সন্দ্বীপে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট।

পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনের আর মাত্র তিন দিন বাকি। এরই মধ্যে চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। শুরুতে পশুর হাটগুলোতে মানুষের উপস্থিতি কম থাকলেও, ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। উপজেলার প্রতিটি পশুর হাটে এখন উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরে উপজেলার পণ্ডিতের হাট গরুর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, হাটজুড়ে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। কেউ এসেছেন একা, কেউবা আবার পরিবার-পরিজন বা দলবেঁধে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতি হাটজুড়ে যেন ঈদের উৎসবের আবহ সৃষ্টি করেছে। পশু কেনাকাটাকে কেন্দ্র করে হাটে প্রাণচাঞ্চল্য দেখা গেছে।
এ বছর হাটগুলোতে দেশি গরুর আধিপত্য লক্ষ করা গেছে। প্রতিটি হাটেই বিপুল সংখ্যক দেশি গরু তোলা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সন্দ্বীপে বিদেশি কোনো পশুর দেখা মেলেনি। তবুও ক্রেতাদের আগ্রহে ঘাটতি নেই। অনেকেই পছন্দের পশুটি কিনে বাড়ি ফিরছেন, আবার কেউ কেউ অপেক্ষা করছেন দাম আরও একটু কমার আশায়।
সন্দ্বীপ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আলী আজম জানান, “এ বছর সন্দ্বীপে গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ মিলিয়ে মোট ৮৫ হাজার কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে। যেখানে চাহিদা রয়েছে প্রায় ৩৩ হাজার পশুর। অর্থাৎ আমাদের উপজেলায় চাহিদার তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি পশু রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “দেশীয় খামারিরাই এই পশুগুলো সরবরাহ করছেন। এটাই স্থানীয় অর্থনীতির জন্য একটি বড় সুখবর।”
পশুর হাটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও রয়েছে প্রশাসনের কড়া নজর। সন্দ্বীপ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম শফিকুল আলম চৌধুরী প্রতিদিন বিভিন্ন হাট পরিদর্শন করছেন। তিনি জানান, “প্রতিটি হাটে পুলিশের টহল টিম দায়িত্ব পালন করছে, যাতে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা না ঘটে।”
এ বিষয়ে সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিগ্যান চাকমা জানান, “এ বছর সন্দ্বীপে মোট ১৫টি পশুর হাট বসেছে। প্রতিটি হাটে প্রশাসনের মোবাইল টিম কাজ করছে। পাশাপাশি, ব্যাপারীদের পশু আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত নজরদারি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।”
সব মিলিয়ে ঈদের আগে শেষ মুহূর্তে সন্দ্বীপের পশুর হাটগুলো জমে উঠেছে প্রাণবন্তভাবে। নিরাপত্তা, সরবরাহ ও দাম—সবদিক বিবেচনায় এবার সন্দ্বীপের হাটগুলোকে সফল বলছেন সংশ্লিষ্টরা।