সিরিজে সমতা ফেরানোর লক্ষ্য বাংলাদেশের

ফর্মহীনতা সত্তেও পাকিস্তানের বিপক্ষে আগামীকাল লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিতব্য দ্বিতীয় টি২০তে শক্তিশালী ভাবে ফিরে আসার ব্যপারে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ।
ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় শুরু হবে। সরাসরি সম্প্রচার করবে টি স্পোর্টস।
প্রথম ম্যাচে ৩৭ রানে পরাজয়ের পর তিন ম্যাচের সিরিজে টিকে থাকতে হলে দ্বিতীয় ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মাসের শুরুতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে ২-১ ব্যবধানের হতাশাজনক সিরিজ পরাজয়ের পর সব ভুল শুধরে ছোট ফর্মেটের এই ক্রিকেটে ফিরে আসার প্রত্যয় নিয়ে পাকিস্তানে খেলতে এসেছে টাইগাররা। কিন্তু তিন বিভাগেই ব্যর্থতার জেড়ে প্রথম ম্যাচেই হোঁচট খেতে হয়েছে সফরকারীদের।
গতকালকের ম্যাচে শুরুতেই পাকিস্তানকে কিছুটা ধাক্কা দিলেও বাংলাদেশের বোলাররা সেই ছন্দ শেষ পর্যন্ত আর ধরে রাখতে পারেনি। প্রথম ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিং থেকে পাকিস্তান ৭ উইকেটে ২০১ রান সংগ্রহ করে। কিন্তু ব্যাটিং ব্যর্থতায় বাংলাদেশের ইনিংস ১৯.২ ওভারে ১৮৪ রানে শেষ হয়ে যায়।
ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা পাকিস্তানী পেসার হাসান আলি ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করে ৩০ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট। বাংলাদেশের ব্যাটাররা যেভাবে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে তাতে সিরিজে ফিরে আসার ব্যপারে তেমন কোন আশা দেখা যাচ্ছেনা।
যদিও অধিনায়ক লিটন দাস হতাশা ভুলে ফিরে আসার ব্যপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। গতকাল ম্যাচ শেষে লিটন বলেছেন, ‘পুরো ম্যাচে আমরা বোলিং, ব্যাটিং কিংবা ফিল্ডিং, কোন বিভাগেই ভাল করতে পারিনি। আমি সেসব নিয়ে কিছু বলবো না। তবে আমাদের শক্তভাবে ফিরে আসতে হবে। এখনো দুটি ম্যাচ বাকি রয়েছে। শুধুমাত্র ব্যাটিং, বোলিং নয়, টি২০’তে ফিল্ডিংয়েও ভাল করা জরুরী। পুরো ম্যাচে আমরা সেটাও করতে পারিনি। এই পিচে ২০০ রান তাড়া করা সম্ভব। কারন আউটফিল্ড অনেক ফাস্ট, ব্যাটিংয়ের জন্য উইকেটও পুরোপুরি সহায়ক।
ম্যাচের শুরুতেই ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনকে হারানোর পরও বাংলাদেশ দ্রুতই ম্যাচে ফিরে আসার ইঙ্গিত দেয়। বিশেষ করে লিটন ব্যাটিংয়ে সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি স্পষ্টভাবে কভার ড্রাইভ চালিয়ে বোলারদের বিভ্রান্ত করে তোলেন, অন্যদিকে তানজিদ তামিম সাহসী ছিলেন, ইচ্ছামত ছক্কা মারছিলেন। তানজিদের আউটের পর তাওহিদ হৃদয় যদিও ম্যাচ কিছুটা ধীর করে দেন। কিন্তু অন্যপ্রান্তে লিটন ঠিকই রানের চাকা সচল রাখেন। তবে লিটন সাজঘরে ফেরার পর বাংলাদেশ ৬৪ রানে শেষ ৭ উইকেট হারিয়েছে।
মিডল ওভারে ব্যাটারদের আরো দৃঢ়তার পরিচয় দিতে হবে বলে লিটন বলেছেন। জাকের আলি অনিক ছাড়া মিডল অর্ডারে আর কেউই নিজেকে প্রমান করতে পারেননি। লিটন বলেন, ‘ইনিংসের মাঝামাঝিতে আমরা ভাল ব্যাটিং করতে পারিনি। কিন্তু এসব থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। জাকের আলি গত এক বছর ধরে আসলেই ভাল খেলছে। এই মুহূর্তে মিডল অর্ডারে সেই আমাদের মূল খেলোয়াড়। কিন্তু কোন একজন খেলোয়াড় ম্যাচ জেতাতে পারেনা। সবাইকে দলীয় জয়ে অবদান রাখতে হবে। মানসিক ভাবে আমাদের বিষয়টা নিয়ে ভাবতে হবে। আমি মনে করি ক্রিকেট শুধুমাত্র অনুশীলনের বিষয় নয়, এটাকে অনুধাবন করতে হবে। সবাইকে একসাথে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।
এই পরাজয়ের মাধ্যমে টি২০’তে পাকিস্তানের মাটিতে বাংলাদেশ চারটি ম্যাচের সবকটিতেই হারের স্বাদ পেল। সব মিলিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০ ম্যাচের ১৭টিতেই পরাজিত হয়েছে টাইগাররা।
প্রথম ম্যাচে দাপুটে জয়ে পাকিস্তানও চাইবে দ্বিতীয় ম্যাচেই সিরিজ নিজেদের করে নেয়ার। শুধুমাত্র ওপেনিং বাদে প্রথম ম্যাচে পাকিস্তান সব বিভাগেই সফল হয়েছে।
বাংলাদেশ স্কোয়াড : লিটস দাস (অধিনায়ক), মাহেদি হাসান, তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, মেহেদি হাসান মিরাজ, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, শামিম পাটোয়ারি, জাকের আলি অনিক, রিশাদ হোসেন, তানভির ইসলাম, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, হাসান মাহমুদ, তানজিম হাসান সাকিব ও শরিফুল ইসলাম।
পাকিস্তান স্কোয়াড : সালমান আলি আগা (অধিনায়ক), শাদাব খান, আবরার আহমেদ, ফাহিম আশরাফ, ফকর জামান, হারিস রউফ, হাসান নাওয়াজ, হুসেইন তালাত, খুশদীল শাহ, মোহাম্মদ হারিস, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, মুহাম্মদ ইরফান খান, নাসিম শাহ, সাহিবজাদা ফারহান ও সাইম আইয়ুব।
বাংলার সংবাদ/এস এম