সন্দ্বীপ হরিশপুর ইউনিয়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত।

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে হরিশপুর ইউনিয়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে ০৯ই মে ২০২৫ ইং রোজ শুক্রবার বিকাল ০৩ ঘটিকায় হাজী আব্দুল মালেক ইসলামিয়া মাদ্রাসার অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়।
সুধী সমাবেশে ইসলামি ছাত্রশিবির সন্দ্বীপ উপজেলা সাবেক সভাপতি আব্দুল্লাহ আল আজিজ সজিবের সঞ্চালনায় হরিশপুর ইউনিয়ন সভাপতি মোহাম্মদ শাহাদাত হোসাইন এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সম্মানিত আমীর, চট্টগ্রাম- ০৩ (সন্দ্বীপ) আসনে মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী জননেতা আলাউদ্দীন সিকদার ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম উত্তর জেলা মজলিসে শুরা সদস্য ও সন্দ্বীপ উপজেলা আমীর মাওলানা সিরাজুল ইসলাম ফিরোজ।
প্রধান অতিথি জননেতা আলাউদ্দীন সিকদার বলেন – জামায়াতে ইসলামী কি চাই? আজকে জামায়াত ইসলামী সম্পর্কে বিভিন্নজন নানাভাবে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। কেউ বলছে- জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশে কোরআনের আইন চালু করবে। মানুষ আর স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করতে পারবে না।
প্রিয় সুধী, আজকে আমাদের এই বাংলাদেশ কেন পিছিয়ে রয়েছে? শুধুমাত্র বড় বড় দুর্নীতির কারণে, লুটপাট এর কারণে এই বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সেই জায়গায় থেকে কাজ করছে, যাতে করে বাংলাদেশ দুর্নীতিমুক্ত হয় এবং এদেশকে অনেক উন্নতিতে আরোহন করানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
জামায়াতে ইসলামী চাই সৎ লোক তৈরি করতে, আদর্শবান ব্যক্তি তৈরি করতে। আর তাদের মাধ্যমে আগামী বাংলাদেশকে পরিচালনা করতে চাই। কেননা জামায়াতে ইসলামের সাথে দুর্নীতি, ঘুসের কোন সম্পর্ক নেই। এর প্রমাণ জামায়াতে ইসলামের সাবেক দুই নেতার কথা আপনারা সবাই জানেন। মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, আলী হাসান মুজাহিদ মন্ত্রীদ্বয়ের নামেই দুই টাকার দুর্নীতির অভিযোগও দিতে পারেনি। অথচ তাদেরকে অন্যায় ভাবে মেরে ফেলা হয়েছে। সুতরাং জামায়াতে ইসলামী এমন নেতৃত্বে লোক তৈরি করে। এটাই জামায়াতে ইসলামীর সফলতা। তাই আসুন সকলে জামায়াতে ইসলামীর সাথে ঐক্যবদ্ধ থাকি। জামায়াতে ইসলামী কে সহযোগিতা করে দেশ ও জাতির সেবা দানের জন্য সুযোগ করে দিন।পরস্পর পরস্পরের দায়িত্বশীলের পরিচয় দিন।
বিশেষ অতিথি মাওলানা সিরাজুল ইসলাম ফিরোজ বলেন – বিগত ১৬ বছরের হিসাবে আমরা দেখেছি, বাংলাদেশে যে সন্ত্রাসীর রাজত্ব কায়েম ছিল সেখানে মা-বোনদের ইজ্জত লুন্ঠিত হয়েছে, নিরীহ মানুষকে খুন করা হয়েছে, ঘুম করা হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থগুলোকে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোকে খালি করে দেয়া হয়েছে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। আমাদের নীতি নৈতিকতাকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। সুতরাং এখান থেকে যদি আমাদেরকে মুক্তি পেতে হয়, সমাজে যদি শান্তি কায়েম করতে হয়, অন্যায় অশান্তিকে দূরভিত করতে হয়, তাহলে আল্লাহর কোরআনের আইনের কোনো বিকল্প নেই। আল্লাহর কোরআনের বিধান ছাড়া অন্য কিছুতেই শান্তি দিতে পারে না। যদি দিতে পারতো তাহলে বিগত ৫৩ বছর একেকবার একেকটি সরকার এসেছিল। ক্ষমতার পালাবদল হয়েছিল ; অথচ আমাদের কাছে শান্তি আসেনি, চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি, দুর্নীতি বন্ধ হয়নি, সন্ত্রাস বন্ধ হয়নি। আমরা মনে করি বাংলাদেশের যদি শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হয়, তাহলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা করতে চাই এবং সৎ লোকের শাসন চাই। কারণ শুধুমাত্র আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা করলে হবে না, সেখানে সৎ লোকের শাসনও লাগবে। কারণ সমাজের শাসক যদি দুর্নীতিবাজদের হাতে থাকে, সন্ত্রাসীদের হাতে থাকে, তাহলে সেখানে দুর্নীতি, সন্ত্রাসী বন্ধ হবে না। তাই সকলে আসুন এই সমাজকে সৎ লোকের হাতে তুলে দিই, জামায়াতে ইসলামের হাতে তুলে দিই।
অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সন্দ্বীপ উপজেলা তথ্য ও প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ খাঁন, উপজেলা যুব বিভাগ সভাপতি মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সাবেক অফিস ও প্রকাশনা সম্পাদক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, সাবেক চৌমুহনী কলঘর ইসলামী পাঠাগার সেক্রেটারি মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন প্রমুখ।