শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম
শিবগঞ্জে মিনি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধের পর বিমানের কার্গো সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে বাংলাদেশ চুনারুঘাট উপজেলায় দিনেদুপুরে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা কোটি টাকার ইয়াবা লুট করেছে কক্সবাজারে,নৈপথ্যে ছদ্মবেশী রবিউল! আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের বিরুদ্ধে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা পেলে কঠোর ব্যবস্থা : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা শহীদ মুজাহিদের মা-বাবা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের ইতিহাসে ‘সেরা নির্বাচন’ আয়োজন করবে : প্রধান উপদেষ্টা বাজার পরিষ্কার পরিছন্নতা ও ড্রেনের কাজ চলমান মাদারীপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল থেকে চুরি হয়ে গেছে ৬ মাসের শিশু বাচ্চা স্ত্রীকে হত্যা করে থানায় হাজির স্বামী: পুটি মাছ কাটা নিয়ে দ্বন্দ্বে প্রাণ গেল মৌসুমীর

মাতারবাড়িতে দেশের ইতিহাসে বৃহত্তম জাহাজ ভিড়ল

শাহ আলী জয়
প্রকাশিত হয়েছে : বুধবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৩

মহেশখালীর মাতারবাড়িতে ভিড়েছে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাহাজ। ইন্দোনেশিয়া থেকে এ জাহাজে আনা হয়েছে ৬৩ হাজার মেট্রিক টন কয়লা। নির্মাণাধীন গভীর সমুদ্র বন্দর চ্যানেলে আসা পানামার পতাকাবাহী প্রায় ১৩ মিটার ড্রাফটের ‘এমভি অউসো মারো’ নামের জাপানি জাহাজটি ২২৯ মিটার দৈর্ঘ্যরে। এর মাধ্যমে দেশে এলো কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির জন্য কাঁচামালের প্রথম চালান। উল্লেখ্য, এ সমুদ্র বন্দর পরিপূর্ণ কার্যক্ষমতা পেতে কমপক্ষে আরও তিনবছর সময় নেবে। কিন্তু তার আগেই ৮০ হাজার টন ধারণক্ষমতার এ জাহাজ ভিড়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে নতুন দিগন্তের সূচনা করে।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানায়, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে জাহাজটিকে কোল জেটিতে নিয়ে আসা হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমডোর ফজলুর রহমান, ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলম, ক্যাপ্টেন জহির, মেইন পাইলট ক্যাপ্টেন কামরুল এবং কো পাইলট ক্যাপ্টেন শামস জাহাজটিকে বহির্নোঙ্গর থেকে জেটিতে আনার সময় পাইলটেস টিমে ছিলেন ।
মহেশখালীর মাতারবাড়িতে হতে যাচ্ছে বহুল প্রত্যাশার গভীর সমুদ্র বন্দর। বন্দর নির্মাণে এ কাজের যাত্রা শুরু হয় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য গড়া চ্যানেলের মাধ্যমে। মূলত গভীর সমুদ্র বন্দর চ্যানেল হবে কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য নির্মিত চ্যানেলের সম্প্রসারণ।
জাপানের বিগ বি ধারণার আওতায় মহেশখালীতে গভীর সমুদ্র বন্দর ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণসহ অনেকগুলো প্রকল্পের মাধ্যমে কক্সবাজারসহ দক্ষিণ চট্টগ্রাম হতে যাচ্ছে বাণিজ্যিক হাব। এ পর্যন্ত প্রকল্পের পণ্যবাহী ১১৩টি জাহাজ মহেশখালীতে ভিড়েছে। তবে মঙ্গলবার যে জাহাজটি ভিড়ল তা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা বহনকারী প্রথম ভেসেল। সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে এটি বহির্নোঙ্গরে এসে পৌঁছে।
বন্দর সূত্র জানায়, ইন্দোনেশিয়া থেকে ৬৩ হাজার মেট্রিক টন কয়লা বহনকারী এ জাহাজের দৈর্ঘ্য ২২৯ মিটার এবং প্রস্ত ১২ দশমিক ৫ মিটার। এর আগে এতবড় জাহাজ বাংলাদেশে আর আসেনি। ১৪ দশমিক ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৩৫০ মিটার চওড়া নতুন চ্যানেলের মধ্য দিয়ে জাহাজটিকে আনা হয়।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান মঙ্গলবার এ প্রসঙ্গে বলেন, ২৫ এপ্রিল ‘চট্টগ্রাম বন্দর দিবস।’ বিশেষ এ দিনেই ভিড়েছে ১৩ মিটার ড্রাফটের এই জাহাজটি। যে জাহাজটি এসেছে তা ৮০ হাজার মেট্রিক টন পর্যন্ত পণ্য ধারণ করতে পারে। গভীর সমুদ্র বন্দর চ্যানেলের ড্রাফট হবে ১৬ মিটার। অর্থাৎ আরও বড় জাহাজ এ বন্দরে ভিড়তে পারবে। ডিপ সি পোর্ট নির্মিত হয়ে গেলে বাংলাদেশের কোনো জাহাজকে আর বিদেশী ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দরের ওপর নির্ভর করতে হবে না। বরং মাতারবাড়িই হবে ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দর। ভারত, মিয়ানমার, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের বন্দরগুলো মাতারবাড়িকে ব্যবহার করতে পারবে। মাতারবাড়িকে কেন্দ্র করে এ অঞ্চল হবে অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের হাব।
কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিপিজিসিবিএল) অধীনে মাতারবাড়িতে এই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছে জাপানের একটি প্রতিষ্ঠান। এ প্রকল্পের আওতায় ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি স্টিম টারবাইন, সার্কুলেটিং কুলিং ওয়াটার স্টেশন, ২৭৫ মিটার উচ্চতার চিমনি ও পানিশোধন ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়েছে। গভীর সমুদ্র বন্দর প্রকল্পের আওতায় হচ্ছে দীর্ঘ মাল্টিপারপাস জেটি।
উল্লেখ্য, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরকে বিবেচনা করা হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতির গেইম চেঞ্জার হিসেবে। এ বন্দরের সঙ্গে বদলে যাচ্ছে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত বিরাট অঞ্চল। কর্ণফুলী টানেল হয়ে সাগরের তীর ঘেঁষে মেরিন ড্রাইভ চলে যাবে কক্সবাজার। নির্মাণ করা হচ্ছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন। আনোয়ারাসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামে গড়ে উঠছে একাধিক অর্থনৈতিক অঞ্চল। এছাড়া জাপান সরকার এ অঞ্চলে বিশাল বিনিয়োগের মাধ্যমে শিল্প কারখানা স্থাপন করে সেখানে উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি করতে চায় ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি অঙ্গরাজ্যে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ধরনের আরও খবর দেখুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর