সাবেক আইনমন্ত্রীর এপিএস এর অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রাশেদুল কাউসার ভূঁইয়া জীবনের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মাদক ব্যবসা, সীমান্তে গরু পাচার, বদলি ও টেন্ডার বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি করে শতকোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক তদন্তে নেমেছে।
রাশেদুল কাউসারের পাশাপাশি তার স্ত্রী লুৎফুন নাহার, ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত উত্তম কুমার চক্রবর্তী ও তার স্ত্রী কৃষ্ণা কাবেরি চক্রবর্তীর সম্পদের খোঁজও নেওয়া হচ্ছে। উত্তম কুমার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কসবা উপজেলা মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি।
রাশেদুল কাউসার ও উত্তম চক্রবর্তীর বাড়ি বায়েক ইউনিয়নের নয়নপুর গ্রামে।
রাশেদুল কাউছার গত বছরের ১৯ অক্টোবর ঢাকার একটি হাসপাতাল থেকে গ্রেফতার হন। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। দুই বছর আগে বিএনপির পল্টন কার্যালয়ে পুলিশি অভিযানের সময় মকবুল হোসেন নামের একজন নিহত হওয়ার ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উত্তম কুমার বর্তমানে পলাতক আছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও হত্যাসহ একাধিক মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে আছেন।
রাশেদুল কাউসার কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কসবা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন।
আখাউড়া সাব রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠানো দুর্নীতি দমন কমিশন ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত উপ-সহকারী পরিচালক মো. মিজানুর রহমানের গত ২৩ এপ্রিল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের এপিএস রাশেদুল কাউছার ভূইয়ার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, ভারত সীমান্তে গরু পাচার, বদলি ও টেন্ডার বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি করে শতকোটি টাকা অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে রাসেদুল কাউছারসহ তার স্ত্রী লুৎফুন নাহার, উত্তম কুমার চক্রবর্তী ও তার স্ত্রী কৃষ্ণা কাবেরী চক্রবর্তীর স্থাবর সম্পদের তথ্য যাচাই করতে হবে।
আগামী ৫ মের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য চিঠিতে অনুরোধ করা হয়। গত বৃহস্পতিবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে ডাকযোগে পাঠানো হয় ওই চিঠি।এর আগের দিন বুধবার চিঠিতে স্বাক্ষর করেন দুদকের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান।
রাশেদুল কাউসার বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বক্তব্যে বলতেন, ‘কোনো উপকারের বিনিময়ে কেউ আমাকে এক কাপ চা খাওয়াতে পেরেছে সেটা বলতে পারব না। মন্ত্রী নিজেও কারো কাছ থেকে টাকা পয়সা নেন না। চাকরি বা বদলি বাণিজ্যের টাকা নেওয়ার খবর পেলে বিভিন্ন সময়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
যদিও ঢাকায় ও নিজ এলাকা নয়নপুরে রাশেদুল কাউসারের বাড়ি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা আছে। এ ছাড়া নয়নপুরে সরকারি জায়গায় মার্কেট করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। তবে রাশেদুল কাউসার বলতেন সাবেক আইনমন্ত্রী তার স্বচ্ছতার কারণে নিজ উদ্যোগেই বাড়ি করে দিয়েছেন।