“নারী—ইসলামের আলোয় জ্যোতির্ময় মর্যাদার অমর কাব্য”

ইতিহাসের ঘন কালো পর্দা যখন নারীর অস্তিত্বকে ঢেকে দিচ্ছিল, তখন এক শুভ্র আলো উদিত হয়েছিল মরু প্রান্তরের বুকে। সেই আলো ছিল ইসলাম। আর সেই আলোর পরশেই নারীর জীবনে নামল প্রথমবারের মতো মুক্তির সুবাতাস, মর্যাদার সুবর্ণ সকাল।
যে সময়ে আরবের ধূলিময় সভ্যতা কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দিত, সেই সময়েই ইসলাম নারীর জন্মকে বলে দিল—এ এক আশীর্বাদ, এক করুণা।
সেই সময়েই ঘোষণা এলো কোরআনে—
“তোমরা একে অপরের পরিপূরক; পুরুষ ও নারী—তোমরা উভয়েই মানবতার অর্ধাঙ্গ।”
নারী তখন আর নিছক বস্তু নয়; তিনি হলেন মা, যাঁর পায়ের নিচে জান্নাত; তিনি কন্যা, যাঁর জন্য প্রতিশ্রুতি জান্নাতের সঙ্গীর; তিনি স্ত্রী, যিনি প্রেমে ও সহানুভূতিতে পুরুষের শ্রেষ্ঠ বন্ধু।
ইসলাম নারীকে বেঁধে রাখেনি শৃঙ্খলে, বরং তাকে ছড়াতে দিয়েছে—জ্ঞানচর্চায়, সমাজগঠনে, নৈতিকতার মানচিত্রে।
খাদিজা (রা.) ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতীক হয়ে ছিলেন ইসলামের প্রথম সহায়িকা।
আয়েশা (রা.) ছিলেন ২২০০-এর বেশি হাদীস বর্ণনাকারী, এক জ্ঞানের মিনার।
উম্মে সালামা, উম্মে ওয়ারকা, হাফসা, সুফিয়া—নামগুলো ইতিহাসে খচিত, তারা নারী হয়ে ছিলেন নেতৃত্বের অনন্য উদাহরণ।
ইসলাম কখনোই নারীর জীবনকে ঘরের চার দেয়ালে বন্দি করেনি; বরং দিয়েছে বিকশিত হওয়ার পূর্ণ সুযোগ, দিয়েছে নিরাপত্তা আর সম্মানের সংমিশ্রণ।
আজকের তথাকথিত ‘নারী স্বাধীনতা’র মুখোশপরা সমাজ যেখানে নারীকে পণ্যে রূপান্তর করেছে, ইসলাম সেখানে নারীকে দিয়েছে আত্মমর্যাদা, দিয়েছে আত্মশক্তির ভরসা।
বলা হয়,
“যে জাতি নারীদের মর্যাদা দিতে জানে না, সে জাতি কোনোদিনই উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে পারে না।”
আর ইসলাম সেই জাতিকে গড়তে চেয়েছে, যে জাতির প্রতিটি নারীর চোখে থাকবে আত্মবিশ্বাস, হৃদয়ে থাকবে পবিত্রতা, এবং জীবন জুড়ে থাকবে মর্যাদার দীপ্তি।
নারী—তিনি কবিতার অনুপ্রেরণা, প্রেমের অবয়ব, ত্যাগের প্রতীক, সাহসের দৃপ্ত প্রতিধ্বনি। আর ইসলাম সেই নারীকেই এক মহিমান্বিত রূপ দিয়েছে।
ইসলামে নারী মানেই—চিরন্তন ভালোবাসার মর্যাদা, ঈমানের আলোয় ভাসমান এক নিঃশব্দ কাব্য।
তাকে দেখতে হয় হৃদয়ের চোখে, বুঝতে হয় আত্মার গভীরে।