শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১১:২০ অপরাহ্ন
শিরোনাম
শিবগঞ্জে মিনি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধের পর বিমানের কার্গো সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে বাংলাদেশ চুনারুঘাট উপজেলায় দিনেদুপুরে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা কোটি টাকার ইয়াবা লুট করেছে কক্সবাজারে,নৈপথ্যে ছদ্মবেশী রবিউল! আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের বিরুদ্ধে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা পেলে কঠোর ব্যবস্থা : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা শহীদ মুজাহিদের মা-বাবা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের ইতিহাসে ‘সেরা নির্বাচন’ আয়োজন করবে : প্রধান উপদেষ্টা বাজার পরিষ্কার পরিছন্নতা ও ড্রেনের কাজ চলমান মাদারীপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল থেকে চুরি হয়ে গেছে ৬ মাসের শিশু বাচ্চা স্ত্রীকে হত্যা করে থানায় হাজির স্বামী: পুটি মাছ কাটা নিয়ে দ্বন্দ্বে প্রাণ গেল মৌসুমীর

গড়াই নদীতে ভাসছে চার কুমির, আতঙ্কে ৪ জেলার মানুষ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : বুধবার, ৫ মার্চ, ২০২৫
গড়াই নদীতে ভাসছে চার কুমির, আতঙ্কে ৪ জেলার মানুষ
গড়াই নদীতে ভাসছে চার কুমির, আতঙ্কে ৪ জেলার মানুষ। সংগৃহীত ছবি

ঝিনাইদহ, রাজবাড়ি, কুষ্টিয়া ও মাগুরা জেলার সীমান্ত দিয়ে বয়ে যাওয়া গড়াই নদীতে দেখা যাচ্ছে কুমির। গত প্রায় দেড় মাস ধরে চারটি কুমির নদীতে বিচরণ করায় জেলে ও খেয়া ঘাটের মাঝিসহ নদীপাড়ের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বন্ধ হয়ে পড়েছে নদীতে গোসল করাসহ সব ধরনের কাজ। জানা গেছে, ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের খুলুমবাড়িয়া ও রাজবাড়ি জেলার পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নের কেওয়াগ্রাম ঘাট এলাকায় প্রায় দেড় মাস ধরে দেখা মিলছে কুমিরের। কখনো সকালে, কখনো দুপুরে আবার কখনো সন্ধ্যায় নদীতে ভেসে বেড়াচ্ছে কুমিরগুলো। একটি দুটি নয় বরং ছোট-বড় মিলিয়ে একাধিক। এলাকার শত শত মানুষ এই নদীতে গোসল, জামা-কাপড় পরিস্কার সহ জেলেরা মাছ ধরার কাজ করেন। এখন কুমিড় আতঙ্কে কেউ নদীতে নামতে পারছেন না। বিশেষ করে নদীপাড়ের গ্রাম খুলুমবাড়িয়া, মাদলা শাহবাড়িয়া, গাংকুলা, চরপাড়া নলখোলাসহ এলাকার মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, গড়াই নদীতে ভেসে বেড়ানো বড় আকারের একটি কুমিরের দৈর্ঘ্য ৭-৮ হাত হবে। তার সঙ্গে তিনটি বাচ্চা কুমিরও রয়েছে। এতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কুমিরের ভয়ে কেউ নদীতে নামার সাহস পাচ্ছে না। স্থানীয় তরুণরা রোববার গড়াই নদীর ওপার রাজবাড়ী জেলার কেওয়াগ্রাম এলাকা থেকে নদীতে ড্রোন উড়িয়ে বড় একটি কুমির ভাসতে দেখেছেন। ড্রোন থেকে ধারণ করা কুমিরের ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাসছে। এদিকে কুমির দেখতে নদীপাড়ে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা ভিড় করছে শত শত মানুষ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদীর পাড়ে শত শত মানুষের ভিড়। নদী পাড়ে অপেক্ষা করছেন স্থানী নারী-পুরুষ শিশুসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা দর্শনার্থীরা। কেউ দাঁড়িয়ে, আবার কেউ অধীর আগ্রহে নদীর দিকে তাকিয়ে বসে আছে। সবার চোখে-মুখে একটাই আতঙ্ক এই বুঝি ভেসে উঠল কুমির।’

