চরশেরপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সেলিমের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ: বি এন পি নেতার বিবৃতি

শেরপুর সদর থানাধীন চরশেরপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান সেলিমকে ঘিরে নানা বিতর্ক ও ক্ষোভের মুখে পড়েছেন স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। সম্প্রতি ইউনিয়নের একজন প্রভাবশালী বিএনপি নেতা গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে চেয়ারম্যান সেলিমের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বিশ্বাস ভঙ্গ, সুবিধাবাদিতা ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলেছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “দীর্ঘ ২৫ বছর পর চরশেরপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রতিনিধি নির্বাচন নিশ্চিত করতে আমি মূল ভূমিকা পালন করি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় বিএনপির পক্ষ থেকে কেউ প্রার্থী হননি। আমি নিজেই পনির নামক একজনকে পেছনে রেখে সেলিমকে একক প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করাই এবং বিএনপির সকল নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনে কাজ করি। আমার প্রচেষ্টাতেই তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হন।”
তবে নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে চেয়ারম্যান সেলিম তার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে আওয়ামী লীগে যোগ দেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। “আমাদের সঙ্গে তার চুক্তি ছিল, তিনি স্বতন্ত্র থেকে জনগণের সেবা করবেন। অথচ শপথ নেয়ার পরপরই তিনি সরাসরি ফ্যাসিস্ট ছানু-রোমানের ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন এবং নিজেকে আওয়ামী লীগের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন,”—বলেন ওই বিএনপি নেতা।
তিনি আরও দাবি করেন, “সেলিমের অতীত রাজনৈতিক পরিচিতি নেই বললেই চলে। আজ তার অবস্থান, প্রচার এবং পদলাভের পেছনে যে টাকা ও শক্তির প্রভাব রয়েছে, তা প্রকাশ্য। এমনকি যারা নির্বাচন পরবর্তী সময় তার বাড়ি ভাঙচুরে জড়িত ছিল, তারাই এখন প্রশাসনের সহায়তায় তাকে পুনরায় ক্ষমতায় বসিয়েছে।”
অভিযোগে বলা হয়, “চেয়ারম্যান সেলিম সম্প্রতি এক জনসমক্ষে দম্ভ করে বলেছেন, ‘নদীর পানি শুকাতে পারে, আমার টাকা শেষ হবে না।’ যা তার ক্ষমতার অপব্যবহার ও অর্থনৈতিক উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন তোলে।”
বিবৃতিতে আরো দাবি করা হয়, সেলিম চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের সদস্যরা ছাত্রদের উপর লাঠি হাতে হামলা চালিয়েছেন এবং অন্য ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে যোগসাজশে এক ধরনের ‘ক্ষমতার সিন্ডিকেট’ গড়ে তুলেছেন।
চরশেরপুর ইউনিয়নে যেকোনো সময় বড় ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “যদি কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে, তার দায় সেলিম চেয়ারম্যান ও তার ঘনিষ্ঠ মহলের উপর বর্তাবে।”
পরিশেষে তিনি জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান, চেয়ারম্যান সেলিমের সম্পদের উৎস ও রাজনৈতিক অনৈতিক কার্যক্রমের তদন্তে যেন তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।