সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ০৫:৫২ অপরাহ্ন
শিরোনাম
ঝিনাইদহ জেলা শহরের উপর দিয়ে রেল লাইন স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন করে। চাটমোহর থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিস্ফোরক মামলায় আটক- ৩ জামালপুরে ৫ কেজি গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার নাটোরে অনুমোদন বিহীন বিএনপি পার্টি অফিসে সেনাবাহিনীর অভিযান; দেশিয় অস্ত্রসহ ১জন গ্রেফতার বীজ আলুর দর পুনর্বিবেচনার দাবিতেজামালপুরে চাষিদের মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন জুলাই-আগস্টের সব হত্যাকাণ্ডের দায় শেখ হাসিনার : চিফ প্রসিকিউটর ঈদুল আজহায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ২১ মে নাটোরে অবৈধ বালু উত্তোলনে লাখ টাকা জরিমানা ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় ০২ কেজি গাঁজা সহ ০২ জন মাদক কারবারী আটক। বিয়ের দাবিতে অনশনে প্রেমিকা,বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপনে প্রেমিক

চট্টগ্রাম বন্দরে বড় জাহাজ বার্থিং দেওয়া শুরু

শাহ আলী জয়
প্রকাশিত হয়েছে : সোমবার, ২০ মার্চ, ২০২৩

চট্টগ্রাম বন্দরে আনুষ্ঠানিকভাবে বড় জাহাজ বার্থিং দেয়া শুরু হয়েছে। দুটি ট্রায়াল বার্থিং দেওয়ার পর সবকিছু ঠিক থাকায় গতকাল থেকে ২শ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার ড্রাফটের বড় জাহাজ ভিড়ানোর সার্কুলার জারি করা হয়। এই বন্দরে যে বড় জাহাজ বার্থিং দেওয়া যায় এই তথ্য পৃথিবীর সব বন্দর এবং জাহাজ মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পৌঁছে গেছে। প্রতিষ্ঠার ১৩৫ বছর পর বড় জাহাজ ভিড়ানোর কার্যক্রম শুরু হলো। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্যে পরিবহন খরচ কমে যাওয়ার পাশাপাশি গতি আসবে।

সূত্রে জানা যায়, ১৮৮৮ সালের ২৫ এপ্রিল যাত্রা করা চট্টগ্রাম বন্দরের বয়স ইতোমধ্যে ১৩৫ বছর গত হয়েছে। মাত্র দুটি মুরিং টাইপের জেটি নিয়ে যে কার্যক্রম শুরু হয়েছিল দিনে দিনে তা বিশাল কর্মযজ্ঞে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে দেশের আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য তথা শিপিং বাণিজ্যের সিংহভাগ নিয়ন্ত্রণ করে চট্টগ্রাম বন্দর। বছরে চার হাজারের বেশি জাহাজ আনাগোনা করে এই বন্দরে। গত বছর ৩২ লাখ টিইইউএসের বেশি কন্টেনার হ্যান্ডলিং হয়েছে।

বড় জাহাজ বার্থিং দেয়ার সুযোগ থাকলেও দুর্ঘটনা এড়াতে ড্রাফট ও ল্যান্থের ব্যাপারে সতর্ক থেকে জাহাজ বার্থিং অনুমোদন দিত বন্দর কর্তৃপক্ষ। সত্তরের দশকে চট্টগ্রাম বন্দরে ১৬০ মিটার লম্বা ও ৭.৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়ানো হতো। ১৯৮০ সালে এসে প্রথম ১৭০ মিটার লম্বা এবং সাড়ে ৮ মিটার ড্রাফটের জাহাজ বার্থিং দেয়া হয়। ১৯৯০ সালে ড্রাফট না বাড়িয়ে ল্যান্থ বাড়িয়ে ১৮০ মিটার লম্বা এবং সাড়ে ৮ মিটার ড্রাফটের জাহাজ বার্থিং দেয়া শুরু হয়। ১৯৯৫ সালে এসে শুরু হয় ১৮৬ মিটার লম্বা এবং ৯.২ মিটার ড্রাফটের জাহাজ। ২০১৪ সালে বার্থিং দেয়া হয় ১৯০ মিটার লম্বা এবং ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ। প্রায় দশ বছর পর নতুন করে ২০০ মিটার লম্বা এবং ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়ানোর অনুমোদন দেওয়া হলো।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এইচআর ওয়েলিংফোর্ডের সমীক্ষা রিপোর্টের পর বন্দরে বড় জাহাজ বার্থিং দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তাদের রিপোর্ট পাওয়ার পর চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বড় জাহাজ ভিড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। ইতোমধ্যে দুই দফায় ট্রায়াল রান পরিচালিত হয়। প্রথম জাহাজ এমভি কমন এটলাস বার্থিং দেওয়া হয় গত ১৫ জানুয়ারি বন্দরের সিসিটি জেটিতে। দ্বিতীয় জাহাজ এমভি মেঘনা ভিক্টোরি গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বার্থিং দেওয়া হয় পিসিটি। ২০০ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ দুটির ট্রায়াল রান সম্পন্ন হওয়ার পর বন্দর কর্তৃপক্ষ চূড়ান্তভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে বড় জাহাজ ভিড়ানোর সার্কুলার জারি করে। গতকাল বন্দরের মেরিন ডিপার্টমেন্ট থেকে জারি করা ০৯/২০২৩ সার্কুলারমূলে এখন থেকে ২০০ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়ানোর ব্যাপারটি নিশ্চিত করা হয়েছে। এর আগে বন্দরের বোর্ড সভায় বড় জাহাজ ভিড়ানোর ব্যাপারটি অনুমোদিত হয়।

শুরুতে নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনাল (এনসিটি), চিটাগাং কন্টেনার টার্মিনাল এবং ১০, ১১ ও ১২ নম্বর জেটিতে ১০ মিটার ড্রাফট এবং ২শ মিটার লম্বা জাহাজ ভিড়ানোর কার্যক্রম শুরু হবে। বন্দর সূত্র বলেছে, চট্টগ্রাম বন্দরে এতদিন যে ধরনের জাহাজ ভিড়ানো হতো শিপিং বাণিজ্যে সেগুলোকে মাঝারি আকৃতির জাহাজ বলা হয়। ১৯০ মিটার লম্বা বা ৯.৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজে ২২শ থেকে ২৬শ টিইউএএস কন্টেনার বোঝাই করা যায়। ১০ মিটার ড্রাফট ও ২০০শ মিটার লম্বা জাহাজকে বলা হয় বড় জাহাজ। এগুলোতে ৩৮শ টিইইউএস পর্যন্ত কন্টেনার বোঝাই করা যায়। এর ফলে গড়ে ১ হাজার কন্টেনার বাড়তি পণ্য বোঝাই করার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

একইভাবে বাল্ক কার্গোবাহী জাহাজগুলোর ক্ষেত্রেও ১০ হাজার টন বেশি পণ্য পরিবহন করা সম্ভব হবে। কন্টেনার এবং খোলা পণ্য বেশি পরিবহনের সুযোগ তৈরি হওয়ায় আমদানি–রপ্তানি পণ্য পরিবহনে খরচ কমবে। একইভাবে বেশি কন্টেনার এবং পণ্য ব্যবহারের সুযোগ তৈরি হওয়ায় আন্তর্জাতিক শিপিং বাণিজ্যে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব বাড়বে। এতে পণ্য পরিবহনে গতি আসবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, এই উদ্যোগ দেশের আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য তথা কন্টেনার হ্যান্ডলিং কার্যক্রমে প্রত্যাশিত গতি আনবে। পণ্য পরিবহন খরচ সাশ্রয় হবে। ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও উপকৃত হবেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ধরনের আরও খবর দেখুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর