শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম
ট্রেন থামিয়ে ট্রেন থেকে তেল চুরি, চালকসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা আগামীকালের ‘মার্চ ফর গাজা’য় অংশ নিতে হেফাজতের আহ্বান ট্রেন থামিয়ে ট্রেন থেকে তেল চুরি, চালকসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা ফুলবাড়িয়া ইজারাপাড়া হাফেজিয়া মাদরাসার কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মাদারীপুরে প্রবীণ শিক্ষক সাদা মনের মানুষ আঃ বারেক আকন মাষ্টার চিরনিদ্রায় শায়িত ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে আখাউড়ায়সাংবাদিকদের মানববন্ধন ঈশ্বরগঞ্জে রেকর্ড পরিমাণ পৌর কর আদায় আশুগঞ্জে সাংবাদিকের উপরহামলা, মামলা দায়ের আন্দোলনে বিজয়ের দিন শহীদ হন হতভাগা হাসিবুর আত্রাইয়ে কৃষকদের বিনামূল্যে প্রনোদনার সার-বীজ বিতরণ

জান্তা-আরাকান আর্মির সংঘাত পরিকল্পিত, উদ্দেশ্য রোহিঙ্গাদের নির্মূল করা

অনলাইন ডেক্স
প্রকাশিত হয়েছে : শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী, ২০২৫
জান্তা-আরাকান আর্মির সংঘাত পরিকল্পিত, উদ্দেশ্য রোহিঙ্গাদের নির্মূল করা । সংগৃহীত ছবি

রোহিঙ্গাদের শীর্ষনেতা ডা. মুহাম্মদ জুবাইয়ের বলেছেন, মিয়ানমারের জান্তা সরকার ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সংঘাত প্রকৃতপক্ষে পরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলক। রোহিঙ্গা নির্যাতন নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার শুরুর পর বিশ্বকে বিভ্রান্ত করতে এবং দায় এড়াতে মিলেমিশে তারা সংঘাতের নাটক করছে। মিয়ানমার থেকে মুসলিম রোহিঙ্গাদের চিরতরে নির্মূল করার উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিতভাবে সংঘাত করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এতে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের পথ আরও কঠিন হয়ে পড়ছে।

বুধবার যুগান্তরকে ডা. জুবাইয়ের বলেন, আরাকান আর্মি ও জান্তা বাহিনীর পরিকল্পিত সংঘাত রোহিঙ্গাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। জান্তা বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হলেও কখনোই রোহিঙ্গারা আরাকান আর্মিকে রক্ষাকর্তা হিসাবে মেনে নেয়নি। আরাকান আর্মিও রোহিঙ্গাদের স্বার্থ উপেক্ষা করে সংঘাত চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য জান্তা ও আরাকান আর্মির সংঘাত শুধু দুঃস্বপ্ন নয়, এটি তাদের অস্তিত্বের ওপর সরাসরি আঘাত। সতর্ক করে তিনি বলেন, এ অবস্থায় কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে আমাদের পাশাপাশি বাংলাদেশকেই এর চরম মূল্য দিতে হবে। সময়মতো সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে। ১১ মাসের টানা লড়াইয়ের পর ১১ ডিসেম্বর আরাকান আর্মির কাছে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী পরাজিত হয়েছে। মংডু শহরসহ প্রায় পুরো রাখাইন রাজ্য এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। তবে দুই পক্ষের সংঘাতের কারণে বাংলাদেশের দক্ষিণ সীমান্তের ওপারে রাখাইন রাজ্যের প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা উৎখাত হওয়ার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম বলেন, মিয়ানমারে চলমান সংঘাত এবং এর ফলে রাখাইনের আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে যাওয়া রোহিঙ্গা সংকটকে আরও জটিল করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া এ সংকট সমাধান অসম্ভব। আরাকান আর্মিকে রোহিঙ্গারা বিশ্বাস করে না। কারণ, তারা কখনোই রোহিঙ্গাদের স্বার্থে কাজ করেনি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে কূটনৈতিক তৎপরতা আরও বাড়াতে হবে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আদায় করতে হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক মহলের চাপ সৃষ্টি করতে হবে।

টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সদ্য বদলি হওয়া অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদী ও সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে। রাখাইনের পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত।

অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমার ও আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। সীমান্তে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত। তিনি আরও বলেন, কিছু দুষ্কৃতকারী দালালচক্রের মাধ্যমে সীমান্তে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঘটছে। সোমবার টেকনাফের দমদমিয়াস্থল নাফ নদে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ জেটি ঘাটে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এদিকে বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলির শব্দে স্থানীয় বাসিন্দারা চরম আতঙ্কে আছেন। ঘুমধুম এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধ নুর মোহাম্মদ বলেন, গুলির শব্দে রাতে ঘুমাতে পারি না। মনে হয়, এখনই গোলা এসে আমাদের ওপর পড়বে। কিন্তু কোথায় যাব আমরা। এ দুশ্চিন্তায় ভিটেমাটি ছেড়ে কোথাও যেতে পারি না।

টেকনাফের নাফ নদীর পাড়ের বাসিন্দা নুরুল আবছার বলেন, আমাদের চাষাবাদ ও কাজ সব বন্ধ হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে উপোস থাকতে হবে। কয়েকদিন গোলাগুলির শব্দ কিছুটা কম হলেও আতঙ্ক কাটছে না। পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলির শব্দে আতঙ্ক বাড়ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ধরনের আরও খবর দেখুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর