্থানে রয়েছে তারা। সর্বশেষ ভেনেজুয়েলার সঙ্গে ড্র করেছে ১–১ গোলে।
ব্রাজিলিয়ান দলের এমন পরিস্থিতিতে সামনের দিনগুলোতে নিজেদের খুঁজে পাবে কি না, তা নিয়েও আছে সংশয়। আর ব্রাজিল দল যখন নানা সমস্যায় জর্জর, তখনই সামনে এসেছে চমক দেয়া এক খবর। ২০২৬ সালে আমূল বদলে যেতে পারে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলটি। শুধু কোচের পদেই নয়, বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে সিবিএফের ভেতরেও।
স্পোর্ত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদো নাজারিও নিজেই নাকি সিবিএফের সভাপতি হতে চান। পাশাপাশি তিনি কোচ হিসেবে দলে আনতে চান ইউরোপের প্রভাবশালী কোচ পেপ গার্দিওলাকে। ‘দ্য ফেনোমেনন’ খ্যাত রোনালদো আগামী বছর সিবিএফের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট এনদালদো রদ্রিগেজের মেয়াদ ২০২৬ সালের মার্চে শেষ হলেও সিবিএফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২০২৫ সালে। ধারণা করা হচ্ছে, রদ্রিগেজ আবারও নির্বাচনে দাড়াবেন। তবে রোনালদোও যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের লড়াইয়ে আসেন, তাহলে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়তে হতে পারে রদ্রিগেজকে।
স্পোর্তের প্রতিবেদনে বলা হয়, রোনালদো তার খেলোয়াড়ি জীবনের সময় থেকেই ব্যবসা ও সামাজিক–রাজনৈতিক দুনিয়ায় নিজের নেটওয়ার্ক তৈরির কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এমনকি বিচারিক ক্ষেত্রেও নাকি তার ভালো যোগাযোগ আছে, যা নির্বাচনে দাঁড়ালে তার পক্ষে কাজ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাশাপাশি সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার হিসেবে আলাদা দ্যুতির বিষয়টি তো রয়েছেই।
রোনালদো সিবিএফের সভাপতি হলে তার প্রধান লক্ষ্য ব্রাজিলের কোচ হিসেবে পেপ গার্দিওলাকে নিয়ে আসা। ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে গার্দিওলার চুক্তির মেয়াদ এ মৌসুমের পরই শেষ হয়ে যাবে। বতর্মানে সিটির নড়বড়ে পারফরম্যান্সসহ নানা কারণে সিটির সঙ্গে গার্দিওলার চুক্তি নবায়ন নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়।
এর মধ্যে গার্দিওলাও একাধিকবার জাতীয় দলের কোচ হওয়ার ইচ্ছার কথা বলেছিলেন। আর এই সুযোগটাই কাজে লাগাতে চান রোনালদো। স্প্যানিশ কিংবদন্তিকে নিয়ে আসতে চান ব্রাজিলে। এখন শেষ পর্যন্ত রোনালদো এ ইচ্ছেগুলো পূরণ হয় কি না, সেটাই দেখার অপেক্ষা।