বাগেরহাটে ফ্যাসিস্ট সরকারের সাবেক এমপিসহ ৩৫ জনের নামে মামলা

বাগেরহাটের ফকিরহাটে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি, বোমা বিস্ফোরণ ও স্থাপনা ধ্বংসের অভিযোগে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের বাগেরহাট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়, বাগেরহাটের সাবেক পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খানসহ আওয়ামী লীগের ৩৫ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। ওই মামলায় আরও অজ্ঞাত পরিচয়ের ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়।
বাগেরহাট শহরের খারদ্দার এলাকার জনৈক ব্যবসায়ী মো. রফিকুল ইসলাম মিঠু বাদি হয়ে শনিবার জেলার ফকিরহাট থানায় ওই মামলা করেন। ওই মামলায় বাগেরহাটের সাবেক পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মীর শওকত আলী বাদশা, বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ কামরুজ্জামান টুকু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ভুঁইয়া হেমায়েত উদ্দিন, ফকিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্বপন কুমার দাশ, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমান, বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগ সভাপতি সরদার নাসির উদ্দিন, আবুল কালাম আজাদ ওরফে সাহেব মল্লিক, ফকিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা ওহিদুর রহমান বাবু,ইমরুল হাসান,বাগেরহাট সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শিপন মিনা, শেখ হেলাল উদ্দিনের একান্ত সহকারী ফিরোজুল ইসলাম,জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি রেজাউর রহমান মন্টু,সাধারণ সম্পাদক খান আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে বক্কর খা,বাগেরহাট পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বশিরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা শামিম আহসান, শেখ মহিতুর রহমান পল্টন, সৈয়দ বাদশা হোসেন, খান মুজিবুর রহমান,দুলাল আকন, কাদের সরদার, হুমাযুন কবির পলি,সুমন রাহি,ফারুক হোসেন,দোলন মোল্যা,নাহিয়ান সুলতান, মমিনুল হক আকাশ,জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মীর জায়েসী আসরাফী জেমস, ফারুক তালুকদার, বাগেরহাট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি লিয়াকত হোসেন লিটন,নকিব নজু, কচুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদি হাসান বাবু ও নাজমা সরোয়ার।
বাদি তার মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, আসামিগণ ছাত্র-জনতার আন্দোলন নাসাৎ করার উদ্দেশ্যে অন্তর্ঘাতমূলক কার্যক্রম সংঘটনের লক্ষ্যে গত ৪ আগস্ট দুপুর আড়াইটায় বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার কাটাখালী গোলচত্বর সংলগ্ন পাওয়ার ফিলিং স্টেশনের সামনে ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এছাড়াও জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে কয়েকটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়।
এদিকে বাগেরহাটের সাবেক পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খান ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে বড় পদে কর্মরত থাকায় ও বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখাসহ বিভিন্ন অপকর্মের সহযোগিতা করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সময় সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের প্ররোচিত করার লক্ষ্যে ‘একটি ব্যালট একটি বুলেট’সহ বিভিন্ন সময় উস্বানিমূলক বক্তব্য দিয়ে তিনি আসামীদের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে কর্মকাণ্ডে উদ্বুদ্ধ করেছেন।
ফকিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আলমগীর কবির জানান, বাদির লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর শনিবার থানায় মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। ওই মামলায় ৩৫ জনের নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞাত পরিচয়ের ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়। মামলার এজাহার নামীয় আসামি হিসেবে বাগেরহাটের সাবেক পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রবিবার আবুল হাসনাত খানকে বাগেরহাট চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজেস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হবে বলে ওসি জানান।মামলার অপর আসামিদের ধরতে পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।