উমামা ফাতেমার ঈমান চলে গিয়েছে। বিবাহ হয়ে থাকলে বিচ্ছেদ ঘটেছে : মুফতি আমজাদ আফসারী

সম্প্রতি ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র’ উমামা ফাতেমা আলেম সমাজকে নিয়ে কটূক্তিপূর্ণ মন্তব্য করে চরম সমালোচনার মুখে পড়েছেন। তিনি আলেমদের উদ্দেশে ‘হারামজাদা’ শব্দ ব্যবহার করেন—যা নিয়ে বিভিন্ন ইসলামী মহলে গভীর উদ্বেগ ও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
এই ঘটনার পর, ঢাকাস্থ যাত্রাবাড়ী বাইতুন নূর জামে মসজিদের খতীব ও ইসলামী চিন্তাবিদ মুফতি আমজাদ হোসাইন আফসারী তাঁর নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “আলেমদেরকে হারামজাদা বলে গালি দেওয়ায় উমামা ফাতেমা’র ঈমান চলে গিয়েছে এবং বিবাহ হয়ে থাকলে বিচ্ছেদ ঘটেছে”
পরে “সাংবাদিক দেলোয়ার হোসাইন মাহদী” এই প্রসঙ্গে মুফতি আফসারীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি দলীলসহ তাঁর বক্তব্যের ব্যাখ্যা করেন।
মুফতি আফসারী বলেন, “যদি কোনো ব্যক্তি আলেমকে এমন গালি দেয়, যা তার ইলম ও দ্বীনী দায়িত্ব পালনের কারণে হয়, তাহলে তা সরাসরি কুফরীর পর্যায়ে চলে যেতে পারে। এর ফলে ঐ ব্যক্তির ঈমান নবায়ন ও তওবা করা ফরয হয়ে পড়ে।”
এই মানসিকতা অত্যন্ত ভয়াবহ। কেউ যদি তাওবা না করে এ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে, তাহলে ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণ হবে কি না—তা নিয়ে ঘোর সন্দেহ থেকে যায়। কারণ, ইলম হলো আল্লাহর এক গুণ। সেই ইলমের অধিকারী উলামাকে ইলমের কারণে ঘৃণা করা কিংবা গালি দেওয়া প্রকৃতপক্ষে পরোক্ষভাবে আল্লাহকেই গালি দেওয়া। কারণ আলেম নিজের নয়,আল্লাহ ও রাসূলের কথা-ই বলছেন। এই কারণে গালি দেওয়া নিঃসন্দেহে মারাত্মক গোনাহ।
এমনকি ব্যক্তির স্ত্রী পর্যন্ত তালাক হয়ে যাবে বলে একদল ফকীহের অভিমত রয়েছে ।
তিনি দলিল উল্লেখ করে বলেন, হাদীসে এসেছে:
“سِبَابُ المُسْلِمِ فُسُوقٌ، وَقِتَالُهُ كُفْرٌ”
“মুসলমানকে গালি দেওয়া ফাসেকী, আর তাকে হত্যা করা কুফরী।”
(বুখারী: হাদীস ৬০৪৪)
এছাড়াও তিনি ফিকহি কিতাবসমূহ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন:
“مَنْ أَبْغَضَ عَالِمًا مِنْ غَيْرِ سَبَبٍ خِيفَ عَلَيْهِ الْكُفْرُ…”
“যে ব্যক্তি বিনা কারণে কোনো আলেমকে ঘৃণা করে, তার ঈমান হুমকির মুখে পড়ে।”
(الفتاوى الهندية، البحر الرائق)
তিনি আরও বলেন, “আলেমগণ তাদের পক্ষ থেকে কিছু বলেন না, বরং আল্লাহ ও রাসূলের কথা তুলে ধরেন। তাদের গালি দেওয়া মানে আল্লাহর দ্বীনকেই অপমান করা।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্লেষকগণ বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মত প্রকাশের নামে আলেমদের অবমাননা মুসলিম সমাজে বিভ্রান্তি ছড়ানোর শামিল। এমন মন্তব্য শুধু নিন্দনীয় নয়, বরং ইসলামি দৃষ্টিতে মারাত্মক পরিণতির কারণ হতে পারে।