আমতলীতে শিক্ষক ও ছাত্রকে মারধর করলেন অভিভাবক

বরগুনার আমতলীতে শিক্ষক ও ছাত্রকে মারধোর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক অভিভাবকের বিরুদ্ধে।
আমতলী থানায় দেয়া অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,
আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ কমিটির সদস্য মোঃ জাহাঙ্গির হাওলাদারের ভাইয়ের ছেলে মোঃ রাকিব উত্তর সোনাখালী স্কুল এন্ড কলেজে দশম শ্রেনীতে লেখাপড়া করে। মঙ্গলবার বিকেলে বিদ্যালয় ছুটির আগে একই শ্রেনীর ছাত্র রাকিব ও আশিক গাজীর মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জের ধরে জাহাঙ্গির হাওলাদার বিদ্যালয়ের শ্রেনী কক্ষে ঢুকে আশিক গাজীকে মারধর করে। তখন শিক্ষক হামিদুর রহমান প্রতিবাদ করলে তাকেও মারধর করেছে। শিক্ষক ও ছাত্রকে মারধর করে জাহাঙ্গির হাওলাদার বিদ্যালয় থেকে চলে যায়। পরে বিদ্যালয় শিক্ষকরা ছাত্র ও শিক্ষককে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে।
খবর পেয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম ওই জাহাঙ্গির হাওলাদারকে আটক করতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে আটক করে। এ ঘটনায় বুধবার সকালে আশিকের বাবা বাবুল গাজী থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়।
বুধবার দুপুরে পুলিশ জাহাঙ্গির হাওলাদারকে ছেড়ে দিয়েছে। এ ঘটনার বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
শিক্ষক হামিদুর রহমানের বাড়ী শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার কালিনগর গ্রামে। অভিযোগ রয়েছে শিক্ষক হামিদুর রহমানকে মামলা না করতে চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে। উল্লেখ গত এক বছর আগে মেহেদী হাসান নামের এক ছাত্রকে জাহাঙ্গির মারধর করে কচুরীপানার মধ্যে ফেলে রাখে। ওই ঘটনায় মামলা চলমান রয়েছে। এ মামলায় তিনি বেশ কয়েকদিন জেল হাজতে ছিলেন।
ছাত্র আশিক গাজী বলেন, শ্রেনী কক্ষে পড়া নিয়ে রাকিবের সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনায় রাকিবের চাচা জাহাঙ্গির হাওলাদার এসে শ্রেনী কক্ষে প্রবেশ করে আমাকে মারধর করে। হামিদুর রহমান স্যার এর প্রতিবাদ করলে তাকেও মারধর করেছে। আমি এ ঘটনার শাস্তি দাবী করছি।
আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক ফারুক হোসেন মৃধা বলেন, বিদ্যালয় শিক্ষক, ছাত্রকে মারধর করবে তা মেনে নেয়া যায়না। এ ঘটনায় কঠোর শাস্তিদাবী করছি।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হামিদুর রহমান বলেন. শ্রেনী কক্ষে প্রবেশ করে ছাত্র আশিক গাজীকে জাহাঙ্গির হাওলাদার মারধর করে। আমি এর প্রতিবাদ করলে আমাকেও মারধর করেছে।
জাহাঙ্গির হাওলাদার বলেন, বিষয়টির সমাধান হয়ে গেছে। কিভাবে সমাধান হলো এমন প্রশ্নের জবাব দেননি তিনি?
বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মোঃ ইউসুফ আলী বলেন, ছাত্র অপরাধ করলে আমার কাছে বিচার দিতে পারতো কিন্তু জাহাঙ্গির হাওলাদার শ্রেনী কক্ষে প্রবেশ করে ছাত্র ও শিক্ষককে মারধর করেছে। এ ঘটনায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান বলেন, আহত শিক্ষককের মাথায় আঘাতের চিহৃ রয়েছে। তাকে যথাযথ চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, উভয় পক্ষ আপোষ মিমাংসাপত্র দেওয়ায় জাহাঙ্গির হাওলাদার ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, ছাত্র ও শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।