শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৪১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
অপেক্ষা বাড়ল বাংলাদেশের; বিশ্বকাপ নিশ্চিত পাকিস্তানের মাগুরা মেডিকেল কলেজ বন্ধের গুজব উড়িয়ে দিলেন শফিকুল আলম শাহজাদপুরে সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে তিন ব্যবসায়ীকে হত্যার চেষ্টা ও জমি দখলের পায়তারা। নোয়াখালীতে থানা থেকে লুট হওয়া গ্যাস গান উদ্ধার যৌথ বাহিনীর অভিযানে সারাদেশে ৩৯০ জন আটক  বিডিআর হত্যাকাণ্ডবিষয়ক তথ্য চেয়ে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের গণবিজ্ঞপ্তি পার্বত্য উপদেষ্টার সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতসহ চার বিদেশি প্রতিনিধির সাক্ষাৎ  প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে কাতারে যাচ্ছেন চার নারী ক্রীড়াবিদ ব্যারিস্টার কায়সার কামালের উদ্যোগে অটো ও ইজিবাইক চলাচলে টোল ফ্রি সুবিধা জুলাই-মার্চ মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১০.৮৪ শতাংশ

পরপর দুই বারের বেশি সভাপতি হওয়া যাবে না

শাহ আলী জয়
প্রকাশিত হয়েছে : বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৩

স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার বিদ্যমান গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা অনুযায়ী একজন সভাপতি বা চেয়ারম্যান কতবার হতে পারবেন সে বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট উল্লেখ নেই। ফলে একজন সভাপতি টানা এক যুগেরও বেশি সময় ধরে থাকার উদাহরণও আছে।

তবে সংশোধিত নতুন প্রবিধানমালায় টানা দুইবারের বেশি সভাপতি পদে থাকার সুযোগ থাকবে না। দুইবার সভাপতি হওয়ার পর একবার বিরতি দিতে হবে। পরে আবার তিনি সভাপতি হতে পারবেন।

এমন বিধান রেখে চূড়ান্ত করা হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা-২০২৩।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংসদীয় কমিটি, শিক্ষামন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা এই প্রবিধানমালা ইতিমধ্যে চূড়ান্ত করেছে। অতি দ্রুত এই প্রবিধানমালা আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হবে বলে ঢাকা বোর্ড জানিয়েছে।

২০২১ সালে হাইকোর্টের এক অভিমতেও বলা হয়েছে কোনো স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বা চেয়ারম্যান কোনো ব্যক্তি পরপর দুইবারের বেশি হতে পারবেন না। বিষয়টি বোর্ডগুলোর সংশ্লিষ্ট প্রবিধানমালায় অন্তর্ভুক্ত করতে পরামর্শ দিয়েছিল আদালত।

এছাড়া বিদ্যমান ম্যানেজিং কমিটিতে সভাপতি হওয়ার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা কী হবে নির্ধারণ করা নেই। ফলে দেশের অনেক প্রতিষ্ঠানে স্বশিক্ষিতরাও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এতে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে গিয়ে অধ্যক্ষ/প্রধান শিক্ষকরা বিড়ম্বনার শিকার হন। এ কারণে এবার ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। প্রস্তাবিত প্রবিধানমালায় সভাপতির জন্য সর্বনিম্ন এইচএসসি পাশ নির্ধারণ করা হচ্ছে। আর সরকারি কর্মকর্তাদের সভাপতি হতে হলে নিজ নিজ দপ্তর থেকে অনাপত্তিপত্র নিতে হবে। একজন ব্যক্তি দুটি মাধ্যমিক ও দুটি কলেজ মিলিয়ে সর্বোচ্চ চারটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হতে পারবেন।

এছাড়া সংশোধিত এই প্রবিধানমালায় বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষ কমিটি গঠনের এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে শিক্ষা বোর্ডগুলোকে। বর্তমানে বিশেষ পরিস্থিতি ‘এডহক কমিটি’ গঠনের এখতিয়ার রয়েছে শিক্ষা বোর্ডগুলোর। এই এডহক কমিটির মেয়াদ ছয় মাস। এই সময়ের মধ্যে রুটিন কাজ ছাড়া কোনো ধরনের নিয়োগ বা বড় ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না এডহক কমিটি। এই সময়ের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ নিয়মিত কমিটি গঠন করতে হয়। নিয়মিত কমিটির মেয়াদ দুই বছর।

সংশোধিত প্রবিধানমালা অনুমোদন হলে বিশেষ কমিটি গঠন করা যাবে। এই কমিটি নিয়মিত কমিটির মতোই সব দায়িত্ব পালন করতে পারবে। দুই বছরের জন্য এই কমিটি দায়িত্ব পালন করতে পারবে। যেসব প্রতিষ্ঠানে কমিটি নিয়ে দীর্ঘদিন দ্বন্দ্ব চলছে সেসব প্রতিষ্ঠানে এই বিশেষ কমিটি গঠন করা হবে বলে বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বিদ্যমান পরিচালনা কমিটিতে প্রবিধানমালা অনুযায়ী ম্যানেজিং কমিটি ও গভর্নিং বডির ১৬টি দায়িত্ব পালনে বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু গভর্নিং বডির সভাপতি এসব দায়িত্বের বাইরে প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় অযাচিত হস্তক্ষেপ করে। সম্প্রতি রাজধানীর একটি নামি প্রতিষ্ঠান মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি নোটিশ দিয়ে স্কুল পাঁচ দিন বন্ধ ঘোষণা করেন। কিন্তু সভাপতির এমন ছুটি দেওয়ার এখতিয়ার নেই। ফলে কেন এখতিয়ার বহির্ভূত কাজ করল এ বিষয়ে সভাপতিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। নোটিশের জবাবে ঐ সভাপতি ‘না জেনেই এমনটি করেছেন’ বলে জানান এবং এ কাজের জন্য বোর্ডের কাছে ‘ক্ষমা’ও চেয়েছেন। শিক্ষকরা বলছেন, কমিটির সভাপতি যদি অদক্ষ বা তার দায়িত্ব সম্পর্কে না জানেন তাহলে এমনটি হওয়া স্বাভাবিক। তাই কমিটিতে সভাপতির জন্য আরো শর্ত আরোপ করা উচিত।

প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির যোগ্যতা স্নাতক বা ডিগ্রি পাশ বাধ্যতামূলক। অথচ মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে বিদ্যমান প্রবিধানমালায় যোগ্যতার উল্লেখ নেই। সংশোধিত প্রস্তাবিত প্রবিধানমালায় এইচএসসি করার প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে এইচএসসি নয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পরিচালনা কমিটিতে সভাপতির শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক হওয়া উচিত। শিক্ষকরা বলছেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চেয়ে মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠানের সভাপতির যোগ্যতা অবশ্যই ভিন্নতর হবে। অনার্স-মাস্টার্স কলেজগুলোর গভর্নিং বডির সভাপতির যোগ্যতা তো আরো বেশি হওয়া জরুরি।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, প্রবিধানমালার সংশোধন কাজ শেষ হয়েছে। এখন এটি আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হবে। এর পর এই প্রবিধানমালার সরকারি আদেশ জারি হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ধরনের আরও খবর দেখুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর