শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম
ট্রেন থামিয়ে ট্রেন থেকে তেল চুরি, চালকসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা আগামীকালের ‘মার্চ ফর গাজা’য় অংশ নিতে হেফাজতের আহ্বান ট্রেন থামিয়ে ট্রেন থেকে তেল চুরি, চালকসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা ফুলবাড়িয়া ইজারাপাড়া হাফেজিয়া মাদরাসার কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মাদারীপুরে প্রবীণ শিক্ষক সাদা মনের মানুষ আঃ বারেক আকন মাষ্টার চিরনিদ্রায় শায়িত ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে আখাউড়ায়সাংবাদিকদের মানববন্ধন ঈশ্বরগঞ্জে রেকর্ড পরিমাণ পৌর কর আদায় আশুগঞ্জে সাংবাদিকের উপরহামলা, মামলা দায়ের আন্দোলনে বিজয়ের দিন শহীদ হন হতভাগা হাসিবুর আত্রাইয়ে কৃষকদের বিনামূল্যে প্রনোদনার সার-বীজ বিতরণ

মেট্রোরেলের কার্ডসংকট: একক যাত্রায় চালু হচ্ছে কাগজের টিকিট

অনলাইন ডেক্স
প্রকাশিত হয়েছে : বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪
মেট্রোরেলের কার্ডসংকট: একক যাত্রায় চালু হচ্ছে কাগজের টিকিট

মেট্রোরেলের ভাড়া পরিশোধের কার্ডের সংকট ভোগান্তি সৃষ্টি করছে যাত্রীদের। একক যাত্রার কার্ড না থাকায় অনেক স্টেশনে যাত্রীদের ফিরে যেতে হচ্ছে। আবার সরবরাহ না থাকায় স্থায়ী কার্ড বা এমআরটি পাস বিক্রিও একেবারে বন্ধ। এ অবস্থায় একক যাত্রার কার্ডের সরবরাহ বাড়ানোর চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ। তবে স্থায়ী কার্ডের সরবরাহ কবে হতে পারে—এর উত্তর নেই।

ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্র বলছে, এখন তাদের হাতে একক যাত্রার টিকিট কার্ড আছে মাত্র ৩০ হাজারের মতো। এ মাসে আরও ৩০ হাজার কার্ড আসবে। জানুয়ারির শেষ দিকে আসতে পারে ১ লাখ ২০ হাজারের মতো কার্ড। এরপরও একক যাত্রার টিকিট কার্ডের সমস্যা মিটবে না বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা।

ডিএমটিসিএলের হিসাবে, মেট্রোরেলে এখন দিনে প্রায় সাড়ে তিন লাখ যাত্রী যাতায়াত করেন। গড়ে ৪৫ শতাংশ যাত্রী একক যাত্রার কার্ড ব্যবহার করেন। অন্যরা যাতায়াত করেন এমআরটি কার্ডে। একক যাত্রার কার্ডসংকটে যাত্রীদের স্টেশনে গিয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় অপেক্ষা করে ট্রেনে উঠতে হচ্ছে। অনেকে কার্ড না পেয়ে বিকল্প ব্যবস্থায় গন্তব্যে যাচ্ছেন।

গত সপ্তাহে অনেক স্টেশনে আনসার সদস্যরা এমআরটি কার্ড আছে কি না, তা জিজ্ঞাসা করে যাত্রীদের ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছিলেন বলে জানা গেছে। শেওড়াপাড়া মেট্রোরেল স্টেশন থেকে ওঠা সাবরিনা আলম নামের এক যাত্রী বলেন, ‘আনসার সদস্যরা গেটে দাঁড়িয়ে একক যাত্রার যাত্রীদের প্রবেশে নিরুৎসাহিত করছেন বা ‘না’ করে দিচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, “একক যাত্রার কার্ডসংকট। তাই যাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।”’

ডিএমটিসিএল সূত্র জানিয়েছে, শুরু থেকেই মেট্রোরেলের কার্ড সরবরাহ করছে জাপানের নিপ্পন সিগন্যাল কোম্পানি। প্রথম দিকে তারা একক যাত্রার কার্ড সরবরাহ করে ৩ লাখ ১৩ হাজার। এমআরটি কার্ড সরবরাহ করে ৭ লাখ ২৮ হাজারের মতো। এমআরটি কার্ডের প্রায় সব বিক্রি হয়ে গেছে। এর মধ্যে আর নতুন করে কার্ড কিনতে পারেনি ডিএমটিসিএল। এ কারণে এমআরটি কার্ড নতুন করে বিক্রি করা বন্ধ রয়েছে। অল্প কিছু কার্ড রাখা হয়েছে, যেন কেউ হারিয়ে ফেললে কিংবা নষ্ট হয়ে গেলে নতুন কার্ড নিতে পারেন।

একক যাত্রার টিকিটের সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে গতকাল মঙ্গলবার ডিএমটিসিএলের পক্ষ থেকে বলা হয়, যাত্রী বৃদ্ধি পাওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ও যাত্রীসংখ্যা বেশি—এমন স্টেশনে চাহিদামতো একক যাত্রার টিকিট পেতে বেশি সময় লাগছে। এদিকে যাত্রীরা ভ্রমণ শেষে নির্ধারিত স্থানে টিকিট রেখে না যাওয়ায় এবং কিছু কার্ডের কার্যকারিতা নষ্ট হওয়ায় টিকিটসংকট সৃষ্টি হয়েছে। সংকট সমাধানে দ্রুত একক যাত্রার কার্ড সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিকল্প পদ্ধতি কিউআর কোড চালুর মাধ্যমে ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

ডিএমটিসিএল আশা করছে, চলতি মাসের শেষ নাগাদ পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

চালু হচ্ছে কাগজের কার্ডও

একক যাত্রার কার্ডগুলোর প্রতিটি প্রায় দেড় শ টাকায় কেনা। এগুলো গ্রাহকেরা নিয়ে যাওয়ার ফলে একদিকে সরকার আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, অন্যদিকে একটি কার্ড শত থেকে হাজারবার ব্যবহার করার সুযোগ নষ্ট হয়েছে।

ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তারা বলছেন, একক যাত্রার টিকিটগুলো নানাভাবে বেহাত হয়েছে, যেমন কেউ কেউ কার্ডটি স্যুভেনির হিসেবে রেখে দেওয়ার জন্য নিয়ে গেছেন। এমনও ব্যক্তি আছেন, যিনি হয়তো মিরপুর থেকে মতিঝিল যাচ্ছেন, একসঙ্গে দুটি কার্ড নিয়েছেন; যাতে আসার পথে লাইনে না দাঁড়িয়ে সরাসরি ট্রেনে ওঠা যায়। আবার সাধারণত একই দূরত্বের ভাড়া পরিশোধ করে ফিরতি যাত্রার টিকিট কাটা যায়। একক যাত্রার কার্ড ভাড়া পরিশোধ করে নেওয়ার পর এর কার্যকারিতা ওই দিন রাত ১২টা পর্যন্ত থাকে। কোনো কারণে নির্ধারিত সময়ে কেউ ফিরতি যাত্রায় কার্ড ব্যবহার না করে হয়তো বাসায় নিয়ে গেছেন আর ফেরত দেননি। শুরুর দিকে অনেকে একসঙ্গে একাধিক দিন চলাচলের জন্য একক যাত্রার টিকিট কিনেছিলেন। কিন্তু এক দিনের টিকিট অন্যদিন কার্যকর না হওয়ায় অনেকেই কার্ড আর ফেরত দেননি।

এ ছাড়া কিছু কার্ড ব্যবহারের ফলে নষ্ট হয়ে গেছে। একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে  বলেন, অনেকে একক যাত্রার কার্ড হাতে নিয়ে এস্কেলেটরের হাতলে ধরে ওপরে উঠে নষ্ট করেছেন। কোনো কোনোটা হাতে নিয়ে মোচড়ামুচড়ি করায় বেঁকে গেছে। কিছু কার্ডে কামড় বা আচড়ের চিহ্নও আছে।

এমন পরিস্থিতিতে একক যাত্রার কার্ডের সংকট কাটাতে নতুন কার্ড আমদানির পাশাপাশি বিকল্প উদ্যোগও নিয়েছে ডিএমটিসিএল। সংস্থার সূত্র জানিয়েছে, একক যাত্রার জন্য কাগজের কার্ড চালু করা হবে। এতে কিউআর কোড থাকবে। সেটি যন্ত্রে স্ক্যান করে প্রবেশ ও বের হতে পারবেন যাত্রীরা। এর জন্য প্রতিটি স্টেশনে একটা করে আলাদা যন্ত্র ও প্রবেশপথ চালু করা হবে। এসব কার্ড কেউ নিয়ে গেলেও সমস্যা নেই। বাইরের দেশে এ ধরনের টিকিটের প্রচলন আছে। চাইলে কেউ এক দিনের কাগজের টিকিট অন্য দিন ব্যবহার করতে পারবেন না।

কাগজের টিকিট সংগ্রহের লক্ষ্যে ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে ডিএমটিসিএল। দেড় মাসের মধ্যেই একক যাত্রার কাগজের টিকিট চালু করার প্রচেষ্টা আছে। তবে একক যাত্রার প্লাস্টিক কার্ডও চলমান থাকবে। কারণ, মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনের প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে প্লাস্টিকের কার্ডের জন্য যন্ত্র বসানো আছে। এ ব্যবস্থা বেশ কার্যকর এবং বেশিসংখ্যক যাত্রী ব্যবহার করতে পারেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ধরনের আরও খবর দেখুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর