শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম
ট্রেন থামিয়ে ট্রেন থেকে তেল চুরি, চালকসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা আগামীকালের ‘মার্চ ফর গাজা’য় অংশ নিতে হেফাজতের আহ্বান ট্রেন থামিয়ে ট্রেন থেকে তেল চুরি, চালকসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা ফুলবাড়িয়া ইজারাপাড়া হাফেজিয়া মাদরাসার কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মাদারীপুরে প্রবীণ শিক্ষক সাদা মনের মানুষ আঃ বারেক আকন মাষ্টার চিরনিদ্রায় শায়িত ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে আখাউড়ায়সাংবাদিকদের মানববন্ধন ঈশ্বরগঞ্জে রেকর্ড পরিমাণ পৌর কর আদায় আশুগঞ্জে সাংবাদিকের উপরহামলা, মামলা দায়ের আন্দোলনে বিজয়ের দিন শহীদ হন হতভাগা হাসিবুর আত্রাইয়ে কৃষকদের বিনামূল্যে প্রনোদনার সার-বীজ বিতরণ

ফিলিস্তিনিদের গাজা প্রস্থান : সেনাবাহিনীকে প্রস্তুতির নির্দেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
ফিলিস্তিনিদের গাজা প্রস্থান : সেনাবাহিনীকে প্রস্তুতির নির্দেশ
ফিলিস্তিনিদের গাজা প্রস্থান : সেনাবাহিনীকে প্রস্তুতির নির্দেশ।সংগৃহীত ছবি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের প্রস্তাব দেওয়ার পর ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বৃহস্পতিবার সেনাবাহিনীকে ‘স্বেচ্ছামূলক’ প্রস্থানের প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছেন।

ট্রাম্পের দেওয়া এই ধারণা মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ট্রাম্প প্রশাসন বুধবার কিছু মন্তব্য থেকে পিছিয়ে আসার ইঙ্গিত দেয়। এর কয়েক ঘণ্টা পর ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, তিনি সেনাবাহিনীকে গাজা ছাড়ার ইচ্ছুক ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন।

যুদ্ধবিধ্বস্ত এই অঞ্চল এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সংঘাতের মধ্যে রয়েছে।

কাটজ বলেন, ‘আমি আইডিএফকে (সশস্ত্র বাহিনী) নির্দেশ দিয়েছি, যাতে গাজার বাসিন্দাদের স্বেচ্ছায় প্রস্থান নিশ্চিত করার একটি পরিকল্পনা প্রস্তুত করা হয়।’ গাজাবাসী ‘তাদের গ্রহণ করতে ইচ্ছুক যেকোনো দেশে যেতে পারবে’।

ট্রাম্পের প্রস্তাবকে ‘সাহসী’ বলে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, পরিকল্পনাটি স্থলপথ, সমুদ্রপথ ও আকাশপথে প্রস্থানের ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করবে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে মঙ্গলবার একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প এই প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যা শোনার পর উপস্থিত অনেকেই হতবাক হয়ে যান। ট্রাম্প শপথ নেওয়ার পর তার সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ করা বিদেশি নেতা নেতানিয়াহু।

জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা হলে তা ‘জাতিগত নিধনের শামিল’ হবে। তবে ট্রাম্প দাবি করেছেন, ‘সবাই এই পরিকল্পনা পছন্দ করে’ এবং যুক্তরাষ্ট্র গাজার দখল নেবে।তবে তিনি ২০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে কিভাবে সরানো হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র গাজার দখল নেবে এবং আমরা সেটিকে উন্নত করব। এটি আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।’

পরবর্তীতে ট্রাম্প প্রশাসন কিছুটা নমনীয় অবস্থান নেয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, গাজাবাসীর স্থানান্তর ‘অস্থায়ী’ হবে, আর হোয়াইট হাউস জানায়, মার্কিন সেনা মোতায়েনের কোনো প্রতিশ্রুতি নেই।
নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে ‘ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় বন্ধু’ বলে প্রশংসা করেন এবং ফক্স নিউজকে বলেন, প্রস্তাবটি ‘অসাধারণ’।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি, এটি অবশ্যই পর্যালোচনা করা উচিত এবং বাস্তবায়নের চেষ্টা করা উচিত। কারণ এটি সবার জন্য একটি ভিন্ন ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারে।’

ফিলিস্তিনিরা স্থায়ীভাবে গাজা ছাড়বে পারবে বা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘তারা যেতে পারবে, পরে ফিরে আসতে পারবে, অন্যত্র পুনর্বাসিত হতে পারবে, তারপর ফিরে আসতে পারবে। তবে গাজাকে পুনর্গঠন করতে হবে।’

কাটজ বলেন, ট্রাম্পের পরিকল্পনা ‘গাজার বাসিন্দাদের জন্য ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে, তাদের নতুন জায়গায় পুনর্বাসন সহজতর করতে পারে এবং নিরস্ত্র, হুমকিমুক্ত গাজার জন্য পুনর্গঠন কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে পারে’।

‘গুরুতর লঙ্ঘন’
মঙ্গলবারের ঘোষণার আগেই ট্রাম্প বলেছিলেন, গাজাবাসী মিসর ও জর্দানে চলে যেতে পারে। তবে এই দুটি দেশ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, তারা তাদের ভূখণ্ডে কোনো ফিলিস্তিনিকে পুনর্বাসিত করবে না।

ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন এবং একে ‘আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের আইনসিদ্ধ অধিকার কোনোভাবেই দর-কষাকষির বিষয় নয়।’

এ ছাড়া জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের জন্মগত অধিকার রয়েছে…তাদের নিজ ভূমিতে একজন মানুষের মতো বেঁচে থাকার।’ পাশাপাশি তার মুখপাত্র স্টেফান দুজারিচ বলেন, ‘যেকোনো ধরনের জোরপূর্বক স্থানান্তর জাতিগত নিধনের শামিল।’

২০০৭ সালে গাজায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়া হামাস এই প্রস্তাবকে ‘বর্ণবাদী’ ও ‘আক্রমণাত্মক’ বলে অভিহিত করেছে।

ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে গাজার অধিকাংশ অবকাঠামো—স্কুল, হাসপাতালসহ বেসামরিক কাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বলেছে, ‘গাজা ধ্বংসের মাধ্যমে এটি বসবাসের অনুপযোগী করার একটি পরিকল্পিত ইসরায়েলি নীতি’।

এইচআরডব্লিউর আঞ্চলিক পরিচালক লামা ফাকিহ বলেন, ‘ট্রাম্পের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধাপরাধে সহায়তার পর্যায় থেকে সরাসরি নৃশংসতার অংশীদার করবে।’

সূত্র : এএফপি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ধরনের আরও খবর দেখুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর