রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
শিবগঞ্জে মিনি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধের পর বিমানের কার্গো সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে বাংলাদেশ চুনারুঘাট উপজেলায় দিনেদুপুরে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা কোটি টাকার ইয়াবা লুট করেছে কক্সবাজারে,নৈপথ্যে ছদ্মবেশী রবিউল! আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের বিরুদ্ধে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা পেলে কঠোর ব্যবস্থা : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা শহীদ মুজাহিদের মা-বাবা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের ইতিহাসে ‘সেরা নির্বাচন’ আয়োজন করবে : প্রধান উপদেষ্টা বাজার পরিষ্কার পরিছন্নতা ও ড্রেনের কাজ চলমান মাদারীপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল থেকে চুরি হয়ে গেছে ৬ মাসের শিশু বাচ্চা স্ত্রীকে হত্যা করে থানায় হাজির স্বামী: পুটি মাছ কাটা নিয়ে দ্বন্দ্বে প্রাণ গেল মৌসুমীর

ভারত-চীনের পর জাপানের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্কে যাচ্ছে বাংলাদেশ

শাহ আলী জয়
প্রকাশিত হয়েছে : মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৩

ভারত ও চীনের পর জাপানের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২৫ থেকে ২৮ এপ্রিল টোকিও সফরের সময়ে যৌথ বিবৃতিতে এই ঘোষণা আসতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাপানের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে আরও  ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করার সুযোগ তৈরি হবে। চীন,ভারত ও পশ্চিমা বিশ্বের মাঝে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান বজায় রাখার ক্ষেত্রেও এটি সহায়ক হবে।

এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে জাপানের  কৌশলগত সম্পর্ক শুধুমাত্র দুই দেশের জন্য প্রযোজ্য নয়। এর মাধ্যমে জাপানের অন্যান্য যে বন্ধুরাষ্ট্র আছে, তাদের সঙ্গেও আরও নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করা সহজ হবে বাংলাদেশের জন্য।’

তিনি বলেন, ‘জাপানের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্কের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মাত্রা আছে। বর্তমান পরিবর্তনশীল ইন্দো-প্যাসিফিক রাজনীতিতে এটি বিশেষ ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে, যা বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ অর্জনে সহায়ক হবে বলে আমি মনে করি।’

অপরদিকে টোকিও ও বেইজিংয়ের মধ্যে বৈরী সম্পর্ক না থাকলেও চীনের প্রভাব বলয়ের সঙ্গে যুক্ত নয় জাপান। এর ফলে বিভিন্ন দেশের মধ্যে এ সম্পর্ক  ভারসাম্য রক্ষা করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে বলে মনে করেন তিনি।

কৌশলগত সম্পর্ক কী

সাধারণভাবে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ মাত্রার বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা থাকলে দুই দেশ একে অপরের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপন করে থাকে। সাধারণ সম্পর্কের থেকে বেশি গভীর কৌশলগত সম্পর্কে সামরিক জোট গঠনের বিষয়টি নাও থাকতে পারে।

কৌশলগত সম্পর্কে চারটি উপাদান বিদ্যমান থাকে, সেগুলো হচ্ছে— প্রথমত, কৌশলগত সম্পর্কের মাধ্যমে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য যে কাঠামো দরকার, সেটির ঘোষণা সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতির মাধ্যমে করা হয়।

দ্বিতীয়ত, দুই দেশের মধ্যে গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান রাখা এবং আরও গভীরতর করার জন্য ক্রমাগত উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক সফর হতে হবে। তৃতীয়ত, কৌশলগত সম্পর্কের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করার ওপর জোর দেওয়া হয়। চতুর্থত, অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও গভীর হবে ও ব্যাপ্তি বড় থাকবে।

এছাড়া কৌশলগত সম্পর্কের ক্ষেত্রে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে দুই দেশের খাপ খাইয়ে নেওয়ার নমনীয়তা থাকতে হবে। কৌশলগত সম্পর্কের লক্ষ্য হচ্ছে— দুই দেশের মূল জাতীয় স্বার্থ দীর্ঘমেয়াদে যেন একই সুরে বাঁধা থাকে।

জাপানের সঙ্গে সম্পর্ক

বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বর্তমানে সামগ্রিক অংশীদারত্ব (কমপ্রিহেনসিভ পার্টনারশিপ) সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। এছাড়া ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে জাপানের ভিশন ‘বিগ-বি’-তে যুক্ত রয়েছে বাংলাদেশ।

এ বিষয়ে মো. শহীদুল হক বলেন, ‘২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টোকিও সফরের সময় থেকে যৌথ বিবৃতিতে সামগ্রিক অংশীদারত্বের বিষয়টি ঘোষণা করা হয়। তখন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ বিগ-বি-এর সঙ্গে যুক্ত।’

জাপানের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্কে উন্নীত হওয়ার বিষয়টি ২০১৪ সালের ধারাবাহিকতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সম্পর্ককে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম এবং উভয় পক্ষের জাতীয় স্বার্থ বিদ্যমান থাকতে হয়। এছাড়া কোনও সময়ে এই সম্পর্ককে উন্নীত করা হচ্ছে সেটিও গুরুত্বপূর্ণ।’

বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী এবং দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পরেই দেশটির অবস্থান। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকে এখন দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার কারণে মানবিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের মর্যাদা এখন আগের যেকোনও সময়ের চেয়ে বেশি।

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেন, ‘এসব কারণে বাংলাদেশের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে এবং জাপানের মতো উন্নত বিশ্বের দেশকে আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।’ জাপানের মতো দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় করার মাধ্যমে শুধুমাত্র ওই দেশ নয়, বরং টোকিও’র অন্যান্য যে বন্ধু দেশ আছে, তাদের সঙ্গে ঢাকার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধি করার সুযোগ তৈরি হবে বলে তিনি জানান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ধরনের আরও খবর দেখুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর