শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ০৯:৩৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম
মৃত প্রবাসী কর্মীর পরিবারকে আর্থিক অনুদান সন্দ্বীপে গুপ্তছড়া সড়কে উচ্ছেদ অভিযানের পর নতুন সংকট: ২/৩ ফুট জায়গায় দেয়াল তুলছে মালিকপক্ষ, সংঘাতের আশঙ্কা। গাইবান্ধায় মাজারে মাদকসেবীদের আখড়া বন্ধের দাবীতে মানববন্ধন চাঁপাইনবাবগঞ্জে জমে উঠেছে পশুর হাট, ছোট গরুর চাহিদা বেশি এনআইডি সংশোধনের আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ ইসির  অপ্রয়োজনীয় কল কমলে ৯৯৯ এর সেবা আরও দ্রুত পাওয়া যাবে বাংলাদেশে চীনা পরিবেশবান্ধব ই-বাইক বাজারজাতকরণের জন্য সমঝোতা স্মারক সই পাকিস্তান সিরিজ থেকে ছিটকে গেলেন সৌম্য ডেনমার্কে ২০৪০ সালে অবসরের বয়স হবে ৭০ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসন অধ্যাদেশ চূড়ান্ত অনুমোদন

সিরাজগঞ্জ বেলকুচির সাব রেজিষ্ট্রারের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ

শাহ আলী জয়
প্রকাশিত হয়েছে : সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার মোঃ হাসানুজ্জামানের বিরুদ্ধে অনিয়ম- দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। ভুমি রেজিষ্ট্রি দলিলে যত স্বাক্ষর করবেন, সেই হারেই অতিরিক্ত হাদিয়া আদায় করবেন। এজন্য আবার ভিন্ন-ভিন্ন নির্ধারন দর রয়েছে। তার নানা দুর্নীতি ও অনিয়ম এখন ওপেন সিক্রেট। তিনি যেভাবে চাবেন, সে ভাবেই টাকা না দিলে কাজ হবেনা কোন। এসব বিষয়ে উপজেলা বাসী সহ দলিল লেখকদের নানা ক্ষোভ, অভিযোগ থাকলেও তিনি তা তোয়াক্কা করেন না।
সরকারী কর্মচারীদের ওভার টাইম ডিউটির নিয়ম না থাকলেও অতিরিক্ত অর্থ আয়ের নেশায় বেধে দেয়া সময়সীমার পরেও কর্মস্থলে নিয়োজিত থাকেন টাকার নেশায় দুর্নীতির সহযাত্রী সাব রেজিষ্ট্রার হাসানুজ্জামান।
তার এসব বিষয় ক্ষতিয়ে দেখে পদক্ষেপ নেবার কথা জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
জানা যায়, তাঁত শিল্প সমৃদ্ধ কৃষি প্রধান জেলার বেলকুচি উপজেলার সাধারন মানুষ এখন ভুমি রেজিষ্ট্রি সেবা নিতে গিয়ে পদে পদে হয়রানীর শিকার হচ্ছে। জমি রেজিষ্ট্রি বাবদ সাব রেজিষ্ট্রার মোঃ হাসানুজ্জামানের বেধে দেয়া নির্ধারিত অংকের টাকা না পেলে দলিলে স্বাক্ষর করেন না। তাই উপায় না বুঝে বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত টাকা দিয়ে দলিল সম্প্রদান করতে হয়।
কুষ্টিয়ার জেলার বাসিন্দা সাব রেজিষ্ট্রার মোঃ হাসানুজ্জামান বেলকুচি ভুমি রেজিষ্ট্রি অফিসে গত ০৪.০১.২০২১ইং তারিখে যোগদানের পর থেকেই এমন ভোগান্তি চলছে উপজেলাবাসীর।
দলিল লেখক ও স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, এর আগে অনেক সাব-রেজিষ্ট্রার বেলকুচিতে কর্মস্থলে এসেছেন, কিন্তু হাসানুজ্জামানের মত এতো দুর্নীতি পরায়ন ছিলেন না কেউ। দলিল রেজিষ্ট্রি কারী ভুমি মালিকরা দুপুর ১টার মধ্যে না আসলে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা হারে অতিরিক্ত ফি নিজে নিয়ে থাকেন।  এছাড়া জেলার মধ্যে কমিশনে দলিল করতে গেলে তিনি ২৫ হাজার টাকা ও জেলার বাইরে গেলে দলিল প্রতি ৬০ হাজার টাকা অতিরিক্ত ফি আদায় করে থাকেন।
এছাড়া জমি সংক্রান্ত যে কোন সেবা নিতে গেলে জমির মালিকরা তাকে আর্থিক হয়রানীর শিকার হন। মহরী লুৎফর রহমান হিটলার, সাবেক ক্যাশিয়ার আমিনুল ইসলাম, সাইদুল মল্লিকের কাছ থেকে ঢাকায় গিয়ে ১টি করে দলিল করা বাবদ ৬০ হাজার করে টাকা নিয়েছে।
এছাড়া সুদিপ মহরীর কাছ থেকে চট্টগ্রামে গিয়ে ১টি দলিল করা বাবদ ৮০ হাজার টাকা করে নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে স্থানীয়দের পাশাপাশি দলিল লেখকরাও তার দ্বারা চরম ভাবে হয়রানীর শিকার।
তার এসব অনিয়ম কাজে সহযোগিতার জন্য কতিপয় অসাধু দলিল লেখকদের নিয়ে দালার চক্র রয়েছে। বেলকুচি উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সাবেক সভাপতি মতিয়ার রহমান লাভলু অন্যতম।
এ ব্যাপারে বেলকুচি উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি সাইদুল ইসলাম, সাধারন সম্পাদক তারিকুল ইসলাম খান ও সাবেক সাধারন সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, সাব রেজিষ্ট্রার মোঃ হাসানুজ্জামান বেলকুচিতে যোগদানের পর থেকে দলিল করতে আসা জমি মালিকরা হয়রানীর শিকার হচ্ছে। বাড়তি টাকা ছাড়া তিনি কিছু বোঝেন না। আমরাও তার বিতর্কিত কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ। এখন সকাল ৮টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত সরকারী অফিস চলাকালীন সময় নির্ধারন থাকলেও তিনি আসেন সাড়ে ৯টায়। আর অফিস ত্যাগ করেন ৪টা বা তারও পরে।
এরকম অভিযোগের বিষয় সরেজমিনে গত ১৪ সেপ্টেম্বর বুধবার বেলকুচি সাব-রেজিষ্ট্রি অফিস পরিদর্শন করে জানা যায়, সাব রেজিষ্ট্রার হাসানুজ্জামান দিনভর ৬৬টি দলিল রেজিষ্ট্রি করেছেন। এর মধ্যে দুপুর ১টার পর হওয়ায় ২৩টি দলিল রেজিষ্ট্রি করতে অতিরিক্ত অর্থ নিজে বিলম্ব ফি নিয়েছেন। এদিন বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে তার অফিসে গেলে দেখা যায় তিনি দলিল সংক্রান্ত ফাইলে স্বাক্ষর করছেন। এসময় ৩টার পরে অফিসে কেন রয়েছেন প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আজ দেরি হয়ে গেছে। আমাকে নিতে আসা মোটর সাইকেল এখনো আসেনি বলে বাড়ি যাওয়া হয়নি। একথা বলেই তিনি দ্রুত অফিস ত্যাগ করেন।
এদিকে বরাবরের ন্যায় তিনি সরকারী নিয়ম অমান্য করে প্রতিদিন এভাবে অফিস করেছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করেছে। তার অনিয়মন ও দুর্নীতির বিষয় জানতে বার-বার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, নিয়ম মেনে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে থাকতে হয়। সাব রেজিষ্ট্রার যদি অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকে অভিযোগ পেলে ক্ষতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ধরনের আরও খবর দেখুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর