শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১১:২০ অপরাহ্ন
শিরোনাম
শিবগঞ্জে মিনি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধের পর বিমানের কার্গো সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে বাংলাদেশ চুনারুঘাট উপজেলায় দিনেদুপুরে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা কোটি টাকার ইয়াবা লুট করেছে কক্সবাজারে,নৈপথ্যে ছদ্মবেশী রবিউল! আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের বিরুদ্ধে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা পেলে কঠোর ব্যবস্থা : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা শহীদ মুজাহিদের মা-বাবা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের ইতিহাসে ‘সেরা নির্বাচন’ আয়োজন করবে : প্রধান উপদেষ্টা বাজার পরিষ্কার পরিছন্নতা ও ড্রেনের কাজ চলমান মাদারীপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল থেকে চুরি হয়ে গেছে ৬ মাসের শিশু বাচ্চা স্ত্রীকে হত্যা করে থানায় হাজির স্বামী: পুটি মাছ কাটা নিয়ে দ্বন্দ্বে প্রাণ গেল মৌসুমীর

চলতি বছরই চালু হতে পারে

শাহ আলী জয়
প্রকাশিত হয়েছে : বৃহস্পতিবার, ২২ জুন, ২০২৩

আসছে যক্ষ্মার টিকা। একবার নিলেই সারা জীবন চলে যাবে। যক্ষ্মার টিকা শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাইকে দেয়া হবে। বিশ্বব্যাপী যক্ষ্মা আক্রান্ত কমানোর লক্ষ্যেই সামনে জনগোষ্ঠীর সবাইকে টিকা দেয়া হবে।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসঙ্ঘের অধিবেশনে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের একযোগে সম্মতি ও অঙ্গীকারের পরই শুরু হবে যক্ষ্মার টিকা দেয়ার কাজ বলে জানিয়েছেন ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল ইমিউনোলজি অব বাংলাদেশের (আইএসিআইবি) চেয়ারম্যান ও মাইক্রোবায়োলজিস্ট অধ্যাপক ডা: মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন থেকে বাংলাদেশে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে নানা কর্মসূচি নেয়া হলেও রোগটি কমছে না। একই রকম থেকে গেছে। প্রকৃতপক্ষে কর্মসূচি বাস্তবায়নে পদ্ধতিগত কিছু ভুল থাকায় যক্ষ্মার সংক্রমণ ও মৃত্যু কমছিল না।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে প্রতি বছর ৩৬ হাজার থেকে ৪০ হাজার মানুষ যক্ষ্মায় মৃত্যুর কথা সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলো বলে এলেও বাস্তবে বাংলাদেশে এর চেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় রোগটিতে। অপর দিকে বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলো বছরে তিন লাখ ৬০ হাজার মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হওয়ার কথা বলা হলেও বাস্তবে এই তথ্যটাও সঠিক নয়। এর চেয়ে বেশি মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হচ্ছে। এ জন্য প্রয়োজন আরো বৈজ্ঞানিক উপায়ে পরিসংখ্যান সংগ্রহ করা।

বাংলাদেশে এর আগে শুধুমাত্র ফুসফুসে ক্যান্সার নির্ণয় করা হতো কিন্তু শুধু ফুসফুস নয়, অন্যান্য অঙ্গেও যক্ষ্মা হয়ে থাকে। অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, শরীরের বিভিন্ন গ্ল্যান্ড, মস্তিষ্ক, নারীদের জরায়ুতেও যক্ষ্মার জীবাণু বাসা বাঁধতে পারে। এতদিন বাংলাদেশে ফুসফুসের বাইরের অঙ্গগুলোতে যক্ষ্মা হওয়ার ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়া হয়নি এবং এগুলো নিয়ে কাজ করা হয়নি বলে যক্ষ্মা রোগ নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

এ ব্যাপারে অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট (এমডিআর) যক্ষ্মার ক্ষেত্রে ১৮ মাসের একটি লম্বা সময়ের ওষুধ যক্ষ্মা রোগীকে সেবন করতে হতো। এ কারণে এমডিআর (সাধারণ যক্ষ্মার ওষুধে যাদের কাজ করে না, তাদের আরো উচ্চমাত্রার ওষুধ সেবন করতে হয় সুস্থ হতে) যক্ষ্মা রোগীরা কিছুদিন ওষুধ খাওয়ার পর তাদের অনেকেই ওষুধ খাওয়া ছেড়ে দিয়ে থাকে। এতদিন একই ধরনের ওষুধ খেতে বিরক্তি চলে আসে বলে অনেকেই খেতে চায় না। ফলে এই এমডিআর রোগীরা আর সুস্থ হয় না কিন্তু এরা প্রচুর এমডিআর জীবাণু ছড়িয়ে দিয়ে অন্যদের এমডিআর যক্ষ্মা রোগী করে দিচ্ছে। অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আগামী দিনে অর্থাৎ চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের পর এমডিআর যক্ষ্মা রোগীদের চিকিৎসা ১৮ মাস থেকে ২ মাসে নামিয়ে এনে নতুন ওষুধ দেয়ার পরিকল্পনা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসঙ্ঘের অধিবেশনে সদস্য দেশগুলোর সরকারপ্রধানরা নতুন ওষুধের ব্যাপারে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করলেই পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৮ মাস থেকে নামিয়ে ২ মাসের ওষুধ বিশ্বব্যাপী চালু করবে। একই সময়ে বাংলাদেশও নতুন ওষুধ পাবে।

সামনের দিনগুলোতে জনগোষ্ঠীর প্রত্যেককে যক্ষ্মার টিকা দিতে পারলে খুব দ্রুত মানুষের মধ্যে যক্ষ্মার জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে উঠবে। এই টিকা শিশু-বৃদ্ধ সবাইকে দেয়া হবে। ফলে শিশুদের আর বিসিজি টিকা নিতে হবে না।

২০৩০ সালের মধ্যে যক্ষ্মায় ৯০ শতাংশ মৃত্যু কমিয়ে আনতে হবে। ২০৪০ সালের মধ্যে যক্ষ্মা আক্রান্তের সংখ্যা প্রতি ১০ লাখে একজনে নামিয়ে আনতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে যক্ষ্মা নির্মূলে এখনো অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে। বিশ্বের ১০টি দেশে যক্ষ্মা রোগী বেশি, এর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ। বাংলাদেশে প্রতি ১২ মিনিটে একজন মানুষ যক্ষ্মায় মারা যায় এবং প্রতি মিনিটে একজন মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়। যক্ষ্মা নিয়ে সমাজে নানা ধরনের কুসংস্কার রয়েছে বলেও যক্ষ্মার সঠিক চিকিৎসা হয় না। সরকারি সূত্র বলছে, যক্ষ্মারোগীদের ৮২ শতাংশ চিকিৎসাসেবা পায়, আর শনাক্ত না হওয়ায় ১৮ শতাংশ চিকিৎসার বাইরে থেকে যায়।

গতকাল কাওরানবাজারের একটি রেস্টুরেন্টে আইএসিআইবির উদ্যোগে অধিকারভিত্তিক ও লিঙ্গ বৈষম্যহীন যক্ষ্মা সেবায় সাংবাদিক সমাজের ভূমিকা শীর্ষক একটি অ্যাডভোকেসি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মো: মোয়াজ্জেম হোসেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি ও ফোরামের সেক্রেটারি মঈনুল হাসান সোহেল।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ধরনের আরও খবর দেখুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর