সিরাজগঞ্জে যমুনার তীররক্ষা বাঁধে শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার যমুনা নদীর কৈজুরী-বিনোটিয়া তীর রক্ষা বাঁধের বিনোটিয়া ও মাজ্জান অংশে দফায় দফায় ধস নেমেছে। এতে প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।
এ ভাঙ্গনে বসতভিটা ও ঘরবাড়ি হারিয়ে শতাধিক পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২ মাস আগে বন্যার শুরুতে প্রচন্ড শ্রোতে ওই বাধের বিনোটিয়া গ্রামের ৭০ মিটার জুড়ে ধসে যায় এবং পরে মাজ্জান অংশ মিলে বাঁধের বিলীন হয় প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকা। এ ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের লোকজন স্থানীয় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় রিয়েছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, এবার বর্ষার শুরুতেই নদীর এ অংশের ভয়াবহ অবস্থার বিষয়ে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবগত করা হয়। কিন্তু সময়মত তারা ব্যবস্থা না নেয়ার প্রায় ১ কিলোমিটার বাঁধ ধসে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ ভাঙ্গনে ভেঙ্গে গেছে ঐতিহ্যবাহি শিমুলকান্দি জামে মসজিদ। এ ভাঙ্গন অব্যাহত থাকায় একই এলাকায় ১৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩ বছর আগের নির্মিত বাঁধ এখন হুমকির মখে রয়েছে। এছাড়া হুমকিতে রয়েছে বহু ঘর-বাড়ি, স্কুল, হাট-বাজারসহ অন্যান্য স্থাপনা।
স্থানীয় প্রশাসন ও ক্ষতিগ্রস্থদের অনুরোধে পাউবো এখন কাজ করছে। তবে এ কাজে ভাঙ্গন নিয়ন্ত্রণে না আসার আশংকাও রয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেন, সাবেক প্রধান শিক্ষক আবু সাইদ চৌধুরী, ইউপি সদস্য এরশাদ আলীসহ অনেকেই সাংবাদিকদের জানান, তীর রক্ষা বাধের অদূর থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু ব্যবসায়ীরা অপরিকল্পিত ভাবে বালু তোলার কারনে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অনেক আগেই লিখিত ভাবে জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। এ ভাঙ্গনে আশপাশের ৭/৮ গ্রামের মানুষ এখন আতংকের মধ্যে রয়েছে। ইতিমধ্যেই নিঃস্ব হয়েছে শতাধিক পরিবার। এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার ও বহু ঘরবাড়িসহ বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধ হুমকিতে রয়েছে। যেকোন সময় ৩ বছর আগের নির্মিত এ বাঁধ যমুনায় বিলীন হতে পারে। এজন্য ভাঙ্গন রোধে পাউবো’র কঠোর ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। এছাড়া ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে এখন নগদ অর্থসহ ত্রাণ সামগ্রী দেয়া প্রয়োজন।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, ভাঙ্গনের বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে অবগত হয়েছি এবং তাৎক্ষনিকভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। ইতোমধ্যেই ভাঙ্গন রোধে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এদিকে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিৎ কুমার সরকার বলেন, হুমকির মুখে নির্মিত বাঁধটি পাবনার বেড়া ও কইতলা পাউবোর ডিবিশনে রয়েছে। বর্তমানে সিরাজগঞ্জের পাউবোর কর্তৃপক্ষ এখন ওই বাঁধের দায়িত্বে রয়েছে। তবে ওই এলাকায় ভাঙ্গন রোধে জিও ব্যাগ নিক্ষেপ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই নতুন প্রকল্প কাজের টেন্ডার হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ভাঙ্গন মুক্ত হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।