খুলুমবাড়ি ঘাট এলাকার আদিবাসী সম্প্রদায়ের জিতেন বিশ্বাস বলছেন, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পানি ব্যবহারের একমাত্র মাধ্যম গড়াই নদী। কুমিড়ের লোকালয়ে চলে আসা নিয়ে এখন তারা আতঙ্কে আছেন। তারা আরও জানান, নদীতে যখন পানি বেশি ছিল তখনই কুমির আসে। বর্তমানে নদীর পানি অনেক কমে গেছে তাও কুমিরগুলোকে প্রতিদিন ৩ থেকে ৫ বার ভাসতে দেখা যাচ্ছে।’

কেওয়াগ্রাম এলাকার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব রমজান মন্ডল বলেন, ৪০ বছর পূর্বে গড়াই নদীতে অনেক কুমির ও শিশুক দেখা যেত। এরমাঝে আর দেখা মেলেনি। কিন্তু দেড় মাস ধরে নদীতে নতুন করে কুমির দেখা যাচ্ছে।

খেয়াঘাটের মাঝি চম্বক কুমার দাস বলেন, গত প্রায় দেড় মান ধরে তারা গড়াই নদীতে কুমিরের উপস্থিতির বিষয়টি লক্ষ্য করে আসছেন। একটি বড় কুমির। সঙ্গে তিনটি ছোট কুমির। তিনি জানান, স্থানীয় প্রশাসন কুমিরগুলো নদী থেকে উদ্ধার করতে না পারলে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

রত্না সর্মা নামের এক নারী বলেন, অনেক দিন ধরে কুমির দেখার সংবাদ শুনছি। তাই আজ কুমির দেখতে এসেছি। তবে চোখে দেখতে না পারলেও ড্রোন ক্যামেরায় দেখেছি।

বিল্লাল হোসেন নামের একজন বলেন, কুমির দেখার জন্য আমি আমার ছেলেকে নিয়ে এসেছি। এসেই কুমির দেখতে পেয়েছি। তবে স্থানীয় কিছু উৎসুক যুবক ছোট নৌকা করে নদীর মধ্যে গিয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে কুমিরগুলোর শরীরে আঘাত করছে।’

প্রাণ, পরিবেশ, প্রতিবেশ গবেষক ও সংগঠক সুজন বিপ্লব বলেন, গড়াই নদীতে কয়েকটি কুমিরের আনাগোনাকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে নিরাপদ অভয়াশ্রমে গড়ে না তোলায় আতঙ্কিত সাধারণ মানুষের জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে। জলজ ভারসাম্য রক্ষায় কুমিরের বিচরণ ও প্রজননের নিরাপদ আবাসস্থল সরকারিভাবে ঘোষণা করে স্থানীয় জেলে সম্প্রদায়, নদীপাড়ের কৃষক ও দৈনন্দিন কাজে নদীতে সাধারণ মানুষের প্রবেশের ক্ষেত্রে সচেতনতা তৈরিতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।

ঝিনাইদহ বন বিভাগের জোনাল অফিসার খোন্দকার গিয়াস উদ্দীন মুকুল বলেন, গড়াই নদীতে কুমির দেখার খবরটি জানতে পেরেছি। এটা পরিবেশের জন্য একটা ভালো খবর। নদীতে কুমির থাকবে, মাছ থাকবে, জীববৈচিত্রের আরো অনেক কিছুই থাকবে। এটা আগে ছিল। আমরা আশা করি নদী আগের রূপে ফিরে আসুক।

শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নিগ্ধা দাস জানান, গড়াই নদীতে কুমিরের দেখা যাওয়ার খবরে ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক করা হচ্ছে। কেউ যাতে গভীর পানিতে না যায়। এছাড়া যতদিন কুমির দেখা যায় সেই সময়টুকু যেন তারা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে। তিনি বলেন, কুমিরগুলোকে নদী।’ 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ধরনের আরও খবর দেখুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর