সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি ঘোষনার আগেই প্রতিহতের হুমকি

সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষনার আগেই তা প্রতিহত করার ঘোষনা দিয়েছেন বিএনপির দু-একজন নেতা। পাশাপাশি দলীয় কার্যালয় বাদ দিয়ে যে সমস্ত নেতারা বিভিন্ন জায়গায় বসে বৈঠক করছেন সেখানে হামলা করার কথা বলা হয়েছে। তাদেরকে সাবধান হতেও বলেন তারা। এবিষয়ে বিএনপির নেতাদের দেয়া বক্তব্যের অডিও রেকর্ড ভাইরাল হওয়ায় দলের নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
গত ২১ মার্চ (মঙ্গলবার) রাতে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে বক্তব্য দেন সিনিয়র দু-একজন নেতা। বক্তব্যে তারা বলেন দলীয় কার্যালয় বাদ দিয়ে যারা বিভিন্ন জায়গায় বৈঠক করছেন তারা সাবধান হয়ে যান। যেখানে বৈঠক করছেন সেখানে হামলা হবে। এই কমিটি প্রতিহত করা হবে।
বক্তব্যে বিএনপির এক নেতা বলেন, আমাদের ইমাম একটাই সেটি হলো ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ভাই। দ্বিতীয় কোন ইমাম নাই। যারা দ্বিতীয় ইমামের খোঁজ করছেন তারা সাবধান হয়ে যান। টুকু ভাই দলের জন্য পরিবার নিয়ে জেল খেটেছেন। সুতরাং এখনই ইমাম বদলানো যাবে না। অনেকে বলেন নতুন কমিটি ঘোষনা হবে। অনেকে কমিটিতে আছেন। আপনি তো সহ-সভাপতি হিসেবে নাই। এমন প্রশ্ন করছেন আমাকে অনেকে। আমরা দেখবো কেমন কমিটি আসে। টুকু ভাই ইঙ্গিত দিলো না তার আগে কমিটি হয়ে বাচ্চা হয়ে গেছে।
সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বেশ কিছু দিন হলো সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। পদ পেতে অনেকে কেন্দ্রে দৌড়ঝাঁপ পাড়ছেন। পক্ষে বিপক্ষে কেন্দ্রে অভিযোগ দেয়া হচ্ছে। সামনে আন্দোলন সংগ্রামের কথা বিবেচনায় রেখে যে কোন সময় নতুন কমিটি ঘোষনা হতে পারে।
নতুন এই কমিটিতে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম খানকে সভাপতি, জেলা বিএনপির বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা মোস্তফা জামানকে সাধারন সম্পাদক , এ্যাডভোকেট মোকাদ্দেস আলী, নাজমুল হাসান রানা, আবু সাঈদ সুইটকে সহ-সভাপতি, আসলাম উদ্দিনকে যুগ্ম সম্পাদক করা হতে পারে এমন আশংকা করছেন বক্তব্য দেয়া এসব নেতারা। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই কমিটি অনুমোদন দিতে দলের মহাসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে দলের নেতাকর্মীদের মাঝে আলোচনা রয়েছে।
এরই মাঝে গত ২১ মার্চ (মঙ্গলবার) রাতে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে দু-একজন নেতা কমিটি প্রতিহত করার ঘোষনা দেন এবং দলীয় কার্যালয় বাদ দিয়ে যে সমস্ত নেতারা বিভিন্ন জায়গায় বৈঠক করছেন সেখানে হামলা করার কথা বলেন। তাদের কে সাবধান হতেও বলেন তারা।
এবিষয়ে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক ও বিএনপির কেন্দ্রীয় তাঁতী বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম খান, কমিটিতো হবেই। গত ডিসেম্বরে কমিটি হওয়ার কথা ছিলো। আজীবন তো একটি কমিটি থাকে না। টুকু ভাইয়ের পরামর্শে কমিটি হওয়ার কথা। কারন তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। আমি শুনছি কমিটি হবে। কারা আসবে তা বলতে পারছি না। যারাই আসুক মেনে নেয়া উচিত। যারা প্রতিহত করতে চাই তাদের কাছে প্রশ্ন বর্তমান কমিটি যদি বহাল থাকে তারা কি প্রতিহত করবে। তারেক রহমানের দেয়া কমিটি প্রতিহত করার ক্ষমতা কারো নাই। কাদের নেতৃত্বে কমিটি আসবে তা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিষয়টি ভালো জানেন। তারেক রহমান কমিটি দিলে সেই কমিটি মানতে হবে। যারা মানবেন না তারা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবেন। তাদের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নিবে। কমিটি ঘোষনা না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
জেলা বিএনপি সাধারন সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, গত ২১ মার্চ (মঙ্গলবার) রাতে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে কি আলোচনা হয়েছে তা আমি জানি না। আমি ঐদিন দলীয় কার্যালয়ে ছিলাম না। তবে কমিটি তো হবে। একটা কমিটি সারা জীবন থাকে না। কারা কমিটিতে আসবে তা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভালো বলতে পারবেন।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই সাবেক সংসদ সদস্য রুমানা মাহমুদকে সভাপতি ও সাইদুর রহমান বাচ্চুকে সাধারন সম্পাদক করে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির ৩৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি। পরবর্তীতে পুর্নাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়।