আত্রাই নদীর বুকজুড়ে এখন বোরোধানের চাষ

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার সাহেবগঞ্জ থেকে শুরু করে বিশা পারবিশা পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় আত্রাই নদীর বুক জুড়ে বোরো ধানের চাষ হচ্ছে।এক সময়ের খরস্রোতা আত্রাই নদী এখন ফসলের মাঠে রুপান্তরিত হয়েছে।
একদা এই ঐতিহাসিক আত্রাই নদী বন্দরে চলতো বড় বড় লঞ্চ, পাল তোলা নৌকা।এমনকি এই নদীর বুকে সি-প্লেন নামতো।
ইতিহাস বলে, আত্রাই নদী দিয়ে অনেক নবাব, বাদশা, উজির-নাজির নৌকায় ভ্রমন করেছেন।নবাব আলীবর্দী খাঁর নৌ-বহর আত্রাই নদী দিয়ে এ এলাকায় এসেছিলেন।যার প্রমান স্বরুপ আত্রাই উপজেলার নবাবের তাম্বু গ্রাম।নৌ-ভ্রমনের এক পর্যায়ে নবাব এখানে নদীর ধারে তাঁবু খাটিয়ে কিছু সময়ের জন্য বিশ্রাম নিয়েছিলেন।এ কারনেই এ গ্রামের নামকরন হয়েছে ‘নবাবের তাম্বু’।
এ নদী এক সময় কত শহর-বন্দর- গ্রাম ধংস করেছে, কত মানুষকে হাসিয়েছে-কাঁদিয়েছে কালে কালে ইতিহাস তার হিসাব রাখতে সমর্থ হয়নি।এ সবই এখন অতীত।
আত্রাই উপজেলার সাহেবগঞ্জ নামক স্থানে অপরিকল্পিতভাবে স্লুইসগেট তৈরী করার কারনে প্রমত্তা এই আত্রাই নদী মরে গেছে এবং নদীটি এখন খালে পরিণত হয়েছে।ফলে নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যবসা ক্ষেত্রে বিপর্যয় নেমে আসে।এক সময়ের ইতিহাস খ্যাত আত্রাই নদীর সুস্বাদু দেশী মাছও হারিয়ে গেছে।মৎস্য চাষীরা বেকায়দায়।
যুগ যুগ ধরে নদীর বুকে পলি জমে নদীটি প্রায় ভরাট হয়ে গেছে।অথচ এই আত্রাই নদী বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের দীর্ঘতম নদী।এখন প্রতি শুস্ক মওসুমে নদীর বুকে এলাকার কৃষকরা ধান চাষ করছে।আত্রাই নদীর বুক এখন সবুজের সমারোহ।
বিপ্রবোয়লিয়া গ্রামের কৃষক জিল্লুর রহমান, খোর্দ্দবোয়ালিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ বলেন, আত্রাই নদীতে প্রতি শুস্ক মওসুমে পানি থাকে না, নদীর বুকে চর জেগে ওঠে, প্রতি বছর যাবত আমরা বোরা ধানের ফসল করি, নদীর পলি মাটিতে ফসল খুব ভালো হয়।