শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে আকষ্মিক পাহাড়ি ঢলে ভেসে গেছে বাঁধ দোকানঘর

গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আজ ১৮ মে ভোরে শেরপুরের ঝিনাইগাতীর ধানশাইল এলাকার বাগেরভিটা গ্রামে সোমেশ্বরী নদীর পানি হঠাৎ অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর তীরবর্তী একটি দোকান ও সোমেশ্বরী নদীর তিনশো মিটার বাঁধ তীব্র স্রোতের তোড়ে নদী গর্ভে ভেসে গেছে। এতে করে ওই দোকানের প্রায় আড়াই লক্ষাধিক টাকার মালামাল পানিতে ভেসে গেছে। এছাড়া অর্ধশতাধিক ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করে ঘরে জমানো গোলার ধান সহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খাদ্যশস্য।
সরেজমিনে গিয়ে ভুক্তভোগী দোকানদার মো: লিখন মিয়া সাথে কথা বললে তিনি জানান, শেষ রাতে বৃষ্টি হচ্ছিল কিছু বুঝে ওঠার আগেই আকস্মিকভাবে ৫ ফুট উচ্চতার পাহাড়ি ঢল এসে আমার দোকানের সমস্ত মালামাল ভাসিয়ে নিয়ে যায় এবং দোকানের বিল্ডিং ঘরটি ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেল। আমার আড়াই লক্ষ টাকার মালামাল নদীগর্ভে ভেসে গেছে। আমি বাড়িতে থাকায় কোন কিছুই রক্ষা করতে পারিনি। এছাড়া আমার দোকানের পাশ দিয়ে একটি যাতায়াতের রাস্তা ছিল যা নদীগর্ভে ভেসে গেছে। এ রাস্তা দিয়ে ধানশাইল ইউনিয়নের আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের ১০ থেকে ১৫ হাজার লোক নিয়মিত যাতায়াত করেন। এছাড়া এই এলাকায় কয়েকটি স্কুল কলেজ মাদরাসা থাকায় শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করতে পারছেন না। আর মূল কারণ হচ্ছে এই নদীর উপর নির্মানাধীন একটি ব্রিজের নিচে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হওয়ায় পানি রাস্তা ভেঙে দোকানে প্রবেশ করেছে। তিনি দ্রুত ব্রিজের নিচের পানির স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করার দাবী জানান।
ওই এলাকার সুফিয়া বেগম বলেন, গভীর রাতে হঠাৎ ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানির প্রবল তোড়ে সোমেশ্বরী নদীর তীরে প্রায় তিনশো মিটার রাস্তা ভেঙে নদীর সাথে মিশে গেছে। আমাদের বাড়িতে কোমর পর্যন্ত পানি উঠায় ঘরে থাকা আসবাবপত্র ও ধান নষ্ট হয়ে গেছে।
বিষয়টি নিয়ে ওই ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আল আমিনের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, বন্যা সতর্কবার্তা থাকায় আমরা কৃষকদেরকে আগেই সতর্ক করে দিয়েছিলাম দ্রুত ধান কাটার জন্য। যার ফলে এই এলাকার কৃষকেরা প্রায় ৯৫ শতাংশ ধান কাটা সম্পন্ন হওয়ায় তেমন একটা ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।
এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেলের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে সোমেশ্বরী নদীতে নির্মানাধীন ব্রীজের ঠিকাদারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে এবং তারা রাস্তা মেরামত করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।