হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলাধুলা

হারিয়ে যাচ্ছে পল্লী গ্রামের ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলাধুলা । ঐতিহ্যবাহী পল্লীগ্রামের খেলাধুলা ছিল মোরগের লড়াই, কাবাডি, ষাঁড়ের লড়াই, লুকোচুরি, কুতকুত, কানামাছি ইত্যাদি । বেশ নজরে পড়ত এ খেলাগুলো । এই গ্রামীণ খেলাগুলো এখন নাই বললেই চলে। গ্রামীন খেলাগুলো হারিয়ে যাচ্ছে বর্তমানে ফুটবল ও ক্রিকেট খেলার জনপ্রিয়তার কারণে ।
নতুন প্রজন্মের কাছে গ্রামীণ খেলাধুলাগুলোর ব্যাপারে কথা বললে তারা চিনে না বলে জানায়। স্কুলের বইয়ে যে সমস্ত গোল্লাছুট, দাড়িয়াবান্দা, দড়িরলাফ, এক্কাদোক্কা, ফুলটোকা ও পলানটুকা খেলার মাত্র নাম শুনেছে। এ খেলার নিয়মনীতি জানেও না অনেকে ।
স্কুল শিক্ষার্থীদের কাছে পড়ালেখার চাপ খুব বেশী যার কারনে এখন খেলার সময় পাওয়া যায় না বলে শিক্ষার্থীরা জানান। এমনকি ছুটির দিনে সময় পাওয়া যায় না। যে কারণে এখন মাঠেঘাটে ছাত্রছাত্রীদের খেলাধুলা করতে দেখা যায় না। ফুটবল এবং ক্রিকেট খেলারই প্রচলন বেশী এখন। তাই অন্য খেলায় তাদের আগ্রহ নেই।
পল্লীগ্রামের হাডুডু, বৌচি, কানামাছি, লাঠিখেলা, সাঁতার বাইস, গানের কলি, চোর-পুলিশ, কিলোয়ার, দৌড়, লৌহ/বর্ষা নিপে, সাত পাতা, জামাই বৌ,চিতল খেলা, পুতুল খেলা, গোস্ত খেলা, লাটিম খেলা, মুলা খেলা, বাঘ-বকরি ও বালিশ খেলা ইত্যাদি খেলা অহরহ দেখা গেছে।
এ যুগের ছেলে-মেয়েরা এসব খেলার নামও জানে না। উপরোক্ত খেলার স্থানে দখল করে আছে বাস্কেটবল, ভলিবল, কেরাম বোর্ড, দাবা এবং ভিডিও গেম্স। তখনকার ঐতিহ্যবাহি প্রতিযোগিতা ছিল নৌকা বাইচ। আর এ প্রতিযোগিতা হতো বিভিন্ন গ্রামের মধ্যে।
তখন এ খেলা দেখতে নদীর তীরে হাজার হাজার দর্শকদের আনাগুনা ভীড় থাকত। এখন আর এগুলোর পরিবেশ নেই। যার কারণে উক্ত খেলাগুলো আজ বিলুপ্তির পথে। এছাড়া ছেলেমেয়েরা বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে টিভির সামনে বসে সময় কাটায়। এখনকার ছেলেমেয়রা অবসর সময়ে কম্পিউটার ও মোবাইল গেম, ক্রিকেট খেলা দেখা এবং ফুটবল খেলা দেখে সময় কাটিয়ে দেয়। অন্যদিকে, কোন কোন কিশোরেরা, ব্লগিং, ফেসবুক চ্যাটিং, মোবাইলে কলিং এবং বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ ওয়েবসাইট ব্রাউজিং করে সময় কাটাচ্ছে।