সন্দ্বীপে ফেরি সার্ভিস বন্ধের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ

সন্দ্বীপবাসীর স্বপ্নের ফেরি সার্ভিস বন্ধের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদ গেইট ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে বিশাল মানববন্ধন,প্রতিবাদ সমাবেশ,সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কর্পরেশন বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন।
২২ এপ্রিল, সকাল ১১ টায় আমরা সন্দ্বীপবাসীর উদ্যোগে অনুষ্ঠিক মানববন্ধন কর্মসূচী ও প্রতিবাদ সমাবেশে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অংশগ্রহণ করেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠন তাদের স্ব-স্ব ব্যানার নিয়ে কর্মসূচীর সাথে একাত্বতা ঘোষনা করেছে। সবার একটাই দাবী বৈরি আবহাওয়া ছাড়া কোন কারন দেখিয়ে এই সার্ভিস একেবারে বন্ধ করা যাবেনা। এছাড়াও ফেরী সার্ভিস এর পাশাপাশি সি-ট্রাক চালুর আহব্বান জানিয়েছেন তারা। বক্তারা বলেন একটি বিশাল সিন্ডিকেট আগেও সন্দ্বীপের যাতায়াত ব্যবস্থাকে পুঁজি করে বড় ধরনের ব্যবসা করে গেছে। তাই তারা কখনো চায়নি সন্দ্বীপে মসৃন ও নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত হউক।তাই তারা ফেরি সার্ভিস শুরু হওয়ার এক মাসের মধ্যে আবার তৎপর হয়ে উঠেছে। সন্দ্বীপবাসী এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যবন্ধ ভাবে প্রয়োজনে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন বলেও জানান তারা।
উল্লেখ যে চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের মানুষ প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সন্দ্বীপ – চট্টগ্রাম নৌ-রুটে যাতায়াত করতে হতো।আধুনিক যুগে এসেও কোমড় পানি ও কাঁদা মাড়িয়ে শতবছরের যাতায়াতের করুন অবস্থাকে চট্টগ্রামবাসীর জন্য লজ্জাজনক বলেছিলেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্ঠা ড.মুহাম্মদ ইউনুছ।গত ২৪ মার্চ ফেরি সেবার উদ্বোধনকালে ভার্সুয়ালী বক্তব্য রাখতে গিয়ে এমন মন্তব্য করেছিলেন তিনি।পাঁচ উপদেষ্ঠাকে সঙ্গে নিয়ে ঐদিন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন এই ফেরি সার্ভিসের উদ্বোধন করেছিলেন সন্দ্বীপে এসে। তবে এই ফেরি সার্ভিস এর নায়ক হিসাবে সন্দ্বীপিরা সবাই বিদ্যুৎ, জ্বালানী এবং রেল উপদেষ্ঠা সন্দ্বীপ সন্তান ফাউজুল কবির খাঁন এর কাছে আজীবনের জন্য ঋনী বলে দাবী করেন।
আরো উল্রেখ্য যে চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে প্রায় ৪ লাখ মানুষ বসবাস করে। দৈনন্দিন কাজ, জীবন-জীবিকা, শিক্ষা, চিকিৎসার মতো জরুরি কাজে এ জনপদের বাসিন্দাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়ে জেলা শহর চট্টগ্রামে আসা-যাওয়া করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। চট্টগ্রাম সমুদ্র উপকূল ও সন্দ্বীপের মাঝখানে রয়েছে উত্তাল নৌ-চ্যানেল, এ নৌপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৪ কিলোমিটার। এ পথ পাড়ি দিতে শিশু, নারী ও বয়োবৃদ্ধ যাত্রীরা নৌযাত্রায় প্রতিনিয়ত অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েন।অনিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থার কারনে অনেক প্রাণহানী ও ঘটেছে এই রুটে বারবার।
গত ২/৩ দিন আগে বিআইডব্লিউটিএ উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান আসন্ন বর্ষা ও সাগর উত্তাল থাকার কারন দেখিয়ে ফেরি বন্ধের জন্য ও ফেরিঘাটের দুপাশে থাকা পন্টুনগুলো অনেক দামি ও বিরূপ আবহাওয়ার কারণে এগুলোর ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যেতে পারে মর্মে নৌ-পরিবহন মন্ত্রানালয়ে একটি চিঠি প্রদান করার খবর পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ে দেশ বিদেশে অবস্থানরত ৫ লক্ষ সন্দ্বীপবাসী।
উক্ত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াতের আমীর আলাউদ্দীন শিকদার, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলমগীর হোসেন ঠাকুর, উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক আজমত আলী বাহাদুর, মনির তালুকদার,কাসেম মাষ্টার,জামায়াত নেতা মাওলানা আবু তাহের, এ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন,পৌর বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক মোঃ মাহবুবুল আলম শিমুল,নাজিম উদ্দিন, ও মোঃ মাঈন উদ্দিন। উপজেলা বিএনপি নেতা জয়নাল আবেদিন বাকের,যুবদল নেতা শওকত তালুকদার সহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।সভায় সভাপতিত্ব করেন যুবদল নেতা নিঝুম খাঁন। সভা সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেন।