শাহজাদপুরে সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে তিন ব্যবসায়ীকে হত্যার চেষ্টা ও জমি দখলের পায়তারা।

সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পৌর এলাকার খঞ্জনদিয়ার কবরস্থান সংলগ্ন নির্মানাধীন মার্কেটের জায়গায় তিন ব্যবসায়ীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও মারপিট করে হত্যার চেষ্টা ও জায়গা দখলের পায়তারার প্রতিবাদ ও সুবিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীরা।
এ ঘটনায় আহত ব্যবসায়ী মোঃ এনামুল হক, মোঃ নাজমুল হক ও বাদশা মিয়া শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে শাহজাদপুর পৌর সদরের মনিরামপুর মহল্লার নিজস্ব অফিসে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, গত শনিবার (৫ই এপ্রিল) সকালে শাহজাদপুর পৌর এরাকার বিসিক বাসস্ট্যান্ড কবরস্থান সংলগ্ন খঞ্জনদিয়ার মহল্লায় তাদের দলিলমূলে ক্রয়কৃত ১৪ শতক নিজস্ব সম্পত্তিতে পৌরসভার অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী মার্কেট নির্মাণের কাজ তদারকির করছিলেন।
এ সময় প্রতিপক্ষের শহীদুল ইসলাম জুলফি, শাহআলম, জাহাঙ্গীর হোসেন, আলমগীর হোসেন, রুবেল হোসেন ও কাওছার সহ ১৬/১৭ জনের একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল তাদের উপর অতর্কিতে হামলা চালিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে এলোপাথারি ভাবে কুপিয়ে ও মারপিট করে হত্যার চেষ্টা ও ওই জমি দখলের চেষ্টা করেন। এ সময় বাদশা মিয়া তাদের বাঁধা দিতে এগিয়ে এলে তারা তাকেও মারপিট করে গুরুতর আহত করেন। এরপর সদর্পে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এ সময় আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তােেদর উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে করেন। এ ঘটনায় গত ৮ এপ্রিল শাহজাদপুর থানায় একটি হত্যা চেষ্টা ও মারপিটের মামলা দায়ের করি।
এনামুল হক বলেন, এর আগে চলতি বছরের ২১ মার্চ বিকেলে তারা আমাদের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন। না দিলে আমাদের পরিবারের সবাইকে হত্যার হুমকি দেন। এরই জের ধরে তারা ওই দিন আমাদের উপরে এ হামলা চালায়। এরপর থেকে তারা আমাদের নানা ভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। ফলে আমরা প্রাণ ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছি।
তিনি আরও বলেন, এর আগে ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের আমলের প্রয়াত এমপি হাসিবুর রহমান স্বপনের কন্যা জামাতা মামুন রানার নেতৃত্বে শহীদুল ইসলাম জুলফি, শাহআলম, জাহাঙ্গীর হোসেন, আলমগীর হোসেন, রুবেল হোসেন ও কাওছার সহ একদল সন্ত্রাসী ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারী এই সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে আমাদের উপরে প্রথম দফায় হামলা চালায়। এর প্রতিকার চেয়ে শাহজাদপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। ক্ষমতার প্রভাবে সে সময় শাহজাদপুর থানা পুলিশ মামলাটি নাকচ করে দেন।
এ সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল হক জানান, ২০০৮ সালের ২৭ মার্চে আমার মাতা হামিদা বেগম ২৩৬৯নং হেবা দলিলমুলে ৬৩৭০নং দাগের ১০ শতক ও ৬৩৭১নং দাগের উত্তরাংশের ৪ শতক মোট ১৪ শতক জমি প্রাপ্ত হয়ে অদ্যাবধি পর্যন্ত খাজনা-খারিজ প্রদান করে ভোগ দখল কওে আসছি। এ অবস্থায় ওই জায়গায় মাটি ভরাট করে সেমি পাকা মার্কেট নির্মাণ কাজ চলা অবস্থায় ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারী প্রতিপক্ষের জুলফি গং প্রথম দফা হামলা চালায়। এরপর থেকে তারা মিথ্যা মামলা ও হামলা করে আমাদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করে আসছে।
এ বিষয়ে প্রতিপক্ষের শহীদুল ইসলাম জুলফি জানান, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগটি মিথ্যা। আমরা তাদের ওই জমিতে কাজ করতে নিষেধ করতে গেলে তারাই প্রথম আমাদের উপরে হামলা ও মারপিট কওে আমাদের কয়েকজনকে আহত করে। এ ব্যাপারে আমাদের পক্ষ থেকে গত ১৩ এপ্রিল শাহজাদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার ওসি মোঃ আছলাম আলী জানান, উভয়পক্ষের মামলার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে আদালতে চার্জগঠন করা হবে।