ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলের নৃশংস হামলার প্রতিবাদে ইবিতে মানববন্ধন

যুদ্ধবিরতির পর সম্প্রতি ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নৃশংস হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে চারশ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। ইসরায়েলের এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বুধবার (১৯ মার্চ) বেলা ১২টায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনে এই গণহত্যা বন্ধে মুসলিম বিশ্বের নেতৃবৃন্দের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ ও সম্পর্ক ছিন্ন করার মতো পদক্ষেপ গ্রহণেরও আহ্বান জানান তারা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, আজকে আমরা মুসলিম হিসেবে অনেক বেশি লজ্জিত। ফিলিস্তিনে আমাদের মুসলিম ভাই, বোন, শিশুদের নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে। অথচ আমরা মুসলমান হিসেবে তাদের পাশে দাঁড়াতে পারছি না। যে মুসলমানদের এক দেহের মতো থাকার কথা আজ তারা বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত। মুসলমানদের এমন অবস্থা হয়েছে গাজায় হাজার হাজার মানুষ মারা যাওয়ার পরও তাদের বিবেকের দুয়ারে কড়া নড়ছে না। মুসলমানদের আর বিভক্ত থাকার দিন নেই। আমরা যত বেশি বিভক্ত হবো আমাদের বিরোধী শক্তি তত বেশি শক্তিশালী হবে, আমাদের উপর নির্যাতনের স্টিম রোলার চালাবে। আর পুরো মুসলিম জাতি যদি এক হয়ে হুংকার দেওয়া যায়, তাহলে শুধু নেতানিয়াহু নয় পুরো ইসলাম বিরোধী শক্তির মসনদ ভেঙে যাবে। বিশ্বের মুসলিম নেতৃবৃন্দের কাছে আহবান জানাই, আপনারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ফিলিস্তিনের মানুষের পাশে দাঁড়ান এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা পালন করুন।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, আমরা বলি বিগত ১৬ বছর আমরা ফ্যাসিজমের মধ্যে ছিলাম। ৫ আগস্ট মুক্ত হয়েছি। কিন্তু যেখানে গাজার মুসলমানেরা ইফতার করতে পারেনা, সেহরি করতে পারেনা, আজানের ধ্বনি শুনতে পারেনা। সেখানে যদি আমরা নিজেদের স্বাধীন মনে করি তাহলে সেটা আমাদের মুসলমান পরিচয় এর সাথে গাদ্দারি হবে। সুতরাং পুরো বিশ্ব বিবেককে এবং যারা নিজেদেরকে মানবতার পতাকাবাহী হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন তাদেরকে আহ্বান জানাবো আপনারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে গাজার মানুষদের পাশে দাঁড়ান।
জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং ওআইসিকে উদ্দেশ্য করে শিক্ষার্থীরা বলেন, যারা মানবতার কথা বলে তারাই আজ বর্বরতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ইজরায়েলি বাহিনীর বর্বর আক্রমণে হাজার হাজার ফিলিস্তিনী প্রতিনিয়ত প্রাণ হারাচ্ছেন। অথচ জাতিসংঘসহ মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে এ বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। তারা মানবাধিকারের কথা বলে শুধু মুখে ফেনা তোলেন, অথচ কার্যক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা নেই। আর ওআইসি শব্দটা মুখে নিতেও আজ আমাদের লজ্জা হয়। ওআইসি গঠিত হয়েছিল মুসলামনদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। কিন্তু আজ ফিলিস্তিনের মুসলমানদের উপর হামলার পরও তারা নিশ্চুপ হয়ে বসে আছে। জাতিসংঘ, ওআইসিসহ এসব তথাকথিত মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে বলতে চাই, আপনারা যদি আপনাদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য ঠিক রাখতে না পারেন তাহলে কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।
হারুন অর রশিদ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
মোবা:০১৯৬০৭৮১৮৩১
তারিখ:১৯-০৩-২৪